পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/২৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিমচন্দ্র ২৩১ . হইতে পারে, কিন্তু তদ্বার উপাসনার ভাব অভিনবভাবে লোকের অন্তরে উদ্দীপিত হইতে পারে না। তজ্জন্ত বঙ্কিমবাবুর কৃষ্ণোপাসনাতে প্রকৃত সিদ্ধপুরুষ হইয়। চৈতন্যপ্রভুর ন্যায় স্বয়ং বৈরাগ্যব্রত গ্ৰহণানন্তর সাঙ্গোপাঙ্গে দ্বারে স্বারে কৃষ্ণমন্ত্র দীক্ষা দিয়া লোক মাতাইবার প্রয়োজন ছিল। এরূপ বৈরাগ্য-ব্রতের অনুত্ৰতী হইয়া চেষ্টাপর হইতে পারিলে, এবং ভবিষ্যতে সেইরূপ বৈরাগ্য-ব্রতাবলম্বী উৎসাহী প্রচারক-দল স্বকীয় আদর্শে সংগঠিত করিয়া দেশবিদেশে ধৰ্ম্মপ্রচারকার্ঘ্যে নিয়োজিত করিতে পারিলে তাহার অভিলাষ কিয়ৎপরিমাণে সিদ্ধ হইবার আশা থাকিত। খ্ৰীষ্টজগতে যেমন খ্ৰীক্টোপাসনা প্রচলিত হইয়াছে, এক্ষণে সরূপ সৰ্ব্বব্যাপী কৃষ্ণোপাসনা প্রচলিত হইবার আশা ' স্বভাবতঃই খুব অল্প। মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের এ পক্ষের চেষ্টাও এ পৰ্য্যন্ত এক প্রকার ব্যর্থ হইয়া রহিয়াছে। অবশুই ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে কোনও কথা ঠিক করিয়া বলিবার কেহই আমরা অধিকারী নহি। ভগবানের সঙ্গে মানুষের উপাস্য-উপাসক সম্বন্ধ। শুদ্ধ নীতির আদর্শ সাধারণ মানুষের মনঃপূত হইবার নহে। এ সংসারে ত-বড় তা-বড় প্রচুর নীতির আদর্শ আছে। তাহারা কখনও কাহারও লক্ষ্য-স্থলে আইসে না। সাধারণ মানুষে এক জন উপাসকের আদর্শ চান—একজন ভক্তের প্রতিচ্ছবি দেখিতে চান। শ্ৰীকৃষ্ণ-চরিত্রে ইহার কিছুই খুজিয়া পাওয়া যায় না। র্তাহাতে না ছিল বৈরাগ্য ও ভগবৎনির্ভর, নাছিল ভগবৎভক্তি, না ছিল ভগবৎপ্রেম, নাছিল ভগবৎ-বিশ্বাসের গভীরতা ও প্রশস্ততা।