পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ऊद्धाश মাতার মত স্নেহ, কন্যার মত ভক্তি, দাসীর মত সেবা, সীতারাম সকলই নন্দার কাছে পাইতেছিলেন। কিন্তু সহধৰ্ম্মিমণী কই ? যে তাঁহার উচ্চ আশায় আশাবতী, হৃদয়ের আকাঙক্ষার ভাগিনী, কঠিন কায্যের সহায়, সঙকটে মন্ত্রী, বিপদে সাহসদায়িনী, জয়ে আনন্দময়ী, সে কই ? বৈকুণ্ঠে লক্ষয়ী ভাল, কিন্তু সমরে সিংহবাহিনী কই ? তাই নন্দার ভালবাসায়, সীতারামের পদে পদে শ্ৰীকে মনে পড়িত, পদে পদে সেই সংক্ষবর্ধ-সৈন্য-সঞ্চালিনীকে মনে পড়িত! “মার! মার! শত্ৰ, মার! দেশের শত্র, হিন্দরে শত্র, আমার শত্র মার!”—সেই কথা মনে পড়িত। সীতারাম । তাই মনে মনে সেই মহিমাময়ী সিংহবাহিনী মাত্তি পজা করিতে লাগিলেন। প্রেম কি, তাহা আমি জানি না। দেখিল আর মজিল, আর কিছ মানিল না, কই এমন দাবানল ত সংসারে দেখিতে পাই না। প্রেমের কথা পস্তকে পড়িয়া থাকি বটে, কিন্তু সংসারে “ভালবাসা", স্নেহ ভিন্ন প্রেমের মত কোন সামগ্রী দেখিতে পাই নাই, সতরাং তাহার বর্ণনা করিতে পারিলাম না। প্ৰেম, যাহা পস্তকে বণিত, তাহা আকাশকুসমের মত কোন একটা সামগ্রী হইতে পারে, যবক-যাবতীগণের মনোরঞ্জন জন্য কবিগণ কর্তৃক সন্ট হইয়াছে বোধ হয়। তবে একটা কথা স্বীকার করিতে হয়। ভালবাসা বা স্নেহ, যাহা সংসারে এত আদরের, তাহা পর্যাতনেরই প্রাপ্য, নর্তনের প্রতি জন্মে না। যাহার সংসগে অনেক কাল কাটাইয়াছি, বিপদে, সম্পপদে, সদিনে, দন্দিনে যাহার গণ বঝিয়াছি, সখে-দঃখের বন্ধনে যাহার সঙ্গে বদ্ধ হইয়াছি, ভালবাসা বা স্নেহ তাহারই প্রতি জন্মে। কিন্তু নািতন আর একটা সামগ্রী পাইয়া থাকে। নািতন বলিয়াই তাহার একটা আদর আছে। কিন্তু তাহা ছাড়া আরও আছে। তাহার গণ জানি না, কিন্তু চিহ্ন দেখিয়া অনমান করিয়া লইতে পারি। যাহা পরীক্ষিত, তাহা সীমাবদ্ধ; যাহা অপরীক্ষিত, কেবল অনমিত, তাহার সীমা দেওয়া না দেওয়া মনের অবস্থার উপর নিভাির করে। তাই নতনের গণ অনেক সময়ে অসীম বলিয়া বোধ হয়। তাই সে নতনের জন্য বাসনা দদািমনীয় হইয়া পড়ে। যদি ইহাকে প্রেম বল, তবে সংসারে প্রেম আছে। সে প্রেম বড় উন্মাদকর বটে। নতনেরই তাহা প্রাপ্য। তাহার টানে পরাতন অনেক সময়ে ভাসিয়া যায়। শ্ৰী সীতারামের পক্ষে নতেন। শ্ৰীীর প্রতি সেই উন্মাদকর প্রেম সীতারামের চিত্ত অধিকৃত করিল। তাহার স্রোতে, নন্দা রমা ভাসিয়া গেল । হায় নিতেন ! তুমিই কি সন্দের ? না, সেই পরাতনই সন্দের। তবে, তুমি নতেন ! তুমি অনন্তের অংশ। অনন্তের একটি খানিমাত্র আমরা জানি। সেই একটখানি আমাদের কাছে পরাতন, অনন্তের আর সব আমাদের কাছে নিতেন। অনন্তের যাহা অজ্ঞাত, তাহাও অনন্ত । নােতন, তুমি অনন্তেরই অংশ। তাই তুমি এত উন্মাদকর। শ্ৰী, আজ সীতারামের কাছে—-অনন্তের ऊ२४ ।। হায়! তোমার আমার কি নািতন মিলিবে না ? তোমার আমার কি শ্ৰী মিলিবে না ? যে দিন সব পরাতন ছাড়িয়া যাইব, সেই দিন সব নািতন পাইব, অনন্তের সম্মখে মাখামখেী হইয়া দাঁড়াইব । নয়ন মন্দিলে শ্ৰী মিলিবে । তত দিন এসো, আমরা বািক বাঁধিয়া, হরিনাম করি। হরিনামে অনন্ত মিলে। একাদশ পরিচ্ছেদ “এই ত বৈতরণী ! পার হইলে না কি সকল জব্বালা জড়ায়! আমার জবালা জড়াইবে কি ?” খরবাহিনী বৈতরণী-সৈকতে দাঁড়াইয়া একাকিনী শ্ৰী এই কথা বলিতেছিল। পশ্চাৎ অতি দরে নীলমেঘের মত নীলগিরির* শিখরপঞ্জে দেখা যাইতেছিল: সম্পমাখে নীলসলিলবাহিনী বক্ৰগামিনী তটিনী, রজতপ্রস্তরবৎ বিস্তৃত সৈকতমধ্যে বাহিতা হইতেছিল; পারে কৃষ্ণপ্রস্তরনিমিত সোপােনাবলীর উপর সপত মাতৃকার মন্ডপ শোভা পলুইতেছিল ; তন্মধ্যে আসীনা সপত মাতৃকার প্রস্তরময়ী মাত্তিও কিছ, কিছ, দেখা যাইতেছিল; রাজ্ঞীশোভাসমন্বিতা ইন্দ্রাণী, মধরের পিণী বৈষ্ণবী, কৌমারী, ব্রাহ্মণী, সাক্ষাৎ বীভৎসরসরপধারিণী যমপ্রসতি ছায়া, নানালঙ্কারভূষিতা বিপলোরকরীচরণোরসী কক্ষীবকণ্ঠান্দোলিতরত্নহারা লম্বোদরা চীনাস্বরা বরাহ বদনা বারাহী,

  • বালেশবের জেলার উত্তরভাগস্থিত কতকগালি পববািতকে নীলগিরি বলে। তাহাই কোন কোন সংস্থানে বৈতরণীতীর হইতে দেখা যায়।

げ げぬ