পাতা:বক্সা ক্যাম্প.djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 উপেন দাস প্রশ্ন করিল, “ঘুঘু দাশটি কিনি?”

 চোখের ইঙ্গিতে যতীন দাসকে দেখাইয়া দিয়া ওস্তাদ বলিল, “উনি। ব্যাটা হাড়ে হাড়ে শয়তান, সাবধানে থাকবেন। বলে বসল, এখন তো খুব বাবাগো মাগো করছ, বাইরে থাকতে এ-ভক্তি ছিল কোথায়? বল্লাম, থাম ব্যাটা, তখন সময় পাইনি, এখন সেটা পুষিয়ে নিচ্ছি। ঘুঘুদাশের কথায় কিন্তু একটা উপকার হল।”

 আমাদের বিভুতি ম্যাস্টর জিভের জড়তার সঙ্গে যুদ্ধ শেষে বাক্যটি মুক্ত করিয়া বাহিরে আনিল, “কি উপকার হোল, প্রকাশ করেই বল বাবা।”

 ম্যাস্টরও ওস্তাদের পাড়ারই লোক।

 তাকে ধমকের সুরে ওস্তাদ থামাইয়া দিল, “থাম, কতবার বলেছি একখণ্ড সীসা মুখে রাখবি,” বলিয়া শ্রোতৃবর্গের অভিমুখে আবার দৃষ্টিটা মেলিয়া ধরিল।

 বলিয়া চলিল, “ঠিক করলাম, শত হোক জন্মদাতা পিতা তো, এতকাল খোরাক-পোষাক জুগিয়েছে, নেকাপড়ার জ্যও চেষ্টা করেছে, ফল? বলিয়া দক্ষিণের হস্তের অঙ্গুষ্ঠটি আমাদের চোখের সম্মুখে উত্তোলন করিয়া ধরিল।

 —“ভাবলাম, ঋণশোধ যথাসাধ্য করতে হবে। দিলাম ঠুকে এক দরখাস্ত। পারিবারিক ভাতা চাই, বাড়ীর আমিই একমাত্র পুত্তুর, আমার আয়েই সংসারের নির্ভর ইত্যাদি সব ভালো ভালো পয়েণ্ট দরখাস্তে ঠেসে দিলাম। ঐ ঘুঘুদাশকে দিয়েই লিখিয়েছিলাম, ব্যাটা অপয়া!”

 —“ওর দিকে তাকিও না, বলে যাও। তারপর?”

 —“তারপর? তারপর এস-বি’র এক নিস্‌পেট্টর বাড়িতে গিয়ে হাজির, দরখাস্তটার তদন্ত করতে গেছেন। সেদিন ভদ্রলোকের একটা ফাঁড়া গেছে।”

 আমরা উৎকণ্ঠায় উদগ্রীব হইয়া উঠিলাম, অনেকেই একসঙ্গে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হয়েছিল?”

 ওস্তাদ ধীরেসুস্থে বলিয়া চলিল—

 —“ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন, অমরবাবু আপনার ছেলে?

১১৫