পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৩৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্ৰবন্ধ-বাঙ্গালার ইতিহাস ক্ষমতাবান বাঙ্গালী অতি অলপ। কি বাঙ্গালী, কি ইংরেজ, সকলের অপেক্ষা যিনি এই দািরহ কায্যের যোগ্য, তিনি ইহাতে প্রবত্ত হইলেন না। বাবা রাজেন্দ্রলাল মিত্ৰ মনে করিলে সবদেশের পরাবত্তের উদ্ধার করিতে পারিতেন। কিন্তু এক্ষণে তিনি যে এ পরিশ্রম সত্বীকার করবেন, আমরা এত ভরসা করিতে পারি না। বাব রাজকৃষ্ণ মখোপাধ্যায়ের নিকট আমরা অন্ততঃ এমন একখানি ইতিহাসের প্রত্যাশা করিতে পারি যে, তন্দ্বারায় আমাদের মনোদঃখ অনেক নিবত্তি পাইবে। রাজকৃষ্ণবােবও একখানি বাঙ্গালার ইতিহাস লিখিয়াছেন বটে, কিন্তু তাঁহাতে আমাদের দঃখ মিটিল না। রাজকৃষ্ণবাব মনে করিলে বাঙ্গালার সম্পািণ ইতিহাস লিখিতে পারিতেন; তাহা না লিখিয়া তিনি বালক শিক্ষাৰ্থ একখানি ক্ষদ্র প্যােন্তক লিখিয়াছেন। যে দাতা মনে করিলে অদ্ধেক রাজ্য এক রাজকন্যা দান করিতে পারে, সে মন্টিভিক্ষা দিয়া ভিক্ষককে বিদায় করিয়াছে। মস্টিভিক্ষা হউক, কিন্তু সবণের মন্টি। গ্ৰন্থখানি মোটে ৯০ পাঠা, কিন্তু ঈদশ সব্বাঙ্গসম্পপণ্য বাঙ্গালার ইতিহাস বোধ হয়। আর নাই। আলেপর মধ্যে ইহাতে যত বৰ্ত্তান্ত পাওয়া যায়, তত বাঙ্গালা ভাষায় দলভ। সেই সকল কথার মধ্যে অনেকগলি নতন; এবং অবশ্যজ্ঞাতব্য। ইহা কেবল রাজগণের নাম ও যাদ্ধের তালিকা মাত্র নহে; ইহা প্রকৃত সামাজিক ইতিহাস। বালক শিক্ষাৰ্থ যে সকল পন্তক বাঙ্গালা ভাষায় নিত্য নিত্য প্রণীত হইতেছে, তন্মধ্যে ইহার ন্যায় উত্তম গ্রন্থ অলপ। ইংরেজিতেও যে সকল ক্ষদ্র ইতিহাস বালক শিক্ষাৰ্থ প্রণীত হয়, তন্মধ্যে এরাপ ইতিহাস দেখা যায় না। কেবল বালক নহে, অনেক বদ্ধ ইহাতে শিক্ষাপ্রাপ্ত হইতে পারেন। যাঁহারা বালপাঠ্য পাস্তক বলিয়া ঘণা করিয়া ইহা পড়িবেন না, তাঁহাদিগের জন্য এই ক্ষদ্র গ্ৰন্থখানিকে উপলক্ষ করিয়া আমরা বাঙ্গালার ইতিহাস সম্পবন্ধে গাটিকত কথা বলিব। সকলই অধ্যয়নীয় তত্ত্ব ইহাতে পাওয়া যায় বলিয়া আমরা এ ক্ষদ্র গ্রন্থের বিস্তারিত সমালোচনায় প্রবত্ত, নচেৎ বালপাঠ্য পাস্তক আমরা সমালোচনা করি না। প্রথম। কামেবল সাহেব যখন বাঙ্গালীর