পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অদি ভ্ৰাম সমাজ এক জন ভৃত্য-নাএব কি কি আমি ঠিক জানি না। যদি আমার ভুল হইয়া থাকে, . ভরসা করি, ইনি আমাকে মার্জ না করিবেন। ইনি সকল মাসিক পত্রে লিখিয়া থাকেন, এবং ই‘হার কোন কোন প্রবন্ধ পড়িয়াছি। আমার কথার দই এক স্থানে কখন কখন প্রতিবাদ করিয়াছেন। দেখিয়াছি। সে সকল স্থলে কথন অসৌজন্য বা অসভ্যতা দেখি নাই। কিন্তু এবারকার এই প্রবন্ধে ভাষাটা সহসা বড় না এবি রকম হইয়া উঠিয়াছে। পাঠককে একট, উপহার দিতেছি ‘হে বঙ্গীয় লেখক! যদি ইতিহাস লিখিতে চাও, তবে রাশি রাশি গ্রন্থ অধ্যয়ন কর আবিকৃত শাসনপত্রগলির মল শ্লোক বিশেষরপে আলোচনা করকাহারও অন্যবাদের প্রতি অন্ধভাবে নির্ভর করিও না। উইলসনবেবার, মেকমলার কনিংহাম প্রভৃতি পণ্ডিতগণের পদলেহন করিলে কিছই হইবে না। কিবা মিওর, ভাউদাজি, মেইন, মির, হাল্টার প্রভৃতির কুসন-কাননে প্রবেশ করিরা তকরবত্তি অবলম্বন করিও না। স্বাধীন ভাবে গবেষণা কর না পার গরে গিরি করিও না নবাভারত--ভাদ্র. ২২৫ পষ্ঠা এখন এই লেখকের কথা উখাপন করার আমার এমন উদ্দেশ্য নাই যে, কেহ বঝেন, প্রভু দিগের আদেশানসোরে ভূতের ভাষার এই বিকৃতি ঘটিয়াছে। তিনি আদি ব্রাহ্ম সমাজের সহবার সম্পাদক বলিয়াই. তাঁহার উল্লেখ করিলাম চতুথ আক্রনগ, আদি ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদকের দ্বারা হইয়াছে গালিগালাজের বড় ছড়াছড়ি বড় বাড়াবাড়ি আছে। আমরা প্রায়ই দেখিয়াছি, গালিগালাজে প্রভুর অপেক্ষা ভূতা মজব এখানে বন্সিতে হইবে, প্রভূই মজবদ্ধত তবে প্রভু, ভূতোর মত মেছোহাটা হইতে গালি আমদানি করে নাই: প্ৰাথ ন মন্দির হইতে আনিয়াছেন। উদাহরণ-."অসাধারণ প্রতিভা ইচ্ছা করিলে দেশের উন্নতির মুল শিথিল করিতে পারেন, কিন্তু সত্যের মল শিথিল করিতে পারেন না। আরও বাড়াবাড়ি আছে। মেছোহাটার ভাষা এত দর পৌছে না। পাঠক মনে করিবেন, রবীন্দ্র বাব, তরণেষয়ক বলিয়াই এত বাড়াবাড়ি হইয়াছে। তাহা নহে। সরে কেমন পদা পরদা উঠিতেছে, 'তাহ। দেখাইয়া আসিয়ছি। সমাজের সহকারী সম্পাদকের কড়ি মধ্যমের পর, সম্পাদক হয়: (৪ মে না উঠিলে | সরে লাগাইতে পারিবার সম্ভাবনা ছিল না। রবীন্দ্ৰ বাব বলেন যে, আমার এই মত যে, সত্য ত্যাগ করিয়া প্রয়োজন মতে মিথ্যা কথা বলিবে। বরং আরও বেশী বলেন: পাঠক বিশ্বাস না করেন, তাঁহার লিপি উদ্ধতে করিতেছি, পড়ন। আমাদের দেশের প্রধান লেখক প্রকাশ্য ভাবে. অসকোচে, নির্ভয়ে, অসত্যকে সত্যের সহিত একাসনে বসাইয়াছেন, সত্যের পর্ণ সত্যতা অস্বীকার করিযাছেন, এবং দেশের সমস্ত পাঠক নীরবে নিস্তব্ধভাবে শ্রবণ করিয়া গিয়াছেন। সাকার নিরাকারের উপাসনা ভেদ লইয়াই সকলে কোলাহল করিতেছেন, কিন্তু অলক্ষ্যে ধর্মের ভিত্তিমলে যে আঘাত পড়িতেছে, সেই আঘাত হইতে ধৰ্ম্ম কে ও সমাজকে রক্ষা করিবার জন্য কেহ দণ্ডায়মান হইতেছেন না এ কথা কেহ ভাবিতেছেন না যে, যে সমাজে প্রকাশ্য ভাবে কেহ ধর্মের মলে কুঠারাঘাত করিতে সাহস করে সেখানে ধর্মের মল না জানি কতখানি শিথিল হইয়া গিয়াছে। আমাদের শিরার মধ্যে মিথ্যাচরণ ও কাপরে-যতা যদি রক্তের সহিত সঞ্চালিত না হইত, তাহা হইলে, কি আমাদের দেশের মখ্য লেখক পথের মধ্যে দাঁড়াইয়া গদ্ধা সহকারে সত্যের বিরদ্ধে একটি কথা কহিতে সাহস করেন ? ইত্যাদি ইত্যাদি। ( ভারতী--অগ্রহায়ণ, ৩৪৭ পঃ) সর্বনাশের কথা বটে. আদি ব্রাহ্ম সমাজ না থাকিলে আমার হাত হইতে দেশ রক্ষা পাইত। কি না সন্দেহ। হয়ত পাঠক জানিতে ইচ্ছা করিতেছেন, কবে এই ভয়ংকর ব্যাপার ঘটিল! কবে আমি পথের মধ্যে দাঁড়াইয়া গদ্ধা সহকারে, লোক ডাকিয়া বলিয়াছি, “তোমরা ছাই ভস্ম সত্য ভাসাইয়া দাও-মিথ্যার আরাধনা কর।” কথাটার উত্তর দিতে পারিলাম না। ভরসা ছিল,

কৈলাস বাবর প্রবন্ধেই প্রকাশ আছে যে, তিনি জানিয়াছেন যে প্ৰবন্ধ আমার লিখিত এবং আমিই তাঁহার লক্ষ্য। ২২৫ পষ্ঠা প্রথম স্তম্ভের নোট এবং অন্যান্য স্থান পড়িয়া দেখার ইহা যে আমার লেখা তাহা অনেকেই জানে, এবং কোন কোন সবাদপত্রেও সে কথা প্রকাশিত হইয়াছিল। কচ্ছতার সমরে শ্রোতারা এই শব্দটা কিপে 'মিয়াছিলেন ৯১৫