পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७का ब्रा5नाबव्नी এদেশে অধিকাংশের মত যে, কেহ হিন্দ বংশজ হইয়া বিধবার বিবাহ দিতে পরিবে না বা কেহ হিন্দ বংশজ হইয়া সমদ্র পার হইবে না। অলপাংশের মত, বিধবার বিবাহ দেওয়া অবশ্য কৰ্ত্তব্য এবং ইংলন্ডদশন পরম ইন্টসাধক। কিন্তু যদি এই অলপাংশ আপনাদিগের মতানসারে কাৰ্য্য করে- বিধবা কন্যার বিবাহ দেয় বা ইংলন্ডে যায়, তবে তাহারা অধিকাংশকতুক সমাজবহিস্কৃত হয়। ইহা অধিকাংশকর্তৃক অল্পাংশের উপর সামাজিক অত্যাচার। ইংলন্ডে অধিকাংশ লোক খ্রীস্টভ্যন্ত এবং ঈশ্বরবাদী। যে অনীশ্বরবাদী বা খ্রীস্টধক্ষেম ভক্তিশান্য, সে সাহস করিয়া আপনার অবিশ্বাস ব্যক্ত করিতে পারে না। ব্যক্ত করিলে, নানা প্রকার সামাজিক পীড়ায় পীড়িত হয়। মিল জন্মাবচ্ছিন্নে আপনার অভক্তি ব্যক্ত করিতে পারিলেন না; ব্যক্ত না করিয়াও, কেবল সন্দেহের পাত্ৰ হইয়াও, পালিয়ামেণ্টে অভিষেক-কালে অনেক বিঘ্যবিব্রত হইয়াছিলেন। এবং মাতৃত্যুর পর অনেক গালি খাইয়াছিলেন। ইহা ঘোরতর সামাজিক অত্যাচার। অতএব সামাজিক অত্যাচারী দই শ্রেণীভুক্ত; এক, সমাজের শাস্তা এবং বিধাতৃগণ; দ্বিতীয়, সমাজের অধিকাংশ লোক। ইহাদিগের অত্যাচারে সামাজিক দঃখের উৎপত্তি। সেই সকল সামাজিক দঃখ, সমাজের অবনতির কারণ। তাহার নিরাকরণ মনষ্যের সাধ্য এবং অবশ্য কত ব্য! কি কি উপায়ে, সেই সকল অত্যাচারের নির্যাকরণ হইতে পারে ? দই উপায়; বাহবিল এবং বাক্যবাল। বাহাবল কাহাকে বলি, এবং বাক্যবল কাহাকে বলি, তাহা প্রথমে বাবাইব। তৎপরে এই বলের প্রয়োগ বাবাইব । এবং এই দই বলের প্রভেদ ও তারতম্য দেখাইব। কাহাকেও বাবাইতে হইবে না যে, যে বলে ব্যাঘ্র হরিণশিশকে হনন করিয়া ভোজন করে, আর যে বলে অস্তলিজ বা সেডান জিত হইয়াছিল, তাহা একই বল ; দইই বাহ বল। আমি লিখিতে লিখিতে দেখিলাম, আমার সম্মখে একটা টিকটিকি একটি মক্ষিকা ধরিয়া খাইলসিসস্ত্রিস হইতে আলেকজান্ডর রামানফ পৰ্যন্ত যে যত সাম্রাজ্য স্থাপিত করিয়াছে—রোমান বা মাকিদনীয়, খস্র বা খলিফা, রস বা প্রস, যিনি যে সাম্রাজ্য সংস্থাপিত বা রক্ষিত করিয়াছেন, তাঁহার বল, আর এই ক্ষধাত্ত টিকটিকির বল, একই বল—বাহ বল। সালতান মহম্মদ সোমনাথের মন্দির লািঠ করিয়া লইয়া গেল-আর কালামখী মাজারী ইন্দির মখে করিয়া পালাইল-উভয়েই বীর-বাহবিলে বীর। সোমনাথের মন্দিরে, আর আমার বস্ত্রচ্ছেদক ইন্দরে প্রভেদ অনেক স্বীকার করি;-কিন্তু মহম্মদের লক্ষ সৈনিকে, আর একা মাজারীতেও প্ৰভেদ অনেক। সংখ্যা ও শরীরে প্রভেদ-বীয্যে প্রভেদ বড় দেখি না। সাগরও জলশিশিরবিন্দ ও জল। মহম্মমদের বীর্য্য ও টিকটিকি বিড়ালের বীৰ্য্য, একই বীৰ্য্য। দইই বাহবিলের বীৰ্য্য। পথিবীর বীরপরিষগণ ধন্য! এবং তাঁহাদিগের গণকীৰ্ত্তনকারী ইতিবত্তলেখকগণ—হেরাডোটস হইতে কে ও কিঙলেক সাহেব পৰ্য্যন্ত—তাঁহারাও ধন্য। কেহ কেহ বলিতে পারেন যে, কেবল বাহবিলে কখনও কোন সাম্রাজ্য স্থাপিত হয় নাইকেবল বাহবিলে পাণিপাত সেডান জিত হয় নাই- কেবল বাহবিলে নাপোলেয়ন বা মালদ্বর বীর নহে। স্বীকার করি, কিছ কৌশল-অর্থাৎ বদ্ধিবল-বাহবিলের সঙ্গে সংযক্ত না হইলে কাৰ্য্যকারিতা ঘটে না। কিন্তু ইহা কেবল মনষ্যেবীরের কায্যে নহে-কেহ কি মনে করা যে, বিনা কৌশলে টিকটিকি মাছি ধরে, কি বিড়াল ইন্দর ধরে ? বদ্ধিবলের সহযোগ ভিন্ন বাহবলের সাফাত্তি নাই-এবং বদ্ধিবল ব্যতীত জীবের কোন বলেরই সাফাত্তি নাই। অতএব ইহা স্বীকার করিতে হইতেছে যে, যে বলে পশ্যগণ এবং মনষ্যেগণ উভয়ে প্রধানতঃ সবাথ সাধন করে, তাহাই বাহ বল। প্রকৃত পক্ষে ইহা পশবেল, কিন্তু কায্যে সৰ্ব্বক্ষম, এবং সবত্রই শেষ নিম্পপত্তিস্থল। যাহার। আর কিছতেই নিম্পত্তি হয় না।--তাহার নিম্পত্তি বাহবিলে। এমন গ্ৰন্থি নাই যে, ছরিতে কাটা যায় না- এমত প্রস্তর নাই যে, আঘাতে ভাঙ্গে না। বাহবিল ইহজগতের উচ্চ আদালত-সকল আপীিলের উপর আপীল এইখানে; ইহার উপর আর আপীল নাই। বাহবিল-পশার বল; কিন্তু মনষ্যে অদ্যপি কিয়দংশে পশম, এজন্য বাহাবল মনষ্যের প্রধান অবলম্পবন । কিন্তু পশগণের বাহবিলে এবং মনষ্যের বাহবিলে একটি গারতের প্রভেদ আছে। পশগণের বাহাবল নিত্য ব্যবহার করিতে হয়-মানষ্যের বাহবিল নিত্য ব্যবহারের প্রয়োজন নাই।

  • 馨幽