বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:প্রাচীন ভারতে নারী - ক্ষিতিমোহন সেন (১৯৫০).pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
প্রাচীন ভারতে নারী

নষ্টে মৃতে প্রব্রজিতে ক্লীবে চ পতিতে পতৌ।
পঞ্চস্বাপৎসু নারীণাং পতিরন্যো বিধীয়তে। ৪. ২৮

এই পঞ্চস্থলে নারদীয় মনুতেও (১২. ১৯) পত্যন্তরগ্রহণব্যবস্থা আছে। বসিষ্ঠও বলেন, উদকপূর্বদত্তা বা বাগদত্তা কন্যা যদি মন্ত্রোপনীতা না হইয়া থাকে তবে সে কুমারীই বলিতে হইবে এবং সে পিতারই অধিকারস্থা (বসিষ্ঠ, ১৭. ৬৪)। বলাপ্রহৃতা কন্যা যদি মন্ত্রসংস্কৃতা না হয় তবে সে অবিবাহিতা। কন্যারই মত তাহাকে অন্য পতির কাছে দান করিতে হইবে (ঐ ৬৫)। পাণিগ্রহণের পরেও মন্ত্রসংস্কৃতা বালা যদি অক্ষতযোনি হয় তবে তাহার পুনরায় বিবাহ হওয়া উচিত (ঐ ৬৬)।

 কাজেই দেখা যায়, শাস্ত্রকারেরা যেমন পুরুষকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্ত্রীত্যাগের ও পত্ন্যন্তর গ্রহণের অনুমতি দিয়াছেন, তেমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীকেও পত্যন্তরগ্রহণ ব্যবস্থা দিয়াছেন। তবে নারীদের অধিকারক্ষেত্র পুরুষদের ক্ষেত্র অপেক্ষা সংকীর্ণ।

 অর্থশাস্ত্রকার কৌটিল্য তাঁহার অর্থশাস্ত্রে (৩. ২. ৫৯) বলেন, নীচত্বপ্রাপ্ত, পরদেশপ্রস্থিত, রাজকিল্বিষী, প্রাণাভিহন্তা, পতিত বা ক্লীব পতি ত্যাজ্য। পতি বা পত্নী উভয়ের বিবাহবন্ধন ছেদনের ইচ্ছা না থাকিলে বিবাহ রদ হয় না, তবে উভয়েই যদি তাহা চাহে অথবা উভয়েরই যদি পরস্পরে বিদ্বেষ জন্মিয়া থাকে তবে (পরস্পরং দ্বেষান্মোক্ষঃ) বিবাহ বিচ্ছেদ হইতে পারে (ঐ ৩. ৩. ৫৯)।

 এইসব যে শুধু আইনের কথা তাহা নহে। ইতিহাসেও তাহার প্রমাণ আছে। সমুদ্রগুপ্তের জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন রামগুপ্ত। তাঁহার পত্নী ধ্রুবস্বামিনী রামগুপ্তের মৃত্যুর পর তাঁহার কনিষ্ঠ দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তকে বিবাহ করেন।[]


  1. দ্র° বাসুদেব অগ্রবাল রচিত ‘গুপ্ত সাম্রাজ্যের ইতিহাস’