পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

›ዓመ অনস্তর জাতিভেদ নিয়মের প্রতি অমুধাবন করিলে দেখা যায়, যে পূৰ্ব্বকালেও হিন্দু সমাজে আস্থর বিবাহ নামে কন্যা বিক্রয় প্রথা প্রচলিত ছিল । তাহা উল্লিখিত কস্তা বিক্রয় প্রথার সহিত এক না হউক স্থল বিষয়ে উহার অনুরূপ বটে৭২ । কস্তাদান এত ব্যয়সাধ্য তাহা পরিষ্কার রূপে বুঝাযায় না। যদি বরযাত্ৰগণের জন্ত বাহুল্য ব্যয় প্রয়োজন হয়, তবে উহাদিগের এতাদৃশ প্রভাবের হেতু কি? বরপক্ষে বিবাহ কাজ অপেক্ষাকৃত লঘু না হইলে, তাহাদিগের প্রাচুর্ভাব বহুকালস্থায়ী হইতে পারে না । অতএব পুরুষের বিবাহের কোন অতিরিক্ত সুবিধা থাকিবেক। যদি কোন পশ্চিমাঞ্চলবাসী ইহার নিগুঢ় কারণ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হয়েন, তাহা হইলে অবশুই কোন২ গৃঢ় কথা প্রকাশ হইবেক । আমরা এ সকল বি এইবিষয়ে লেখকের কল্পন। প্রচলিত মত হইতে বিভিন্ন বলিয়া, ইহার সংক্ষেপ বিবরণ দেওয়া আবশ্যক। “অবোধবন্ধু’ নামক মাসিক পত্রিকাতে এতদ্বিষয়ে একটি প্রবুদ্ধ আছে । এক্ষণকার প্রচলিত বিবাঙ্গের নাম ব্রাহ্ম বিবাহ । তাহাতে সম্প্রদান এবং কুশণ্ডিক নামক দুটি পৃথুক প্রক্রিয়া আছে । লেখকের কল্পনা এই যে প্রাচীন অসুর বিবাহে কেবল কুশণ্ডিকা ছিল সম্প্রদান ছিল না, কুশণ্ডিকাতে কস্তাকৰ্ত্তার কোন সংশ্ৰব নাই। কুলকভট্ট আম্বর বিবাহ বিষয়ক মহুবচনের যে রূপ ব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহতে উক্ত বিবাহে সম্প্রদান প্রক্রিয়ার অভাব অনুমিত হয়। মহাভারতের দুই এক স্থলে আস্থর বিবাহের যে লক্ষণ দৃষ্ট হয়, তাহতেও ঐ অনুমান বলবৎ হয় । অীর মন্ত্রর ৯অধ্যায় ১৯৬,১৯৭ বচ জাতিভেদ। , ( बच॥*म, क्षtः, *९७० ।। শাস্ত্রকারের ইহুকে অতিশয় জঘন্ত বলিয়া ব্যক্ত করিয়াছেন। আস্বরবিবাহের যতই হেতু থাকুক না, তন্মধ্যে পাত্র সং. খ্যার আধিক্যকে অবশুই গণনা করিতে হুইবেক । নতুবা একপক্ষে কেন পথ দান স্বীকার করিবে ? কিন্তু যদি কোন শ্রেণিতে পাত্র সংখ্যা অধিক হয় তরি ষয়ে বিদেশীয় লেখকদিগের প্রতি নির্ভর করিতে ইচ্ছা করি না । কিন্তু মেরিংকৃত জাতিবিষয়ক পুস্তকে দেখিতে পাওয়া যায় যে রাজপুত্রদিগের মধ্যে এক সম্প্রদায় নারী অভাবে রাজভড় নামক এক নিকৃষ্ট জাতির কন্যা ক্রয় বা পণদান পূৰ্ব্বক বিবাহ করে। ইহাদিগের মধ্যে কন্যাহত্যা দোষ বিরল। অন্ত এক সম্প্রদায় উচ্চ শ্রেণি ব্যতীত কন্যাদান’ করিতে পারে না এবং তাহাদিগের মধ্যেই কন্যা হত্যা প্রবল। অতএব ইহা আমাদিগের কল্পনারই পো ষক হইতেছে । মুসারে আস্থরবিবাহে লন্ধ যৌতুক ধন, | নারীর সন্তানাভাবে, পিতামাতা অধিকার করেন। ব্রাহ্মাদি চারি প্রকার বিবাহে, তাদৃশ ধন স্বামী প্রাপ্ত হয়েন। ইদানীন্তন যে সকল বিবাহকে “ কস্তাবিক্রয়” নামে আমুর বিবাহ বলিয়া সন্দেহ হইতেছে তাহাতে সম্প্রদান ও কুশণ্ডিকা উভয়ই বর্তমান; এবং লব্ধ যৌতুক ধন বিষয়ে অন্ত বিবাহের সহিত কোন প্রভেদ নাই এই জন্ত আমরা মনে করি যে “কষ্ঠা বিক্ৰয়” স্থলে ব্রাহ্ম মতেই বিবাহ হয় বটে তবে পণ গ্রহণটি শাস্ত্রনিষিদ্ধ ক্রিয়া ! আমাদিগের বিবেচনাতে প্রাচীন আল্পর বিবাহ এক্ষণে ভদ্র সমাজে প্রচলিত নাই, কেবল তাহার প্রধান লক্ষণ পণ গ্রহণ রূপান্তরে পুনরায় উপস্থিত হইয়াছে।