সম্মানের কথা বারবার ঘোষিত হইয়াছে। নারী পতির অর্ধাঙ্গ (শতপথ-ব্রাহ্মণ ৫. ২. ১. ১০)। বৃহদারণ্যকে (১. ৪.৩) আদি-পুরুষ যে আপনাকে দ্বিভাগে বিভক্ত করিয়া পতি এবং পত্নী হইলেন, সে কথা পূর্বেই বলা হইয়াছে।
নারীর নিন্দার কথা প্রাচীন বৈদিক যুগে যে নাই তাহাও নয় (ঋগ্বেদ ৮. ৩৩. ১৭)। তবে মোটের উপর বেদের আদিযুগে আর্য-নারীদের অবস্থা ভালোই ছিল। ক্রমে কিন্তু নারীদের স্থান একটু-একটু করিয়া নামিতে আরম্ভ হইল। এ দেশে আসিয়া সুলভ শূদ্রা-পত্নী গ্রহণই কি তাহার একমাত্র হেতু?
ব্রাহ্মণভাগে দেখি, নারীরা স্বামীর পরে খাইবেন (শতপথ ১. ৯. ২. ১২)। যে নারী মুখে মুখে কথার জবাব দেয় না সেই অপ্রবাদিনী নারীই ভালো (ঐতরেয়-ব্রাহ্মণ ৩. ২৪.৭)। তবে সন্তানের জন্মদাত্রীরূপে নারীর একটা সম্মান চিরদিনই ছিল। আর্যেরা সংখ্যায় অল্প, কাজেই সন্তান ও বংশ-রক্ষা আর্যদের একটা বড় কাম্য বস্তু ছিল। এই কারণেই কন্যার জন্ম অপেক্ষা পুত্রের জন্ম লোকে বেশি চাহিত। পুত্র যে পরম ব্যোমে জ্যোতির মত এবং কন্যা যে দুঃখের হেতু, তাহাও দেখা যায়। তবু প্রাচীনতর কালে নারীদের সামাজিক যে সম্মান ও অধিকার ছিল পরবর্তীকালে তাহা ক্রমে ক্রমে সংকুচিত হইয়াছে। হয়ত বা দ্রাবিড় জাতির মধ্যে কুমারীদের চরিত্রগত শৈথিল্য দেখিয়াও আর্যেরা কিছু সাবধান হইয়াছেন।[১]
- ↑ Mysore Tribes and Castes, Vol II, p 35