বিবাহবন্ধন-ছেদনে শাস্ত্রবিধি
এই প্রকরণের কিছু কিছু কথা ব্যবহার-নির্ণয়ের আলোচনা সময়ে আবার পুনরুক্তি করিতে হইবে। উভয় স্থলে এই কথাগুলির প্রয়োজন থাকায় তাহা এড়াইবার উপায় নাই।
বিবাহে কন্যাদোষপ্রসঙ্গে শাস্ত্রকারেরা বলিয়াছেন, চিররোগ, কুৎসিত রোগ, অঙ্গহীনতা, ধৃষ্টতা, অন্যের সঙ্গে প্রীতি ও অন্যসঙ্গতা হইয়া থাকিলে সেই কন্যা বিবাহ করিবে না (নারদীয় মনুসংহিতা ১২. ৩৬)। বরেও চিররোগ, কুৎসিত রোগ থাকিলে, উন্মত্ত, পতিত, ক্লীব, দুর্ভাগ্য ও ত্যক্তবান্ধব হইলে তাহা বরদোষ (ঐ ১২.৩৭)। এইসব দোষ লুকাইয়া বিবাহ দিলে সে বিবাহ বৈধ নহে।
প্রাচীন শাস্ত্রে একটি পুরাতন বিধি আছে, ‘নাবীজী ক্ষেত্রমর্হতি’ অর্থাৎ যাহার বীজ নাই সে ক্ষেত্র পাইতে পারে না। নারদীয় মনুসংহিতায়ও (১২. ১৯) সেই কথাই পাই।
এইজন্যই দেবণ্ণ ভট্ট বলেন, বিবাহের পূর্বে বর পৌরুষসম্পন্ন কি না তাহা যত্নে পরীক্ষা করিয়া দেখা চাই। যাজ্ঞবল্ক্যেরও এই মত। তিনি আরও বলেন, বর যুবা, ধীমান, জনপ্রিয় হওয়া আবশ্যক (আচার, ৩. ৫৫)।
এইসব বিষয়ে অনুমান বা কল্পনার উপর নির্ভর করিলে চলিবে না। রীতিমত বৈজ্ঞানিকভাবে শরীরতত্ত্ববিদ পণ্ডিত ও বিজ্ঞজনের দ্বারা শরীর ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করাইলে তাহা বিধিসংগত হইবে না। এই কারণেই নারদ বলেন, স্বীয় অঙ্গলক্ষণের দ্বারা পৌরুষ আছে ইহা নিশ্চিতরূপে পরীক্ষাসিদ্ধ হইলে তবে বিবাহার্থী-পুরুষ কন্যা পাইতে পারে (নারদীয় মনু ১২. ৮)।
এই দৈহিক পরীক্ষায় যাহাতে সব দিকে নজর থাকে সেইজন্য শাস্ত্র নানা দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছেন। তাই ইহার পর নারদীয় মনুসংহিতায় (১২. ৯-১০) বহু আলোচনা দেখা যায়। পৌরুষের সব অঙ্গ-লক্ষণ দেওয়া আছে, ইহার অভাবে ক্লীব মনে করা উচিত। ক্লৈব্যও যে বহুবিধ হইতে পারে তাহা তাঁহাদের জানা ছিল। তাই তার পর নানাপ্রকারের ক্লৈব্যের কথা নারদীয়