পাতা:বঙ্কিম-প্রসঙ্গ.djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিমচন্দ্র ও কথকঠাকুর ২৯ ছিল। তিনি বর্ষাকালে প্রায় সৰ্ব্বদাই স্কুলের ছুটী হইলে, বাটতে প্রত্যাগমন না করিয়া, বরাবর ঐ নৌকাতে ঐ খালে প্রবেশ করিতেন ; এই লেখকও ঐ নৌকাতে থাকিতেন ; কেন না, তিনিও বঙ্কিমচন্দ্রের সহিত ঐ স্কুলে যাইতেন। র্তাহার নৌকা খালে প্রবেশ করিলে, উহার উপরের পাতার ছাদ হইতে অসংখ্য পাখী উড়িত, চীৎকার করিত, আবার বসিত। খালের উভয় পাশ্বে নিবিড় বন ছিল, তাহাতে নানাপ্রকার বনফুল ফুটিত। বর্ষার জলে গাছগুলি অৰ্দ্ধনিমজ্জিত, নৌকা প্রবেশ করিবামাত্র উহার জুলতাড়নে তাহারা নানাবর্ণের ফুলের সহিত হেলিত, দুলিত, নাচিত। বালক কবি তাহাই দেখিতেন, হাসিতেন, ক্ষণকালের জন্য তাহারা তাহার সঙ্গী হইত। তখন র্তাহার বয়স তের কি চোঁদ হইবে। একদিন গভীর রাত্রে শয্যা ত্যাগ করিয়া বঙ্কিমচন্দ্র সদরবাটতে আসিয়া তাহার নৌকার মাঝিকে ও দ্বারবানকে উঠাইলেন,(পূৰ্ব্বে ইহা বন্দোবস্ত ছিল) পরে তাহাদিগকে সঙ্গে লইয়া রাত্রি দ্বিপ্রহরে নিঃশব্দে বাট হইতে নিফ্রান্ত হইলেন। বর্ষাকাল, পূর্ণিমারাত্রি, চন্দ্রমা মধ্যগগনে বিরাজ করিতেছেন, নীলাকাশে অসংখ্য তারা জলিতেছে, পৃথিবী আলোকময়ী, নিস্তন্ধ ; একটা কুকুর তাহাদিগকে দেখিয়া ঘেউ ঘেউ করিয়া ডাকিতে লাগিল। বালক কবির সেই অন্ধকারময় খালে বিচরণ করিবার উপযোগী সময় বটে। বঙ্কিমচন্দ্র নিঃসঙ্কোচে নৌকায় উঠিলেন, কিছু দূর ভাগীরথী বাছিয়া গিয়া খালে প্রবেশ করিলেন। এই সময়ে জলোচ্ছাসে খাল পরিপূর্ণ ছিল। প্রায় দুই তিন ঘটা পরে বঙ্কিমচন্দ্র বাড়ী ফিরিলেন। র্তাহার এই খালে বিচরণের কথা