পাতা:বংশ-পরিচয় (অষ্টম খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য স্বম্ভর জগদীশচন্দ্ৰ বসু বিংশ শতাব্দীতে বঙ্গমাতার ক্ৰোড়ে আবিভূতি হইয়া যে সমস্ত আলোকসামান্য মহাপুরুষ বাঙ্গালীর মুখ জগতের সমক্ষে গৌরবোজ্জল করিয়াছেন, যাহাঁদের জন্য ৰাঙ্গালী জাতি আজ বিশ্বসভায় গৌরবের উচ্চাসন লাভ করিয়াছে, বিজ্ঞানাচাৰ্য্য স্যর জগদীশচন্দ্ৰ বসু তাহার মধ্যে অন্যতম। ঢাকা জেলার প্রসিদ্ধ বিক্রমপুর গ্রামে জগদীশচন্দ্ৰ জন্মগ্রহণ করেন। র্তাহার পিতা ৬/ভগবানচন্দ্ৰ বসু, ফরিদপুরের মহকুমা-ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন । পুত্রের শিক্ষাবিধানের দিকে তাহার মনোযোগের অভাব ছিল না। জগদীশচন্দ্ৰ শৈশব হইতেই নৃতন নূতন বিষয় আবিষ্কারে মনোযোগী ছিলেন। নিউটন যেমন শৈশবে ও বাল্য বয়সে পিতাকে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন-বাণে জর্জরিত করিয়া তুলিতেন, জগদীশচন্দ্ৰও তেমনি পিতাকে নানারূপ প্রশ্ন করিয়া ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিতেন। পিতা ভগবানচন্দ্ৰ ইহাতে পুত্রের প্রতি বিন্দুমাত্ৰ কুপিত না হইয়া বরং সহজ সরল উত্তর-দানে শিশুর অনুসন্ধিৎসা-বৃত্তি চরিতার্থ করিতেন । দিনের বেলায় সুৰ্য্য উঠে কেন, রাত্ৰি বেলায় সুৰ্য্য কোথায় যায়, পৃথিবী সুৰ্য্যের চারিধারে ঘুরে, না। সূৰ্য্য পৃথিবীর চারিধারে ঘুরে, পৃথিবীটা কত বড়, উদ্ভিদের প্রাণ আছে কি না, পশুপক্ষীর ভাষা আছে কি না, জগদীশচন্দ্ৰ ইত্যাকার নানা প্রশ্ন তাহার পিতাকে করিতেন । পিতা সেগুলির যথাযথ উত্তর দিলেও জগদীশচন্দ্রের কৌতুহল কিন্তু তাহাতে নিবৃত্তি হইত না। তিনি অনেক সময় বৈঠকখানা-পূর্ণ লোকের পিতাকে বলিতেন, “বাবা! আমি বড় হইলে দেখিও ঘরে বসিয়া মানুষ যাহাতে ঐ হাজার ক্রোশ দূরের লোকের সঙ্গে কথা বলিতে পারে, ’ এমন কাল বাহির করিব।”