নারীর বিশুদ্ধি
স্বেচ্ছায়-ব্যভিচারের কথার সঙ্গে-সঙ্গে অনিচ্ছায় দূষিত নারীদের শুদ্ধির ব্যবস্থার বিষয়ও বলা প্রয়োজন। যদি স্বয়ং বিপ্রতিপন্না নারী বলপূর্বক প্রভুক্তা বা চৌরভুক্তা হয় তবে সেই দূষিতা নারীকে ত্যাগ করিবে না—
ন ত্যাজ্যা দূষিতা নারী।
শুধু ঋতুকাল পর্যন্ত প্রতীক্ষা করিবে, তাহাতেই সে শুদ্ধ হইবে (অত্রিসংহিতা, ১৯৭-১৯৮)। রজক, চামার, নট, বুরুড়, কৈবর্ত, মেদ ও ভিল্ল এই সপ্ত অন্ত্যজ। যদি ইহাদের সঙ্গে মোহবশতঃ নারীর ব্যভিচার ঘটে তবে জ্ঞানকৃত হইলে এক বৎসর, অজ্ঞানকৃত হইলে বর্ষদ্বয় চান্দ্রায়ণ-ব্রত আচরণ করিবে (ঐ ১৯৯-২০০)। ম্লেচ্ছদের দ্বারা সকৃদ্ভুক্তা নারী প্রাজাপত্যব্রত এবং ঋতুস্রাবের দ্বারা শুদ্ধ হয় (ঐ ২০১)। বলাৎ হৃতা নারী সকৃদ্-ভুক্তা হইলে প্রাজাপত্যের দ্বারা শুদ্ধি হয় (ঐ ২০২)।
এইসব বিষয়ে দেবলের স্মৃতি আরও সহজ ব্যবস্থা দিয়াছেন। দেবল বোধ হয় সিন্ধুদেশের স্মৃতিকার। তখন পশ্চিম হইতে সিন্ধুদেশে যেসব বৈদেশিক আক্রমণ আসিত তাহাতে বহু নারী দূষিত হইত। তাহাদের সম্বন্ধে সামাজিকভাবে কিরূপ ব্যবস্থা হওয়া উচিত তাহাই দেবলস্মৃতিতে দেখা যায়। আনন্দাশ্রম হইতে প্রকাশিত স্মৃতিসমুচ্চয় গ্রন্থে দেবলস্মৃতিও দেওয়া আছে। তাহা হইতেই আলোচনা করা যাউক। দেবল বলেন, ম্লেচ্ছের দ্বারা বলপূর্বক নারী হৃতা হইলে, ব্রাহ্মণী-ক্ষত্রিয়া-বৈশ্য ও শূদ্রা নারী অন্ত্যজদের দ্বারা হৃতা হইলে, ম্লেচ্ছান্ন খাইয়া থাকিলে, দ্বাদশদিনব্যাপী পরাক প্রায়শ্চিত্তের দ্বারা ব্রাহ্মণী শুদ্ধা হয়, অন্যেরা আরও অল্পে শুদ্ধা হয়। অভক্ষ্য না খাইলে এবং মৈথুন না হইয়া থাকিলে তিন রাত্রিতে নারীর শুদ্ধি হয় (দেবলস্মৃতি ৩৬-৩৯)। ম্লেচ্ছান্ন, ম্লেচ্ছসংস্পর্শ ও এক বৎসর বা বৎসরের বেশি তাহাদের সহ সংস্থিতিতে তিন রাত্রিতে শুদ্ধি হয় (ঐ ৪৪)। পুরুষও কেহ যদি ম্লেচ্ছহৃত বা চৌরহৃত হইয়া ভয়ে বা ক্ষুধায় ভক্ষ্যাভক্ষ্য খাইয়া দেশে ফিরে, তবে ব্রাহ্মণ হইলে একটি কৃচ্ছব্রত আচরণ করিবেন, ক্ষত্রিয় তাহার অর্ধ, বৈশ্য তাহার পাদোন এবং শূদ্র তাহার পাদমাত্র আচরণ করিলে শুদ্ধ হন (ঐ ৪৪-৪৬)। ম্লেচ্ছের