পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ8 বঙ্কিম-প্রসঙ্গ দিত। চাদপুরের কিছু দূরে সমুদ্রতীরে নিবিড় বনজঙ্গল ছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের ধারণা হইয়াছিল যে, ঐ সন্নাসী সমুদ্রতীরে সেই বনে বাস করিত। কিছুদিন পরে বঙ্কিমচন্দ্র ঐ স্থান হইতে খুলন। মহকুমায় (খুলনা তখন জেলা ছিল না ) বদলী হন। ঐ সমরে তিন চারি দিন বাটতে অবস্থিতিকালে দীনবন্ধু আসিয়াছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র তাহাকে একটা প্রশ্ন করিলেন ; যথা,— “যদি শিশুকাল হইতে ষোল বৎসর পর্য্যন্ত কোনও স্ত্রীলোক সমুদ্রতীরে বনমধ্যে কাপালিক কর্তৃক প্রতিপালিত হয়, কখনও কাপালিক ভিন্ন অন্ত কাহারও মুখ না দেখিতে পায়, এবং সমাজের কিছুই জানিতে না পায়, কেবল বনে বনে সমুদ্রতীরে বেড়ায়, পরে সেই স্ত্রীলোকটকে যদি কেহ বিবাহ করিয়া সমাজে লইয়া আইসে, তবে সমাজসংসর্গে তাহার কতদূরপরিবর্তন হইতে পারে, এবং তাহার উপরে কাপালিকের প্রভাব কি একেবারে অন্তর্হিত হইবে?” যখন বঙ্কিমচন্দ্র দীনবন্ধুকে এই প্রশ্ন করেন, তখন সেই স্থানে কেবল সঞ্জীবচন্দ্র ও আমি উপস্থিত ছিলাম । সঞ্জীবচন্দ্র বড় ব্যঙ্গপ্রিয় ছিলেন। তিনি বলিলেন, “যদি দরিদ্র ঘরে তাহার বিবাহ হয়, তাহা হইলে মেয়েট চোর হইবে, বনজঙ্গলে ভাল দ্রব্যাদি থাইতে পাইত না, সমাজে আসিয়া ভাল খাদ্যদ্রব্যাদি দেখিয়া বড় লোভী হইবে, দরিদ্রঘরে ভাল আহার জুটবে না, পরের ঘরের চুরী করিয়া খাইবে, অলঙ্কারাদি চুরী করিয়া পরিবে।” পরে ব্যঙ্গ ত্যাগ করিয়া বলিলেন, “কিছুকাল সন্ন্যাসীর প্রভাব থাকিবে। পরে সন্তানাদি হইলে স্বামিপুত্রের প্রতি স্নেহ জন্মাইলে সমাজের