নারীদের উত্তরাধিকার বিষয়ে ব্যবহারনির্ণয়
বাংলাদেশে উত্তরাধিকারের বিষয়ে জীমূতবাহনের দায়ভাগই প্রধান। জীমূতবাহন ছিলেন বাঙালি এবং একাদশ শতাব্দীর লোক। দায়ভাগ তাঁহার বৃহত্তর গ্রন্থ ‘ধর্মরত্নের’ অংশবিশেষ। বাংলাদেশের নিয়মের সঙ্গে মাদ্রাজ, বোম্বাই, কাশী, মিথিলার ঠিক মিল নাই। সেসব দেশে মিতাক্ষরারই সমাদর। যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতির উপর বিজ্ঞানেশ্বর যে মতামত ব্যক্ত করিয়াছেন তাহাই মিতাক্ষরা, তাহাও একাদশ শতাব্দীর।
অনেকে মনে করেন, দায়ভাগ অপেক্ষা মিতাক্ষরাতে নারীদের দায়াধিকার বেশি করিয়া দেওয়া হইয়াছে। তাহা ঠিক নহে। বিবাহাদির জন্য অনূঢ়া কন্যা পিতৃধনের অংশ পাইতে পারেন ইহাই মিতাক্ষরার মত, তাহাদের ঠিক দায়াধিকার নাই। মিতাক্ষরার মতে, নারীদের দ্বারা ধর্মত উপার্জিত ধনেও স্বামীরই অধিকার। তাহাও স্ত্রীধন নহে। স্ত্রীধন একটি পারিভাষিক শব্দ। অধ্যগ্নি, অধ্যাবাহনিক, অন্বাধেয়, যৌতক প্রভৃতি বিশেষ বিশেষ ধনই স্ত্রীধন। শ্বশুর শ্বাশুড়ীর কাছে পাওয়া ধনও স্ত্রীধন হইতে পারে, ইহা কোথাও কোথাও দেখা যায়। স্ত্রীধন ছাড়া আরও কোনো কোনো ধনে বা খোরপোশ পাইতে নারীর আধিকার আছে, কিন্তু তাহাতে নারীর দান-বিক্রয়াদির পূর্ণাধিকার নাই। স্ত্রীধনে নারীরই অধিকার। স্বামী তাহা হইতে কিছু লইতে বাধ্য হইলেও তাহা পরিশোধ করিতে বাধ্য। তবে আপৎকালে বা স্বামী অসমর্থ হইলে স্বতন্ত্র কথা।
দায়ভাগ বা মিতাক্ষরার মতামত অনেকেই জানেন। পূর্বেই বলা হইয়াছে দেশপ্রচলিত স্মৃতি-নিবন্ধাদি আলোচনা করিয়া সেই বিষয়ে শ্রীযুত নারায়ণচন্দ্র স্মৃতিতীর্থ মহাশয়ের ‘হিন্দু স্ত্রীধনাধিকার’ গ্রন্থখানি অতিশয় যত্নের সহিত লিখিত। তাহার বিশেষ আলোচনা না করিয়া বরদরাজ-কৃত ব্যবহার-নির্ণয়ের মতামত এই বিষয়ে কি তাহাই এখানে দেখানো যাইতেছে।
ব্রাহ্মণের যদি ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈশ্য-শূদ্র এই চারি জাতীয়া পত্নী ও তাহাদের