পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

مےےلیےکےلیےے (۹۶۰ و ۲ ماه به হিন্দুদিগের নাট্যাভিনয় । Ꮌ © Ꮔ বটে, কিন্তু এপর্য্যন্ত সুসভ্যগণের ন্যায় রুচির পরিবর্ত্ত না হওয়ায় অত্যন্ত পরিতাপিত হইতেছি। যে আর্য্যজাতি উদাত্ত, অনুদাত্ত, ও স্বরিত স্বরে সামবেদ গান করিয়া কাননস্থ পশু পক্ষীকেও মোহিত করিতেন, যাহারা সঙ্গীত শাস্ত্রে অতি প্রবীণ, যাহাদের সুধাসম কাব্যরস দিগ্দিগন্তবাসী মানবেরা পান করিয়া আপনাকে কৃতাৰ্থ বোধ করিতেছে যে আর্য্যজাতির নাট্য প্রথা চিরপ্রসিদ্ধ, অদ্য সেই আর্য্যজাতির অগ্নিস্ফুলিঙ্গসম তেজোরাশি, যবন গণের পদবিমৰ্দ্দনে এককালে নিৰ্ব্বাপিত হইয়াছে। আর সে তেজ নাই, সে বুদ্ধি নাই, সে বিদ্যা. নাই, “ কাজেই আমরা দুৰ্ব্বল, ক্ষীণ, "কুখ্যাত জগতে” অথবা “—সিংহের ঔরসে শৃগাল কি পাপে মোরা—" কাজেই আমাদিগের রুচির পরিবর্ত্ত হইতেছে। মহাকবি কালিদাসের শকুন্তলার নাট্যাভিনয় পরিবর্ত্তে, যাত্রার কুৎসিত আমোদে অনুরক্ত হইয়াছি । একি সাধারণ পরিতাপের বিষয়! কোথা অভিনয় কালে ভবভূতির উত্তরচরিতে বৈদেহীবিলাপ শ্ৰবণে হৃদয় বিলোড়িত হইবে, মালতীমাধবে নির্ঝরমালায় সুশোভিত পৰ্ব্বতের বিচিত্র চিত্ৰপট সন্নিকটে চিরযোগিনী সৌদামিনীকে দেখিয়া মনোমধ্যে শান্তরসোদয় হইবে, এবং কোথা মুদ্রারাক্ষসে নীতিশাস্ত্রবেত্তা চাণক্যের বুদ্ধি কৌশলের একশেষ উদাহরণ পাইয়া আধুনিক মেকায়ভেলীকেও তুচ্ছবোধ হইবে, তাহা না হইয়া গোবিন্দ অধিকারীর যাত্রায় মানভঞ্জন গানে অনুপ্রাসচ্ছটা এবং অর্থশূন্য মধুকাইনের গীত শ্রবণে, রামযাত্রায় শীর্ণকায় “কাগজের মুখসে” মুখাবৃত রাবণের বীরত্ব প্রকাশ এবং কালুয়া ভুলুয়ার কুৎসিত মুখভঙ্গী দর্শনে, বিরক্ত না হইয়া আনন্দ জনক বোধ করিয়া থাকি । বঙ্গ সমাজের হিতচিকীর্ষু ব্যক্তি এ সকল দর্শনে যে কি পৰ্য্যস্ত দুঃখিত হয়েন তাহা বর্ণনাতীত। যাত্রার ন্যায় কুৎসিত আমোদে মনের ভাব কলুষিত হইয়া যায়। কৃতবিদ্য ব্যক্তিগণের এ সকল আমোদ সন্দর্শন করা কখনই উচিত নহে । আজি কালি আমাদিগের জাতীয় বিশুদ্ধ আমোদের হীনাবস্থা সন্দর্শনে অনেক কৃতবিদ্য বাঙ্গালীগণ ইংরাজী থিয়টর বা “ অপেরায়” গমন করির৷ থাকেন। কিন্তু আহ্লাদের বিষয় সম্প্রতি একটা জাতীয় নাট্যশালা স্থাপিত হওয়াতে আমাদিগের মনঃকষ্ট অনেক নিবারণ হইয়াছে, এক্ষণে ইহার শৈশবাবস্থা এজন্য কাৰ্য্য প্রণালীর দিন২ ঔৎকর্ষ সাধিত হইতে পারে এবং তাহা হইলেই কবির এই খেদগান সফল হইবে— “অলীক কুনাট্য রঙ্গে মজে লোক রাঢ়ে বঙ্গে, নিরখিয়া প্রাণে নাহি সয় । সুধারস অনাদরে, বিষবারি পান করে তাহে হয় তনু মন: ক্ষয়।