রাজসিংহ চলিল—বমাল সমেত ধরা পড়ে, এমন ইচ্ছা রাখে না মাণিকলাল নিৰ্ম্মলকে লইয়া পিসীর বাড়ী উপস্থিত হইল । পিসীমাকে ডাকিয়া বলিল, “পিসী-ম, একটা বউ এনেছি।” বধু দেখিয়া পিসীমা কিছু বিষঃ হইলেন—মনে করিলেন, লাভের যে আশা করিয়াছিলাম, বধু বুঝি তাহার ব্যাঘাত করিবে । কি করে, দুইটা আসরফি নগদ লইয়াছে—এক দিন অন্ন না দিয়া বহুকে তাড়াইয়া দিতে পারিবে না। সুতরাং বলিল, “বেশ दले P মাণিকলাল বলিল, “পিসী, বহুর সঙ্গে আমার আজিও বিবাহ হয় নাই ।” পিসীমা বুঝিলেন, তবে এটা উপপত্নী । ষো পাইয়া বলিলেন, “তবে আমার বাড়ীতে —” মাণিকলাল । তার ভাবনা কি ? বিয়ে দাও না ? আজই বিবাহ হউক । নিৰ্ম্মল লজ্জায় অধোবদন হইল । পিসীমা আবার যে পাইলেন ; বলিলেন, “সে 8ふ ত সুখের কথা—তোমার বিবাহ দিব না ত কার বিবাহ দিব ? তা বিবাহের ত কিছু খরচ চাই ?” মাণিকলাল বলিল, “তার ভাবনা কি ?” পাঠকের জানা থাকিতে পারে, যুদ্ধ হইলেই লুঠ হয়। মাণিকলাল যুদ্ধক্ষেত্র হইতে আসিবার সময়ে নিহত মোগল সওয়ারদিগের বস্ত্রমধ্যে অনুসন্ধান করিয়া কিছু সংগ্ৰহ করিয়া আসিয়াছিলেন—ঝনাৎ করিয়া পিসীর কাছে গোটাকত আসরফি ফেলিয়া দিলেন, পিসীম আনন্দে পরিপ্লুত হইয়া তাহ কুড়াইয়া লইয়৷ পেটরায় তুলিয়া রাখিয়া বিবাহের উদ্যোগ করিতে বাহির হইলেন । বিবাহের উদ্যোগের মধ্যে ফুল, চন্দন ও পুরোহিত সংগ্রহ, সুতরাং আসরফিগুলি পিসীমাকে পেটরা হইতে আর বাহির করিতে হইল না । মাণিকলালের লাভের মধ্যে তিনি যথাশাস্ত্ৰ নিৰ্ম্মলকুমারীর স্বামী হইলেন । বলা বাহুল্য যে, মাণিকলাল রাণার সৈনিকদিগের মধ্যে বিশেষ উচ্চপদ লাভ করিলেন, এবং নিজগুণে সৰ্ব্বত্র সম্মান প্রাপ্ত হইলেন ।