পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ミ8 বঙ্কিম-প্রসঙ্গ করিতে শিথিয়াছিলেন। তিনি সেই জন্ত এক জন প্রকৃত সাহিত্যসেবক। এখন বাঙ্গালার সাহিত্য বিশ্ব ব্যাপারে প্রসার পাইয়া নিতান্ত অগভীর হইয়া পড়িতেছে। যাহারা এইরূপ প্রসারবৃদ্ধিতে প্রশ্রয় দিতেছেন, র্তাহাদের সমীচীনতায় আমরা সন্দেহ করি। বঙ্কিমের বাল্যাবস্থায় আবার ইহার বিপরীত ছিল ; বঙ্গ-সাহিত্যের প্রসার তখন প্রায় কবিতা পর্য্যন্ত ছিল। যাত্র, গান, কীৰ্ত্তনের কথা এখন ধরিলাম না। তখন বঙ্গসাহিত্যের সম্রাট ছিলেন কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত। তখন কবিতার চর্চার নামই ছিল সাহিত্য-চৰ্চা । পূৰ্ব্ব হইতেই কাব্য-গ্রন্থ-পাঠ আমাদের সাহিত্য-চৰ্চ্চার সীমা ছিল। “কেবল পাঠশাল বলিয়া নয়, সকলেই রামায়ণ, মহাভারত পাঠ করিত ; বৃদ্ধ গঙ্গাতীরে ঘাটে বসিয়া, মুদী মুদীখানায় পাটে বসিয়া, পুরোহিত ঠাকুর ৮শিবের মন্দিরের ধারতে বসিয়া, মোসাহেব মুখুয্যে মহাশয় বড়মানুষের বৈঠকখানায় বসিয়া অবাধে শ্রোতৃমণ্ডলীমধ্যে কৃত্তিবাস কাশীদাস পাঠ করিতেন। গোস্বামী ঠাকুর বিষ্ণু মন্দিরের দাওয়ায়, বাবাজীঠাকুর আখড়ার আঙ্গিনার বৃক্ষতলে, বৈষ্ণব গৃহস্বামী পূজার দালানের দরদালানে, সেইরূপ শ্রোতৃমণ্ডলীমধ্যে চৈতন্যচরিতামৃত পাঠ করিতেন। তদ্ভিন্ন কবিকঙ্কণের ‘চণ্ডী’, রামেশ্বরের ‘শিবায়ন, ঘনরামের ‘ধৰ্ম্মমঙ্গল, দুর্গাপ্রসাদের ‘গঙ্গাভক্তিতরগিণী প্রভৃতি গীত ও পঠিত হইত। বহুকাল এইরূপ চলিতেছিল, ঈশ্বর গুপ্ত আসিয়া কাব্য সাহিত্যে একরূপ নূতন ভাব আনিলেন। তাহার কর্তৃক বঙ্গ-সাহিত্যে ঢল নামিল ; শ্রোত চলিতে লাগিল, একটা জীবন্ত ভাব আসিল। কেবল পৌরাণিক প্রসঙ্গের নাড়াচাড়।