কোট্টাম সাহেব যে অত্যন্ত গোঁয়ার মানুষ, ঢাকার লোকেরা প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা হইতে এই রিপোর্ট সভায় পূর্বেই পেশ করিয়াছিলেন। সর্বোপরি হিজলী বন্দিনিবাসে গুলীবর্ষণের কথাটা তখনও আমাদের স্মৃতি হইতে লোপ পায় নাই।
এক প্রবীন ব্যক্তি পরামর্শ দিলেন, “সাহেবের সঙ্গে একটা আপোষের চেষ্টা করা যাক।”
একজন প্রশ্ন করিলেন “সাহেব শুনবে কেন?”
যতদূর মনে পড়ে এই সময়ে খাঁ সাহেব প্রশ্ন তুলিয়াছিলেন, “কি সর্তে আপনারা আপোষ করতে পারেন?”
আপোষের প্রস্তাব যিনি তুলিয়াছিলেন, তিনি বলিলেন, “রোলকলের সময়টা আমরা যে-যার সীটে থাকব।”
খাঁ সাহেব বলিলেন, “তা নয় রাজী হওয়া গেল, কিন্তু কাল ভোর থেকেই যে মাঠে যাবার অর্ডার দিয়ে বসেছে। আপোষের কথা শুনবে বলে তো মনে হয় না।”
আমরা ভাবিত হইয়া পড়িলাম, আচ্ছা ফ্যাসাদে পড়া গিয়াছে! সভার আলোচনা হইতে এইটুকু বুঝা গেল যে, ইহা যে আমাদের কৃতকর্মের ফল, সে বিষয়ে প্রায় সকলেই একমত।
সভাপতি মাষ্টার মশায় এক সময়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কি বল?”
এতক্ষণ চুপ করিয়া বুদ্ধিমানের মত সভার শোভাবর্ধন করিতেছিলাম, কিন্তু মাষ্টার মহাশয় ধরাইয়া দিলেন। কিঞ্চিৎ ভাষণের বিপদে তিনি আমাকে ফেলিলেন।
বলিলাম, “কোট্টামকে সোজা জানিয়ে দিন যে, তাঁর এ-প্রস্তাব মানতে আমরা অক্ষম।”
নাম বলিব না, এক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি একেবারে মারমুখী হইয়া উঠিলেন, বলিলেন, “এর পরিণাম কি হবে, ভেবে দেখেছেন?”
১৮৬