পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীমন্তগৰক্ষাগীতা তোমার মাতৃ হইলে তোমার সেই দেহ পড়িয়া থাকিবে, কিন্তু তৎকালে তাহার সখ দঃখ ভোগের কোন লক্ষণ দেখা যাইবে না। আবার মনে কর, কেহ তোমাকে অপমান করিয়াছে, তাহাতে দেহের কোন বিকার নাই, তথাপি তুমি দঃখী। তবে তোমার দেহ দঃখভোগ করে না। যে দঃখভোগ করে, সে সর্বতন্ত্র। সেই তুমি। তোমার দেহ তুমি নহে। এইরপ সকল জীবের। অতএব দেখা যাইতেছে যে, এই জগতের কিয়দংশ ইন্দ্রিয়গোচর, কিয়দংশ অনমেয় মাত্র, ইন্দ্ৰিয়গোচর নহে, এবং সািখ দঃখাদির ভোগকৰ্ত্তা। যে সখি দঃখাদির ভোগকত্তা, সেই আত্মা।”* আত্মতত্ত্ব বিষয়ক এই স্থল কথাটা খ্ৰীষ্টিয়াদি সকল ধৰ্ম্মেই আছে। কিন্তু তাহার উপর আর একটা অতি সক্ষম, অতি চমৎকার কথা কেবল হিন্দধমেই আছে। সেই তত্ত্ব অতি উন্নত, উদার, বিশদ্ধ, বিশ্বাসমাত্রে মনষ্যেজন্ম সার্থক হয়। হিন্দ ভিন্ন আর কোন জাতিই সেই অতি মহত্তত্ত্ব অনভূত করিতে পারে নাই। যে সকল কারণে হিন্দধৰ্ম্মম অন্য সকল ধৰ্ম্মেমরি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, ইহা তাহার মধ্যে একটি অতি গরতের কারণ। সেই তত্ত্ব এখন বঝাইতেছি। আত্মা সকলেরই আছে। তুমি যখন আমা হইতে ভিন্ন, তখন তোমার আত্মা আমা হইতে কাজেই ভিন্ন। কিন্তু ভিন্ন হইয়াও প্রকৃতরাপে ভিন্ন নহে। মনে কর, বহসংখ্যক শান্য পাত্র আছে; তাহার সকলগলির ভিতর আকাশ আছে। এক পাত্রাভ্যন্তরস্থ আকাশ পাত্রান্তরস্থ আকাশ হইতে ভিন্ন। কিন্তু পথক হইলেও সকল পাত্ৰস্থ আকাশ জাগতিক আকাশের অংশ। পাত্ৰগলি ভগ্ন করিলেই আর কিছমাত্র পার্থক্য থাকে না। সকল পাত্ৰস্থ আকাশ সেই জাগতিক আকাশ হইতে অভিন্ন হয়। এইরুপ ভিন্ন ভিন্ন জীবগত আত্মা পরস্পর পাথক হইলেও জাগতিক আত্মার অংশ, কেহ বন্ধন হইতে বিমাক্ত হইলে সেই জাগতিক আত্মাষ বিলীন হয়। এই জগদাত্মাকে হিন্দ-দার্শনিকেরা পরমাত্মা বলেন। জীবদেহস্থায়ী আত্মা যত দিন সেই পরমাত্মায় DD D DBDS DDD D BBB BDBB BBD এখন এই জীবাত্মা কি নশ্বর ? দেহের ধবংস হইলেই কি তাহার ধবংস হইল ? ইহার সহজ উত্তর এই যে, যাহা অবিনশ্বরের অংশ, তাহা কখন নশ্বর হইতে পারে না। যদি জাগতিক আকাশ অবিনশ্বর হয়, তবে ভান্ডস্থ আকাশও অবিনশ্বর। যদি পরমাত্মা অবিনশ্বর হয়েন, তবে তদংশ। জীবাত্মাও অবিনশ্বর। এই হইল হিন্দধমের কথা। অন্য কোন ধৰ্ম্মম এই অত্যুন্নত তত্ত্বের নিকটেও আসিতে পারেন নাই। আমরা পরে দেখাইব যে, ইহার অপেক্ষা উন্নত তত্ত্ব মন ব্যজ্ঞাত তত্ত্বের ভিতর অ্যাদা নাই বলিলেও হয়। প্রাচীন ঋষিরা বলিতে পারেন, “আমবা যদি আর কিছনা করিতাম, কেবল এই কথাটা পথিবীতে প্রচার করিয়া যাইতাম, তাহা হইলেও আমরা সকল মনষ্যের উপরে আসন পাইবার যোগ্য হইতাম।” বাস্তবিক এই সকল তত্ত্বের আলোচনা করিলে তাঁহাদিগকে মনষ্যমধ্যে গণনা করা যাইতে পারে না; দেবতা বলিতে ইচ্ছা করে। এখন দেখা যাউক, বৈজ্ঞানিকেরা এ সম্বন্ধে কি বলেন। তাঁহারা বলেন আদৌ আত্মার অস্তিত্বের প্রমাণ নাই। প্রমাণাভাবে কোন কথাই স্বীকার কত্তব্য নহে। যখন আত্মার অস্তিত্বই স্বীকার করা যাইতে পারে, তখন তাহার অবিনাশিতা, জীবাত্মা, পরমাত্মা, এ সকল উপন্যাসমধ্যে গণনা করিতে হয়। এই শ্রেণীর এক জন জগদ্বিখ্যাত লেখক, আত্মার অস্তিত্ব স্বীকার পক্ষে যে আপত্তি, তাহা বিশদরপে ব্যবষ্কাইয়াছেন। 'Thought and consciousness, though mentally distinguishable from the body, may not be a substance separable from it, but a result of it, standing in relation to it, like that of a tune to the musical instrument on which it is played; and that the arguments used to prove that the soul does not die with the body, would equally prove that the tune does not die with the instrument but survives its destruction and continues to exist apart.

  • প্ৰবন্ধ পান্তক। * যে তত্ত্বটা বঝাইলাম, তাহা যে বিলাতী pantheism নয়, এ কথা বোধ হয় বলিবার প্রয়োজন नरे ।

R