रै२० প্রেমিক-গুরু বাঘের ও নিজের শক্তিসম্বন্ধে বিবেচনা করিতে হয় ; কিন্তু সেই ছেলের ষোড়শী যুবতী জননী—যিনি কুকুরের ডাকে শঙ্কিত-হৃদয়ে গৃহমধ্যে প্রবেশ করেন—তিনি সে সময়ে নিকটে থাকিলে, তৎক্ষণাৎ সস্তানের প্রাণরক্ষার্থ বাঘের মুখে গমন করিতেন, বাঘের বা নিজের শক্তিসম্বন্ধে বিচার করিবার সময়ই হইত না । সুতরাং বিবেক অপেক্ষ ভক্তিজাত বৈরাগ্য স্বাভাবিক । ভক্ত বিষয়সমূহে আসক্ত বা বিরক্ত নহে, তাই বিবেকীর কঠোরতা ও কর্কশতার পরিবর্তে প্রেমিকের সুন্দরতা ও মধুরতাই দৃষ্ট হইয়া থাকে। ভগবানের জন্ত ভক্ত সব করিতে পারেন,—তাহাকে ছাড়িয়া বৈকুণ্ঠও ভক্তের স্পহনীয় নহে, আবার তাহাকে পাইলে তিনি নরকে যাইতেও কুষ্ঠিত হন না । তাই বৈষ্ণব সাধক বলিয়াছেন,— অনাসক্তস্য বিষয়ান যথার্হমুপযুঞ্জতঃ । নিৰ্ব্বন্ধঃ কৃষ্ণসম্বন্ধে যুক্তং বৈরাগ্যমুচ্যতে ॥ —ভক্তিরসামৃতসিন্ধু । অনাসক্ত হইয়া যথাযোগ্য বিষয় ভোগ করতঃ ভগবান সম্বন্ধে যে আগ্রহ জন্মে, তাহাকেই বৈরাগ্য বলিয়া কীৰ্ত্তন করিয়াছেন । বিৰেকী আত্মানুসন্ধানে নিযুক্ত হইয়া সমস্ত বিষয় পরিত্যাগ করতঃ অন্তর্মুখীন হইয়া পড়েন, আর ভগবানকে বুকে করিয়া ভক্ত সবই ভোগ করিয়া থাকেন। ভগবানকে বুকে করিয়া ভক্ত মহাশ্মশানেও সুধাংশুসৌন্দৰ্য্য উপভোগ করেন, আবার তাহাকে হারাইলে নন্দনকাননও ভক্তের নিকট মরুভূমি হইয়া যায়। বিবেকী আত্ম-স্বরূপ চাহেন ; ভক্ত ভগবানকে বুকে করিতে ব্যাকুল। কাজেই তাহাদিগের লব্ধ বৈরাগ্যেও কিছু প্রভেদ আছে । তাই ত্যাগী সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে সাধনভেজে-ভাব-ভেদে কেহ কঠোর কেহ সরস, কেহ শুষ্ক, কেহ তাঙ্কা, কেহ বিলাসী, কেহ উদাসী, কেহ
পাতা:প্রেমিক গুরু.djvu/২৩৮
অবয়ব