পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপন্যাস-প্রসঙ্গ পণচন্দ্ৰ অতঃপর লিখিয়াছেন : “ভাবগতিকে বঝিলাম, বঙ্কিমচন্দ্রের একথা মনোমত হইল না। দীনবন্ধ কোনও মতামত প্রকাশ করিলেন না। ইহার পর দই বৎসরের (?) মধ্যে ‘কপালকুণডালা’ প্রকাশিত হইল। বঙ্কিমচন্দ্র এই কাপালিক-প্রতিপালিতা কন্যাকে সমদ্রতটবিহারিণী, বনচারিণী, সন্টিছাড়া এক অপব্ব মধ্যর প্রকৃতির মোহিনী মাত্তি রিপে অঙ্কিত করিয়া গিয়াছেন।” (বঙ্কিম-প্রসঙ্গ, পঃ ৭৫) ‘কপালকুণডালা’ গলপারম্প্ৰেভ কুক্তঝটিকার উল্লেখ আছে। পণচন্দ্র ‘বঙ্কিমচন্দ্রের বাল্যকথায় এক দিবসের কুয়াসার কথা বলিয়াছেন। সে দিবসের কুয়াসা এমন হইয়াছিল যে, কোলের মানষ দেখা যায় নাই। এত গভীর কুয়াসা যে, কলেজে যাইবার কালে বেলা ১০টা ১১টার সময় নৌকায় উঠিয়া ওপাড়ে যাইতে না পারিয়া মলাযোড় বরাবর পৌছিল। পণচন্দ্ৰ বলেন, ‘কপালকুন্ডলা গলপটি যে কুক্তঝটিকায় আরম্ভ হইয়াছিল, তাহা নিশ্চয় এই দিনকার ঘটনাবলম্বনে।” (ঐ, পঃ ৪৯) পণচন্দ্র আরও অনমান করেন, ‘কপালকুন্ডলা” উপ্যনাসের ‘মতিবিবি” কোনও গহসেথর কুলত্যাগিনী বধাের গলপ অবলম্বনে অঙ্কিত হয়। তাঁহার মতে "ইহার চরিত্রের সঙ্গে মতিবিবির কোন সদশ্য নাই বটে, কিন্তু ঘটনার সাদশ্য আছে।” (ঐ, পঃ ৫১) ‘কপালকুঁশডলা’য় প্রথমে বত্ৰিশটি পরিচ্ছেদ ছিল। পরবত্তীকালে বঙিকমচন্দ্র একটি পরিচ্ছেদ পরিত্যাগ করায়, ইহা বৰ্ত্তমানে একত্রিশ পরিচ্ছেদে সম্পর্ণে। কপালকুন্ডলা প্রকাশের পরই ইহার বিশেষ সমাদর হয়। বঙিকম-গোল্ঠীর অন্যতম প্রধান অক্ষয়চন্দ্র সরকার বলিয়াছেন, “এই উপন্যাসখানি বাহির হওয়া মাত্র বঙ্কিমবাবার যশোরাশি চতুদিক বিকীর্ণ হইয়া পড়িল এবং ইতিপব্বে যাঁহারা বাঙ্গালা গ্রন্থকার বলিয়া খ্যাতিপন্ন ছিলেন, তাঁহাদের সকলেরই যশোজ্যোতিঃ হীনপ্ৰভ হইয়া পড়িল।” বঙিকমচন্দ্রের সমসময়ে ও পরবত্তীকালে বহন সমালোচক ‘কপালকুন্ডলা’র উৎকর্ষ মক্তকণ্ঠে স্বীকার করিয়াছেন। কাব্যাংশে শ্রেষ্ঠ বলিয়্য কেহ কেহ। ইহাকে তাঁহার উপন্যাসসমহের মধ্যে উৎকৃষ্ণাটতমও বলিয়াছেন। আর. ডবল, ফ্রেজার Literary History of India (London, 1898) iCfa as 5?irst-i-Ifrig pit erriT Outside in "Mariage de Loti' there is nothing comparable to the "Kopala Kundala' in the history of Western fiction.' ' ‘কপালকুণডালা’ বিভিন্ন ভাষায় অনদিত হইয়াছে। ইংরেজী অনাবাদ একাধিক হইয়াছে। অধ্যাপক ক্লেম কর্তৃক জাম্পমান ভাষায় ১৮৮৬ সনে এখানি অনদিত হয়। ১৯৩৭ সনে পন্ডিত হরিচরণ বিদ্যারত্ন ইহার সংস্কৃত অন্যবাদ প্রকাশ করেন। ইহা ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লেখক কর্তৃক হিন্দী, গজরাটী, তামিল ও তেলােগ ভাষায়ও ‘কপালকুণডালা’র অন্যবাদ প্রকাশিত হইয়াছে। ‘কপালকুণডালা’ নাটকাকারে সব্বপ্রথম রপান্তরিত করেন প্ৰসিদ্ধ নট ও নাট্যকার গিরীশচন্দ্র ঘোষ। অতুলকৃষ্ণ মিত্ৰও ইহাকে নাট্যাকারে গ্রথিত করেন। शाब्लिनी “মােণালিনী’তে বঙ্কিমচন্দ্রের সবাদেশিকতা সব্বপ্রথম সচিত হয়। বখতিয়ার খিলিজী অভটাদশ অশবারোহী সহ বঙগদেশ জয় করেন, এই কাহিনী বা গলপ কাঙিকমচন্দ্ৰ আদৌ বিশ্ববাস করিতে পারেন নাই। তিনি বাঙগালী জাতির শৌয্য-বীয্যের প্রতি আসথাশীল ছিলেন। উত্ত জাতীয় কলঙক বিশ্ববাস করিতে না পারিয়া বঙ্কিমচন্দ্র ‘মণিালিনী’ রচনায় হস্তক্ষেপ করেন। তিনি পস্তকখানির প্রথম দাই সংস্করণের আখ্যাপত্রে ইহাকে “ঐতিহাসিক উপন্যাস” আখ্যা দেন। পরবত্তীর্ণ সংস্করণে তিনি উক্ত আখ্যা বর্জন করেন। কারণ তাঁহার মতে বখতিয়ারের বঙগবিজয় উপলক্ষ্য করিয়া রচিত হইলেও ইহার ঐতিহাসিকতা সামান্য। “মােণালিনী’ প্রকাশিত হয় ১৮৬৯ সনে। ‘মণিালিনী’র রচনা সংশোধন ও প্রকাশ সম্পবন্ধে বঙিকমচন্দ্রের ভ্রাতুষ্পপত্র শচীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় “বণ্ডিকম-জীবনী’তে (৩য় সং, পঃ ২৯৭) লিখিয়াছেন যে, আলিপরে বঙ্কিমচন্দ্ৰ দশমাস ছিলেন, (১৮৬৮, ১৪ই আগস্ট ফাইতে ৪ জন ১৮৬৯) । ৫ই জন ১৮৬৯ তারিখ হইতে তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ছয় মাসের ছটি ○ >