এখানে বৃত্তিকার হরদত্তাচার্য বলেন, এইরূপ নিয়মে থাকিলে ঋষিকল্প সন্তান হয়—
এবং নিয়মযুক্তস্য ঋষিকল্পঃ পুত্রো জায়তে।
গণপতি শাস্ত্রীর মতে হরদত্ত খৃস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর লোক। তাঁহার বৃত্তির নাম ‘অনাবিলা’।
গোভিলীয়-গৃহ্যসূত্রেও দেখা যায়—
তাবুভৌ তৎপ্রভৃতি ত্রিরাত্রমক্ষারলবণাশিনৌ ব্রহ্মচারিণৌ ভূমৌ সহ শরীয়াতাম্॥ ২,৩, ১৫
অর্থাৎ, বিবাহকর্মারম্ভের পর বরকন্যা উভয়ে কিছু কাল ভোজনে ক্ষার-লবণ বর্জন করিয়া ব্রহ্মচর্য পালন করিয়া একসঙ্গে ভূমিশয্যায় শয়ন করিবে।
ভাষ্যকার চন্দ্রকান্ত তর্কালংকার মহাশয় বলেন, এখানে ব্রহ্মচর্যের অভিপ্রায় হইল সংযতেন্দ্রিয় হইয়া তিন রাত্রি কাটাইতে হইবে।
তিনরাত্রির পরই সম্ভবকাল, এইকথা কোনো কোনো আচার্য বলেন—
ঊর্দ্ধং ত্রিরাত্রাৎ সম্ভব ইত্যেকে। গোভিলীর-গৃহ্য ২. ৫. ৭
কোনো-কোনো আচার্যের মতে যখন ঋতু নিবৃত্ত হয় তখন সম্ভবকাল—
যদর্ত্তুমতী ভবত্যুপরতশোণিতা তদা সম্ভবকালঃ। ঐ ২, ৫, ৮
ইহাতেই বুঝা যায় বিবাহের পরই সম্ভোগ চলিত। তবে সুসন্তান লাভের জন্য কয়েকদিন ব্রহ্মচর্য পালন করিয়া গর্ভাধান করার বিধান আচার্যেরা দিয়াছেন।
অপ্রাপ্তযৗবনা নারীর সঙ্গে উপহাসও করিবেনা— এইরূপ কঠিন অনুশাসন ছিল—
নাজাতলোম্ন্যোপহাসমিচ্ছেৎ। ঐ ৩.৫ ৩
এইসব বাক্যে বুঝা যায় তখন কন্যা রীতিমত বড়ই হইত। ভাষ্যকার চন্দ্রকান্ত তর্কালংকার বলেন, বৈদেহরীতিতে যে সদ্য স্ত্রীপুরুষ সম্ভোগ দেখা যায়, তাহাই এই ব্রহ্মচর্যবিধির দ্বারা নিষিদ্ধ হইতেছে—
বৈদেহেষু চ সদ্য এব ব্যবায়ো দৃষ্টঃ।
সোঽয়মিদানীং প্রতিষিধ্যতে। ঐ ২.৩.১৫ ভাষ্য
এখন অর্থাৎ পরবর্তীকালে অতি অল্পবয়সে কন্যাদের বিবাহ হওয়ায় বিবাহান্তে যখন বধূর রজোদর্শন হয়, তখন দ্বিতীয় বিবাহ বলিয়া একটি আচার পালিত হয়। ইদানীং আবার শিক্ষিত সমাজে কন্যাদের বেশি বয়সে বিবাহ হইতেছে বলিয়া দ্বিতীয় বিবাহের অনুষ্ঠান বহুস্থানে প্রায় লোপ পাইয়া