প্রতি সদয় হইয়াছিলেন, তখন বলিয়াছিলেন, বাঙ্গালীরা আসিয়াখন্ডেব মধ্যে এথিনীয় জাতিসদাশ। বাস্তবিক একদিন বাঙ্গালীরা আর কিছতে DB D DBS gDBBDBB tgDBDBDB BDBD D S BBBD BDDD DBDuuDu পরাজিত, এবং পরষানক্রমে অধিকৃত ছিল। যবিদ্বীপ ও বালিদ্বীপ বাঙ্গালীর উপনিবেশ, ইহাও অনেকে অনমিত করেন। তাম্রলিপ্তি ভারতবষীয়ের সমদ্রযাত্রার স্থান ছিল। ভারতবষীয় আর কোন জাতি। এরপ ঔপনিবেশিকতা দেখান নাই। দ্বিতীয়। বাঙ্গালী রাজগণ অনেক সময়ে উত্তরভারতে বহৎ সাম্রাজ্যের অধীশ্বর ছিলেন। পালবংশীয় দেবপালদেব ভারতবর্ষের সম্রাট বলিয়া কীৰ্ত্তিত। লক্ষণসেনের জয়স্তম্ভ বারাণসী, প্রয়াগ ও শ্ৰীক্ষেত্রে সংস্থাপিত হইয়াছিল। অতএব তিনি অন্ততঃ ভারতবর্ষের তৃতীয়াংশের অধীশ্বর ছিলেন। বাঙ্গালীরা গঙ্গাবংশ পরিচযে বহনকাল পয্যন্ত উড়িষ্যার অধীশ্বর ছিলেন। যে জাতি মিথিলা, মগধ, কাশী, প্রয়াগ, উৎকলাদি জয় করিয়াছিল, যাহার জয়পতাকা হিমালয়মলে, যমনাতটে, উৎকলের সাগরোপকলে, সিংহলে, যবদ্বীপে, এবং বালিদ্বীপে উড়িত, एन छाऊ कश्न ऋद्ध छाऊ छिळ ना । তৃতীয়। সপ্তদশ পাঠান কৰ্ত্তক বঙ্গজয় হইয়াছিল, এ কলঙ্ক মিথ্যা। সপ্তদশ পাঠান কর্তৃক কেবল নবদ্বীপের রাজপরী বিজিত হইয়াছিল। তৎসঙ্গী সেনা কর্তৃক কেবল মধ্যবঙ্গ বিজিত হইয়াছিল। ইহার পরেও বহদিন পৰ্যন্ত সেনবংশীয়েরা পর্ব ও দক্ষিণ বাঙ্গালার অধিপতি থাকিয়া সবাধীনভাবে সপ্তগ্রামে ও সবণ গ্রামে রাজত্ব করিয়াছিলেন। “পাঠানেরা ৩৭২ বৎসর রাজত্ব করিয়াছিলেন, তথাপি কোন কালে সমদায় বাঙ্গালার অধিপতি হয়েন নাই। পশ্চিমে বিষ্ণপের ও পঞ্চকোটে তাঁহাদিগের ক্ষমতা প্রবিষ্ট হয় নাই; দক্ষিণে সন্দেরবনসন্নিহিত প্রদেশে স্বাধীন হিন্দ,রাজা ছিল; পাবে চট্টগ্রাম, নোয়াখালি এবং ত্রিপরা, আরাকানরাজ ও ত্রিপােরাধিপতির হস্তে ছিল; এবং উত্তরে কুচবেহাের স্বতন্ত্ৰতা রক্ষা করিতেছিল। সতরাং পাঠানেরা যে সময়ে উড়িষ্যা জয় করিতে সক্ষম হইয়াছিলেন, যে সময়ে তাঁহারা ১,৪oooo পদাতিক, ৪o.ooo অশ্বারোহী এবং ২০.ooo কামান দেখাইতে পারিতেন, সে সময়েও বাঙ্গালার অনেকাংশ তাঁহাদিগের হস্তগত হয় নাই।”* বাঙ্গালার অধঃপতন একদিনে ঘটে নাই।

  • বাঙ্গালার ইতিহাস, ২৯ পাঠা।

○○。