পাতা:বংশ-পরিচয় (ষষ্ঠ খণ্ড) - জ্ঞানেন্দ্রনাথ কুমার.pdf/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বৰ্গীয় মোহিনীমোহন চক্ৰবৰ্ত্তী NO3 মোহন স্বীয় পুত্ৰকেও বিপন্ন করিতে পশ্চাৎপদ হইতেন না। মোহিনীমোহন তদীয় জ্যেষ্ঠপুত্র ও তাহার সমবয়স্ক একটী বাঙ্গালী ছাত্ৰ সহ ভাবুয়া মহকুমায় থাকা কালে তঁহার জনৈক দুষ্টমতি পদাতিক ঐ ছাত্রটাকে সঙ্গে লইয়া ডেপুটী বাবুর পুত্ৰ বলিয়া পরিচয় দিয়া কোনও এক ব্যক্তির পুষ্করিণী হইতে মৎস্য ধরিয়া লয়। পরে মোহিনীমোহন ঐ বিষয় শুনিবা মাত্র অত্যন্ত দুঃখিত ও লজ্জিত হইয়া পুষ্করিণীর স্বত্বাধিকারীকে ডাকাইলেন এবং তাহার সম্মুখে ঐ পদাতিক, ছাত্র ও পুত্রকে উপস্থিত করাইয়া বলিলেন, “ইহার তোমার পুষ্করিণীতে মৎস্য ধরিয়া বড়ই গহিত কাৰ্য্য করিয়াছে । ইহাদের বিরুদ্ধে থানায় অথবা আদালতে অভিযোগ করিয়া ইহাদের অপরাধের সমুচিত শাস্তি বিধান কর ।” বলা বাহুল্য, মোহিনীমোহনের এই ন্যায়নিষ্ঠা ও দৃঢ়চিত্তত দেখিয়া সকলেই অবাক হইয়া গেল এবং এই ব্যাপারটা আর কিছুতেই অগ্রসর হইতে দিল না । সততা ও অমায়িকতা-গুণে মোহিনীমোহন সৰ্ব্বত্র সমাদৃত হহঁতেন। সরকারী কাৰ্য্যের নিয়মানুসারে তিনি যখনই বদলির আদেশ পাইতেন, তখনই সেই স্থানের অধিবাসিবুন্দ মোহিনীমোহনের অভাব-চিন্তায় মিীয়মান হইয়া পড়িতেন । তিনি যখনই যেখানে বিদায়-অভিনন্দন পাইয়াছেন, বক্ততা ও গীতাদিতে র্তাহার চরিত্রের প্রধান গুণ সততা, অমায়িকতা, ও ন্যায়নিষ্ঠ বিশেষভাবে আলোচিত হইয়াছে। তঁহার বিদায়-অভিনন্দন-উপলক্ষে তমলুকের বিদ্যালয়-প্ৰাঙ্গণে বিবিধ পত্ৰপুষ্পশোভিত সুসজ্জিত গৃহে প্রাচীরগাত্রে এবং তৎসন্নিহিত পাদপ-শাখাবিলম্বিত আলোকমালায় সমুদ্ভাসিত প্ৰমোদোদ্যানে, বহুবৰ্ণ-রঞ্জিত আলোকক্ষরে লিখিত সেক্সপিয়র ইত্যাদি প্ৰসিদ্ধ কবিগণের "I am armed so strong in honesty", . ..."Flattery is the food of fools” ইত্যাদি অমরগাথা-সমূহের মোহিনী স্মৃতি অন্যাপি ঐ অঞ্চলে শ্ৰদ্ধার সহিত কীৰ্ত্তিত হইয়া থাকে ।