পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कभ ब्रा5नावब्नी প্রসাদপত্র হইতে অতি অলপ টাকাই আনিয়াছিলেন, তাহা এক বৎসরে ফরাইয়া গেল। আর দিনপাতের সম্পভাবনা নাই। তখন, ছয় বৎসরের পর, গোবিন্দলাল মনে ভাবিলেন, ভ্রমরকে একখানি পত্র লিখিব । গোবিন্দলাল কালি, কলম, কাগজ লইয়া, ভ্রমরকে পত্র লিখিব বলিয়া বসিলেন। আমরা সত্য কথা বলিব—গোবিন্দলাল পত্র লিখিতে আরম্ভ করিতে গিয়া কাঁদিলেন। কাঁদিতে কাঁদিতে মনে পড়িল, ভ্রমর যে আজিও বাঁচিয়া আছে, তাহারই বা ঠিকানা কি ? কাহাকে পত্র লিখিব ? তার পর ভাবিলেন, একবার লিখিয়াই দেখি। না হয়, আমার পত্র ফিরিয়া আসিবে। তাহা হইলেই জানিব যে ভ্রমর নাই। কি লিখিব, এ কথা গোবিন্দলাল কতক্ষণ ভাবিলেন, তাহা বলা যায় না। তার পর, শেষ ভাবিলেন, যাহাকে বিনাদোষে জন্মের মত ত্যাগ করিয়াছি, তাহাকে যা হয়, তাই লিখিলেই বা অধিক কি ক্ষতি হইবে ? গোবিন্দলাল লিখিলেন,

  • ভ্ৰমার ! “ছয় বৎসরেব পর এ পামর আবার তোমায় পত্র লিখিতেছে। প্রবত্তি হয় পড়িও ; না প্রবত্তি হয়, না পড়িয়াই ছিড়িয়া ফেলিও ।

“আমার আদলেট যাহা যাহা ঘটিয়াছে, বোধ হয় সকলই তুমি শনিয়াছ। যদি বলি, সে আমার কৰ্ম্মফল, তুমি মনে করিতে পাের, আমি তোমার মানরাখা কথা বলিতেছি। কেন না, আজি আমি তোমার কাছে ভিখারী। “আমি এখন নিঃস্ব । তিন বৎসর ভিক্ষা করিয়া, দিনপাত করিয়াছি। তীৰ্থস্থানে ছিলাম, তীৰ্থস্থানে ভিক্ষা মিলিত। এখানে ভিক্ষা মিলে না—সতরাং আমি আন্নাভাবে মারা যাইতেছি। “আমার যাইবার এক সন্থান ছিল-—কাশীতে মাতৃক্লোড়ে। মার কাশীপ্রাপিত হইয়াছে——বোধ হয় তাহা তুমি জান। সতরাং আমাব আব্ব সন্থান নাই—অন্ন নাই। “তাই, আমি মনে করিয়াছি, আবার হরিদ্রাগ্রামে এ কালামখ দেখাইব।--নাহিলে খাইতে পাই না। যে তোমাকে বিনাপরাধে পরিত্যাগ করিয়া, পারদার নিরত হইল, সত্ৰীহত্যা পর্য্যন্ত করিল, তাহার। আবার লজজা কি ? যে অন্নহীন, তাহার। আবার লাভজা কি ? আমি এ কালামখ দেখাইতে পারি, কিন্তু তুমি বিষয়াধিকারিণী—বাড়ী তোমার-আমি তোমার বৈরিতা করিয়াছি—আমায় তুমি সন্থােন দিবে কি ? “পেটের দায়ে তোমার আশ্রয় চাহিতেছি।--দিবে না কি ?” পত্র লিখিয়া সাত পাঁচ। আবার ভাবিয়া গোবিন্দলাল পত্র ডাকে দিলেন। যথাকালে পত্র ভ্ৰমরের হসোত পৌছিলা । পত্ৰ পাইয়াই, ভ্রমর হস্তাক্ষর চিনিল। পত্র খলিয়া কাঁপিতে কাঁপিতে, ভ্রমর শয়নগহে গিয়া দবার রন্ধ করিল। তখন ভ্রমর, বিরলে বসিয়া, নয়নের সহস্র ধারা মাছিতে মহুিতে, সেই পত্ৰ পড়িল। একবার, দাইবার, শতবার, সহস্রবার পড়িল। সে দিন ভ্ৰমর আর দবার খলিল না। যাহারা আহারের জন্য তাহাকে ডাকিতে আসিল, তাহাদিগকে বলিল, “আমার জবর হইয়াছে— আহার করিব না।” ভ্রমরের সব্বদা জবর হয়; সকলে বিশ বাস করিল। পরদিন নিদ্রাশন্য শয্যা হইতে যখন ভ্রমর গাত্ৰোখান করিলেন, তখন তাঁহার যথার্থই জবর হইয়াছে। কিন্তু তখন চিত্ত স্থির-বিকােরশনা। পত্রের উত্তর যাহা লিখিবেন, তাহা পকেবই স্থির হইয়াছিল। ভ্রমর তাহা সহস্ৰ সহস্র বার ভাবিয়া সিথর করিয়াছিলেন, এখন আর ভাবিতে হইল না। পাঠ পর্য্যন্ত সিথর করিয়া রাখিয়াছিলেন। “সেবিকা।” পাঠ লিখিলেন না। কিন্তু স্বামী সকল অবস্থাতেই প্ৰণম্য ; অতএব লিখিলেন, “প্ৰণামা শতসহস্র নিবেদনশঃ বিশেষ।” তার পর লিখিলেন, “আপনার পত্ৰ পাইয়াছি। বিষয় আপনার । আমার হইলেও আমি উহা দান করিয়াছি। যাইবার সময় আপনি সে দানপত্র ছিাড়িয়া ফেলিয়াছিলেন, সমরণ থাকিতে পারে। কিন্তু রেজিস্ট্রি অপিসে তাহার নকল আছে। আমি যে দান করিয়াছি, তাহা সিদ্ধ। তাহা এখনও বলবৎ । ཕ་ཡུལ་ আপনি নিবিবাঘে হরিদ্রাগ্রামে আসিয়া আপনার নিজসম্পত্তি দখল করিতে পারেন। আপনার । W O O