পাতা:বঙ্গদর্শন-চতুর্থ খণ্ড.djvu/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ar৯৭,৯২, ১২৮২) শকুন্তলা, মিরমা এবং দেসদিমোন । । а ফুটাইয়া হাসিল—সে আলাপে তত গৌরব নাই—মানবচরিত্রের কুলপ্রাস্ত পৰ্য্যন্ত প্রঘাতী সেরূপ টল টল চঞ্চল বীচিমালা তাহার হৃদয়মধ্যে লক্ষিত হয় না । যাহ। বলিয়াছি, তাই—কেবল, ছি ছি, কেবল যাই যাই, কেবল লুকাচুরি —একটু একটু চাতুরী আছে—যথা * অদ্ধপধে স্বমরিআ এদস্ম হখত্ত্বংসিণো মিণাল বলঅস্ম কদে পড়িণিবুত্তন্ধি।” ইত্যাদি। একটু অগ্ৰগামিণীত্ব আছে,যথা দুষ্মন্তের মুখে , “নহু কমলন্ত মধুকর সন্তুষ্যতি গন্ধ মাত্রেণ ” এই কথা শুনিয়া শকুন্তলার জিজ্ঞাসা,“অসন্তোসে উণ কিং করেদি?” –এই সকল ছাড়া আর বড় কিছুই নাই। ইহা কবির দোষ নহে—বরং দুষ্মন্তের চরিত্র গৌরবে: ক্ষুদ্রা শকুন্তলা এখানে ঢাকা পড়িয়া গিয়াছে। ফর্দিনন্দ বা রোমিও ক্ষুদ্র ব্যক্তি, নায়িকার প্রায় সমবয়স্ক, প্রায় সমযোগ্য, অকৃতকীৰ্ত্তি—অপ্রথিতযশা: ; কিন্তু সসীগর। পৃথিবীপতি মহেন্দ্র সখ দুষ্মন্তের কাছে শকুন্তলা কে? দুষ্মন্ত মহাবৃক্ষের বৃহচ্ছায়া এখানে শকুন্তলা কলিকাকে ঢাকিয়া কবির গুণ । ফেলিয়াছে—সে ভাল করিয়া মুখ তুলিয়৷ ফুটিতে পারিতেছে না। এ প্রণয় সম্ভাষণ প্রণয় সম্ভাষণ নহে—রাজক্ৰীড়া, পৃথিবীপতি কুঞ্জবনে বসিয়া সাধ করিয়া প্রেম করা রূপ খেলা খেলিতে বসিয়াছেন; মত্তমাতঙ্গের ন্যায় শকুন্তলা-নলিনী কোরককে গুণ্ডে তুলিয়া, বনক্রীড়ার ண் সাধ মিটাইতেছেন, নলিনী তাতে ফুটিবে । কি ? - “ . . . . . - - - : যিনি এ কথাগুলি স্মরণ ন রাখিবেন । তিনি শকুন্তলা চরিত্র বুঝিতে পারবেন না; যে জলনিষেকে মিরদ ও জুলিয়েট । ফুটিল, সে জলনিষেকে শকুন্তলা ফুটিল । না; প্রণয়াসক্ত শকুন্তলায় বালিকার চাঞ্চল্য বালিকার ভয়, বালিকার লজ্জা দেখিলাম; কিন্তু রমণীর গাম্ভীৰ্য্য, রমণীর স্নেহ কই ? ইহার কারণ কেহ কেহ বলিবেন, : লোকাচারের ভিন্নতা; দেশভেদ। বস্তুত: | তাহা নহে। দেশী কুলবধু বলিয়া শকুন্তলা লজ্জায় ভাঙ্গিয়া পড়িল,—আর মিরন্দা বা । জুলিয়েট বেহায়া বিলাতী মেয়ে বলিয়া মনের গ্রন্থি খুলিয়া দিল, এমত নহে। ক্ষুদ্রাশয় সমালোচকেরাই বুঝেন মা যে, দেশভেদে বা কালভেদে কেবল বাহভেদ হয় মাত্র ; মনুষ্য হৃদয় সকল দে । শেই সকল কালেই ভিতরে মনুষ্যহৃদয়ই থাকে। বরং বলিতে গেলে—তিন জনের মধ্যে শকুন্তলাকেই বেহায় বলিতে | হয় “ অসন্তোসে উণ কিং করেদি?” : তাহার প্রমাণ। যে শকুন্তলা, ইহার কয় মাস পরে, পৌরবের সভাতলে দাড়াইয়া ; ছদ্মন্তকে তিরস্কার করিয়া বলিয়াছিল । “ অনাৰ্য্য। আপন হৃদয়ের অনুমানে সকলকে দেখ?”—সে শকুন্তলা যে, লতা মণ্ডপে বালিকাই রহিল, তাহার কারণ কুলকন্যাস্থলভ লজ্জা নহে। তাহার কারণ –ছুষ্মন্তের চরিত্রের বিস্তার। যখন শকু স্তল। সভাতলে পরিত্যক্ত,তখন শকুন্তলা |