পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ज्ञष्बाबब्ी মিশ্র ঠাকুর বাঙনিৎপত্তি করিতে না পারিয়া নারায়ণ সমরণ করিতে লাগিলেন। আর একজন, তাঁহার গাঁটরি কাঁড়িয়া লইয়া খালিয়া দেখিতে লাগিল। তাহার ভিতর হইতে চঞ্চলকুমারীপ্রেরিত বলয়, দইখানি পত্র, এবং আশরাফি পাওয়া গেল। দস্য তাহা হস্তগত করিয়া সঙ্গীকে বলিল, “আর ব্ৰহ্মহত্যা করিয়া কাজ নাই। উহার যাহা ছিল, তাহা পাইয়াছি। এখন উহাকে ছাড়িয়া দে।” আর একজন দস্য বলিল, “ছাড়িয়া দেওয়া হইবে না। ব্ৰাহ্মণ তােহা হইলে এখনই একটা গোলযোগ করিবে। আজকাল রাণা রাজসিংহের বড় দৌরাত্ম্য—তাঁহার শাসনে বীরপর ষে আর অন্ন করিয়া খাইতে পারে না। উহাকে এই গাছে বধিয়া রাখিয়া যাই।” এই বলিয়া দস্যগণ মিশ্র ঠাকুবের হস্ত পদ এবং মািখ তাঁহার পরিধেয় বস্ত্রে দঢ়তর বাঁধিয়া, পৰ্ব্বব্যুতের সান দেশস্থিত একটি ক্ষদ্র বক্ষের কান্ডের সহিত বাঁধিলা। পরে চ78লকুমারী দত্ত রত্নবলয় ও পত্র প্রভৃতি লইয়া ক্ষদ্র নদীর তীরবত্তীর্ণ পথ অবলম্বন করিয়া পববাতান্তরালে আদশ্য হইল। সেই সময়ে পববতের উপরে দাঁড়াইয়া। একজন অশ্বারোহী তাহাদিগকে দেখিল । তাহারা, আশবারোহীকে দেখিতে পাইল না, পলায়নে ব্যস্ত । দস্যগণ পাৰ্ব্বতীয়া প্রবাহিণীর তটবত্তীর্ণ বনমধ্যে প্রবেশ করিয়া অতি দগম ও মনীষাসমাগমশান্য পথে চলিল। এইরপ কিছর দীর গিয়া, এক নিভৃত গহ মধ্যে প্রবেশ করিল। গহার ভিতর খাদ্যদ্রব্য, শয্যা, পাকের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সকল প্ৰস্তুত ছিল। দেখিয়া বোধ হয়, দস্যগণ কখন কখন এই গাহ মধ্যে ল্যুকাইয়া বাস করে। এমন কি, কলসীপাণ জল পৰ্যন্ত ছিল। দস্যগণ সেইখানে উপস্থিত হইয়া তামাকু সাজিয়া খাইতে লাগিল এবং একজন পাকের উদ্যোগ করতে লাগিল। একজন বলিল, “মাণিক লাল, রসই পরে হইবে। প্রথমে মালের কি ব্যবস্থা হইবে, তাহার মীমাংসা করা যাউক ৷” মাণিকলাল বলিল, “ম্যালের কথাই আগে হউক ৷” তখন আশরাফি কয়টি কাটিয়া চারিভাগ করিল। এক একজন এক এক ভাগ লইল । রত্নবলয় বিক্ৰয না হইলে ভাগ হইতে পারে ন!—তােহা সম্প্রতি অবিভক্ত রহিল। পত্র দইখানি কি করা যাইবে, তাহার মীমাংসা হইতে লাগিল। দলপতি বলিলেন, “কাগজে। আর কি হইবে।-- উহা পোড়াইয়া ফেলা।” এই বলিয়া পত্র দইখানি সে মাণিকলালকে অগিনীদেবকে সমপণ করিবার জন্য দিল । মাণিকলাল কিছ, কিছ লিখিতে পড়িতে জানিত। সে পত্র দইখানি আদ্যোপান্ত পড়ি আনন্দিত হইল। বলিল, “এ পত্র নন্ট করা হইবে না। ইহাতে রোজগার হইতে পারে।” “কি ? কি ?” বলিয়া আর তিন জন গোলযোগ করিয়া উঠিল। মাণিকলাল তখন চ৭8লকুমারীর পত্রের বক্তান্ত তাহাদিগকে সবিস্তারে বকেয়াইয়া দিল। শনিয়া চৌরেরা বড় আনন্দিত হইল । মাণিকলাল বালল, “দেখ, এই পত্র রাণাকে দিলে কিছ পরিস্কার পাইব ।” দলপতি বলিল, “নিবেবাধ ! রাণা যখন জিজ্ঞাসা করবে, তোমরা এ পত্র কোথায় পাইলে, তখন কি উত্তর দিবে ? তখন কি বলিবে যে, আমরা রাহাজানি করিয়া পাইয়াছি ? রাণার কাছে পরিস্কারের মধ্যে প্রাণদণড হইবে। তাহা নহে—-এ পত্ৰ লইয়া গিয়া বাদশাহকে দিব-বাদশাহের কাছে এরােপ সন্ধান দিতে পারিলে অনেক পরিস্কার পাওয়া যায়, আমি জানি। আর ইহাতে——” দলপতি কথা সমাপত করিতে অবকাশ পাইল না। কথা মাখে থাকিতে থাকিতে তাহার মস্তক স্কন্ধ হইতে বিচুত হইয়া ভূতলে পড়িল । চতুৰ্থ পরিচ্ছেদ ঃ মাণিকলাল আশবারোহী পৰ্ব্ববতের উপর হইতে দেখিল, চারি জনে একজনকে বাঁধিয়া রাখিয়া চলিয়া গেল। আগে কি হইয়াছে, তাহা সে দেখে নাই, তখন সে পৌছে নাই। আশাবারোহী নিঃশবেদ লক্ষ্য করিতে লাগিল, উহারা কোন পথে যাম। তাহারা যখন নদীর বাঁক ফিরিয়া পৰ্ব্ববতান্তরালে আদশ্য হইল, তখন অৰ্শবারোহী অশব হইতে নামিল। পরে অশেবর গায়ে হাত Ꮼ Ꮼ Ꮪ>