পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিমচন্দ্রের প্রথম গদ্য রচনা ১২৩ গুনিয়াছি, তিনি সকালে বিকালে সেই ক্ষুদ্র প্রান্তরের শল্প-শয্যায় উদ্ধমুখে শান থাকিতে ভালবাসিতেন। আর সেই যে প্রাণ ভরিয়া স্বভাবের শোভা-সন্দর্শন, তাহাতেই তাহার কবিত্ব-শক্তির স্ফুরণ হইয়াছিল। সেই প্রভাতের বালারুণচ্ছট, সেই সন্ধ্যা-গগনের রক্তিম আভা, সেই ঢলঢল দুৰ্ব্বাদলময় প্রান্তরের সবুজ-লীলা, সেই চারিদিকের গাছপালার বিচিত্র হরিত সমন্বয়, মাথার উপর মেঘের সেই বর্ষব্যাপিনী লীলা-খেলা—নয়ন ভরিয়া, প্রাণ ভরিয়া দেখিবার সামগ্রী। কিন্তু আমরা তাহ দেখি কি ? দেখি না। বঙ্কিমবাবু বয়সকালে কিঞ্চিৎ colour-blind বা রঙ্গ-কাণা হইলেও অতি বাল্যাবস্থা হইতেই এই সকল দেখিতেন, প্রাণ ভরিয়া ভোগ করিতেন, আর সঙ্গে সঙ্গে আত্মহারা হইতেন। শীতল-সমীরণের নিয়ত সৰ্বসৰ্ব শক, প্রভঞ্জনের স্বন-স্ব স্বনন, সময়ে সময়ে পার্থস্থ কুলার কুল-কুল রব, অজস্র বিহঙ্গকুলের বিচিত্র কাকলি, কচিং উড্ডীয়মান পক্ষীর পক্ষপুটধ্বনি, এবং বায়ুস্তর ভেদ করিয়া শম্ভ শম্ গতি-শব্দ-বালক বঙ্কিম কাণ ভরিয়া, প্রাণ ভরিয়া শুনিতেন, উপভোগ করিতেন ; করিয়া স্বভাবের সৌন্দর্য্যের সঙ্গে তিনি যেরূপ সখ্য সংস্থাপন করিয়াছিলেন, আর কয় জন বাঙ্গালী সেরূপ করিয়াছেন, আমি জানি না। কাটালপাড়ার সেই প্রান্তরটুকু, বাঙ্গালীর পুণ্যক্ষেত্ৰ—গাছপালায় নষ্ট হইতে বসিয়াছে ; তোমরা সকলে এই বেলা একবার দেখিয়া আসিও । বুঝা গেল, বঙ্কিমচন্দ্র বাল্যাবস্থা হইতেই স্বভাব-সৌন্দর্ঘ্যের সেবক । এই সেবার গুণে তিনি সকলরাপ সৌন্দর্ঘ্যের উপভোগ