পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झञ्जनौ ফেলিয়া দিয়া চলিয়া গেলাম। আমি সকল বন্দোবসত ঠিক করিয়া আসিয়াছিলাম-আমি আর বাড়ী গেলাম না। একেবারে স্টেশনে গিয়া বাহুপৰীয় শকটারোহণে কাশমীর যাত্রা করিলাম। দোকানপাট উঠিল । bडूथ* अबहुप्छन ইহাের দই বৎসর পরে, একদা ভ্ৰমণ করিতে করিতে আমি ভবানীনগর গেলাম। শানিলাম যে, মিত্রবংশীয় কেহ তথায় আসিয়া বাস করিতেছেন। কৌতহলপ্রযক্ত আমি দেখিতে গেলাম। দবারদেশে শচীন্দ্রের সহিত সাক্ষাৎ হইল । শচীন্দ্র আমাকে চিনিতে পারিয়া, নমস্কার আলিঙ্গনপৰিবাক আমার হস্ত ধারণ করিয়া লইয়া উত্তমাসনে বসাইলেন। অনেকক্ষণ তাঁহার সঙেগ নানাবিধ কথোপকথন হইল। তাঁহার নিকট শনিলাম যে, তিনি রজনীকে বিবাহ করিয়াছেন। কিন্তু রজনী ফলওয়ালী ছিল, পাছে কলিকাতায় ইহাকে লোকে ঘণা করে, এই ভাবিয়া, তিনি কলিকাতা পরিত্যাগ করিয়া, ভবানীনগরে বাস করিতেছেন। তাঁহার পিতা ও ভ্রাতা। কলিকাতাতেই বাস করিতেছেন। আমার নিজসম্পত্তি প্ৰতিগ্রহণ করিবার জন্য শচীন্দ্র আমাকে বিস্তর অননুরোধ করিলেন। কিন্তু বলা বাহাদুল্য যে, আমি তাহাতে স্বীকৃত হইলাম না। শেষে শচীন্দ্র রজনীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আমাকে অননুরোধ করিলেন। আমারও সে ইচ্ছা ছিল। শচীন্দ্র আমাকে অন্তঃপারে রজনীর নিকট লইয়া গেলেন। রজনীর নিকট গেলে, সে আমাকে প্ৰণামপি ববক পদধলি গ্রহণ করিল। আমি দেখিলাম যে, ধৰ্মলিগ্রহণকালে, পাদসপশ জন্য, অন্ধগণের স্বাভাবিক নিয়মান যায়ী সে ইতস্ততঃ হস্তসঞ্চালন করিল না, এককালেই আমার পাদস্পশা করিল। কিছ বিস্মিত হইলাম। সে আমাকে প্ৰণাম করিয়া দাঁড়াইল। কিন্তু মাখ অবনত করিয়া রহিল। আমার বিস্ময় বাড়িল। অন্ধ্বদিগের লজজা চক্ষগত নহে। চক্ষে চক্ষে মিলনজনিত যে লজা, তাহা তাহাদিগের ঘটিতে পারে না বলিয়া, তাহারা দাম্পিট লকাইবার জন্য মািখ নত করে না। একটা কি কথা জিজ্ঞাসা করিলাম, রজনী মািখ তুলিয়া আবার নত করিল, দেখিলাম-নিশ্চিত দেখিলাম।-- সে চক্ষে কটাক্ষ! জন্মান্ধী রজনী কি এখন তবে দেখিতে পায় ? আমি শচীন্দ্রকে এই কথা জিজ্ঞাসা করিতে যাইতেছিলাম, এমত সময়ে শচীন্দ্ৰ আমাকে বসিবার আসন দিবার জন্য রজনীকে আজ্ঞা করিলেন। রজনী একখানা কাপেট লইয়া পাতিতেছিল–– যেখানে পাতিতেছিল, সেখানে অলপ এক বিন্দ জল পড়িয়াছিল ; রজনী আসন রাখিয়া, অগ্ৰে অণ8লের দবারা জল মাছিয়া লইয়া আসন পাতিল । আমি বিলক্ষণ দেখিয়াছিলাম যে, রজনী সেই জল সপশ না করিয়াই আসন পাতা বন্ধ করিয়া জল মাছিয়া লইয়াছিল। অতএব সপশের দবারা কখনই সে জানিতে পারে নাই যে, সেখানে জল আছে। অবশ্য সে জল দেখিতে পাইয়াছিল। আমি আর থাকিতে পারিলাম না। জিজ্ঞাসা করিলাম, “রজনি, এখন তুমি কি দেখিতে ?T3?” রজনী মািখ নত করিয়া, ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “হাঁ।” আমি বিস্মিত হইয়া শচীন্দ্রের মািখপানে চাহিলাম। শচীন্দ্ৰ বলিলেন, “আশ্চৰ্য্য বটে, কিন্তু ঈশবরকৃপায় না হইতে পারে, এমন কি আছে ? আমাদিগের ভারতবর্ষে চিকিৎসাসম্পবন্ধে কতকগলি অতি আশ্চৰ্য্য প্রকরণ ছিল—সে সকল তত্ত্ব ইউরোপীয়েরা বহকাল পরিশ্রম করিলেও আবিস্কৃত করিতে পারিবেন না। চিকিৎসাবিদ্যায় কেন, সকল বিদ্যাতেই এই রােপ। কিন্তু সে সকল এক্ষণে লোপ পাইয়াছে, কেবল দলই একজন সন্ন্যাসী উদাসীন প্রভৃতির কাছে সে সকল লপিত বিদ্যার কিয়দংশ অতি গহ্যভাবে অবস্থিতি করিতেছে। আমাদিগের বাড়ীতে একজন সন্ন্যাসী কখন কখন যাতায়াত করিয়া থাকেন, তিনি আমাকে ভালবাসিতেন। তিনি যখন শনিলেন, আমি রজনীকে বিবাহ করিব, তখন বলিলেন, ‘শভদন্টি হইবে কি প্রকারে ? কন্যা যে অন্ধ।” আমি রহস্য করিয়া বলিলাম, আপনি অন্ধত্ব আরোগ্য করবেন।’ তিনি বলিলেন, ‘করিব—এক মাসে।” ঔষধ দিয়া, তিনি এক মাসে রজনীর চক্ষের দাম্পিট সািজন করিলেন।” 6. OCA