আবার অনুশাসনপর্বে অষ্টাবক্র মুনি উত্তরদেশে গিয়া তপস্বিনী মহাভাগা দীক্ষাধর্মপালনে রতা এক বৃদ্ধা নারীকে দেখিলেন—
তপস্বিনীং মহাভাগাং বৃদ্ধাং দীক্ষামনুষ্ঠিতাম্। অনুশাসন ১৯.২৪
পরে এই কন্যাকে অষ্টাবক্র বিবাহ করিতে বাধ্য হইলেন, কারণ যত তপস্যাই থাকুক না কেন নারীদের পক্ষে তাহা যথেষ্ট নহে। বিবাহ নারীর অবশ্য ধর্ম।
শান্তিপর্বে (৩২০. ৭) ‘স্থলভানাম ভিক্ষুকী’র কথা আছে। সেইখানে টীকাকার নীলকণ্ঠ বলেন, স্ত্রীলোকদেরও বিবাহের পূর্বে বা বৈধব্যের পরে সন্ন্যাসে অধিকার আছে। তখন তাঁহারা ভিক্ষাচর্য, মোক্ষশাস্ত্রশ্রবণ একান্তে আত্মধ্যান ত্রিদণ্ডাদি ধারণ করিবেন— স্ত্রীণামপি প্রাগ্বিবাহাদ্ বৈধব্যাদূর্ধ্বং বা সন্ন্যাসে, অধিকারোঽস্তি ইতি দর্শিতম। তেন ভিক্ষাচর্যং মোক্ষশাস্ত্রশ্রবণম্ একান্তে আত্মধ্যানঞ্চ তাভিরপি কর্তব্যম্, ত্রিদণ্ডাদিকঞ্চ ধার্যম্। এই সুলভার সঙ্গে রাজর্ষি ব্রহ্মবিত্তম জনকের গভীর যোগশাস্ত্রের কথা হয়।
রামায়ণেও (আরণ্য ৭৪. ৩১) সিদ্ধা ধর্মসংস্থিতা শবরীর কথা আছে। তাঁহার রম্য আশ্রমে রাম গিয়াছিলেন (ঐ ৭৪.৪-৫)। সেই সিদ্ধা সিদ্ধসম্মতা বৃদ্ধা শবরী (ঐ ৭৪. ১০) রামকে স্বাগত করেন। সাধ্বী শংসিতব্রতা (ঐ ৭৪.৩১) জটাযুক্তা চীরকৃষ্ণাজিনাম্বরা শবরী (ঐ ৭৪. ৩২) জ্বলন্তপাবকসংকাশা হইয়া স্বর্গে গমন করিলেন (ঐ ৭৪. ৩৩.)।
শ্রুতিতে ব্রাহ্মণগ্রন্থে দেখা যায়, পত্নীরা কটিতে মেখলা ধারণ করিতেন। তাঁহাদের পক্ষে ব্রহ্মচর্য বিহিত ছিল।[১] কাত্যায়ন-শ্রৌতসূত্রে বৈদিককর্মে ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈশ্যের (অধিকারী-নিরূপণ, ১, ৬) বলিয়াই বলা হইয়াছে—ঠিক এইরূপই নারীরও অধিকার, তাহাতে কোনো বিশেষ নাই—
স্ত্রী চাবিশেষাৎ। ঐ ১.৭
আচার্য কর্ক তাঁহার ভাষ্যে কথাটা আরও ভালো করিয়া বলিয়াছেন; পরবর্তী সূত্রে কাত্যায়ন বলেন, নারীদের এই অধিকার সর্বত্র দেখা যায়—
দর্শনাচ্চ। ঐ ১.৮
ভাষ্যকার কর্ক এখানে বলেন, যজমানকে মেখলার দ্বারা দীক্ষা দেওয়া হয়,
- ↑ স্মৃতি-চন্দ্রিকা, সংস্কারকাণ্ড, স্ত্রীসংস্কার