মনুও (৯.৯০) এই নীতি সমর্থন করিয়া সেই স্থলে কন্যাকে পতিসংগ্রহের অধিকার দিয়াছেন। সর্বস্মৃতিই এইরূপ স্থলে কন্যার অধিকারকে স্বীকার করিয়াছেন। এমন স্থলে যদি অসবর্ণ বিবাহ হয় তাহা হইলেও অনুলোমক্রমে হইলে সন্তান পিতার সবর্ণ হইবে, এই পুরাতন বিধিও তাঁহাদের স্বীকার করিতে হইয়াছে। তাই ব্যাস-স্মৃতি (২.১০) বলিলেন, সবর্ণা বা কামতঃ অন্যজাতীয়া বিবাহিত পত্নীতে সন্তান সবর্ণা-জাত স্ববর্ণ সন্তানেরই সমান হইবে, তাহা হইতে হীন হইবে না।
যেখানে গুরুজন কন্যাকে বিবাহ দিতে যত্নশীল নহেন সেখানে বোধায়ন ধর্মসূত্র কন্যাকে শুধু পতি-বরণ করিবার অধিকারই দেন নাই, ভালো সদৃশ বর পাওয়া না গেলে অপেক্ষাকৃত অল্পগুণ বা গুণহীন বরকেও বরণ করিবার অধিকার দিয়াছেন (৪. ১. ১৫-১৬)। অথচ এই বোধায়ন ধর্মসূত্রই (২. ২. ৪৬) কৌমারে পিতাকে, যৌবনে স্বামীকে, বৃদ্ধাবস্থায় পুত্রকে নারীর অভিভাবকত্ব দিয়াছেন, তাহাকে স্বাধীনতা দেওয়া যে যায় না এই বিষয়ে মনুর সঙ্গে তিনিও সহমত।
এই বোধায়ন ধর্মসূত্রই পতি ক্লীব ও পতিত হইলে নারী যে পত্যন্তর গ্রহণ করিতে পারে, সেই কথা বলিয়াছেন। এই পুনর্ভুর গর্ভজাত সন্তানই পৌনর্ভর (২. ২. ২৭)। এইখানে বিবরণকার গোবিন্দ স্বামী বসিষ্ঠের সম্মতি উদ্ধৃত করিয়াছেন। কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে বিবাহিতা কন্যাও আবার বিবাহ করিতে অধিকারিণী তাহা বোধায়ন ধর্মসূত্র ধরিয়াছেন। বলপূর্বক অপহৃতা কন্যা যদি মন্ত্রসংস্কৃতা না হইয়া থাকে তবে সে অবিবাহিতা কন্যারই মত, তাহার বিবাহ হওয়া উচিত (৪. ১. ১৭)। কন্যাদান এবং বিবাহ-হোমের পর স্বামী মরিলেও সে কন্যা যদি অক্ষতযোনি হয়, তবে সে গতপ্রত্যাগতা; তাহাকে পৌনর্ভব বিধিতে পুনরায় বিবাহ দেওয়া উচিত (৪. ১. ১৮)। এখানে বুঝা যায় পৌনর্ভব বিবাহবিধি তখনও ছিল। এই বিষয়ে ধর্মসূত্রকার বোধায়নের বচন পূর্বেই উদ্ধৃত হইয়াছে।
এই পুনর্ভূসংস্কার অক্ষত বা ক্ষতযোনি উভয়বিধ কন্যারই হইতে পারে (যাজ্ঞবল্ক্য ১. ৬৭)।
পরাশরের পত্যন্তরগ্রহণব্যবস্থা সকলেই শুনিয়াছেন। পতি যদি নষ্ট মৄত প্রব্রজিত ক্লীব বা পতিত হয়, তবে এই পঞ্চবিধ আপদে পত্যন্তর বিধান করা যায়—