পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२३ (बजकर्णम, ৰৈঃ, ०९*** l বিীর লোক সেখানে কেহ ছিল নাপুর রন্দরের বয়স বা মনের ভাব সেরূপ নহে । পুরনার মওপবিলম্বিত লতা হইতে একটি পুষ্প ভাঙ্গিয়া লইয়া তাহ ছিন্ন করিতে করিতে বলিলেন, “আমি আর ডাকিব না। আমি দুর দেশে চলিলাম। তাই তোমাকে বলিয়া যাইতে আসিয়াছি।” - হি। দুর দেশে ? কোথায় ? পু। সিংহলে । হি। সিংহলে ! সে কি ? কেন সিংহলে যাইবে ? পু। “কেন যাইব? আমরা শ্রেষ্ঠী— বাণিজ্যার্থ যাইব ।” বলিতে পুরন্দরের চক্ষু ছল২ করিয়া আসিল । হিরন্ময়ী বিমনা হইলেন। কোন কথা কহিলেন না, অনিমেষ লোচনে সম্মুখবর্তী সাগর তরঙ্গে স্বৰ্য্য কিরণের ক্রীড়া দেখিতে লাগিলেন। প্রাতঃকাল মৃদ্ধ পবন বহিতেছে,—মৃদ্ধ পবনোখিত অতুঙ্গ তরঙ্গে বালারুণ রশ্মি আরোহণ করিয়া কঁাপিতেছে—সাগর জলে তাহার অনন্ত উজ্জল রেখা প্রসারিত হইয়াছে— শু্যামাঙ্গীর অঙ্গে রজতালঙ্কারবৎ ফেন নিচয় শোভিতেছে, তীরে জলচর পক্ষীকুল শ্বেত রেখা সাজাইয়া বেড়াইতেছে। হিরন্ময়ী সব দেখিলেন,—নীলজল দেখিলেন, তরঙ্গ শিরে ফেনমালা দেখিলেন, স্বৰ্য্য রশ্মির ক্রীড়া দেখিলেন—দূরবত্তী অবিপোত দেখিলেন, নীলাম্বরে কৃষ্ণবিন্দু বৎ একটি পক্ষী উড়িতেছে তাহাও দে খিলেন। শেষে ভূতলশায়ী একটি শুষ্ক কুমুমের প্রতি দৃষ্টি করিতেই কছিলেন, “তুমি কেন যাবে-অম্লান্তবার তোমার পিতা যাইয়া থাকেন।” পুরন্দর বলিল, “আমার পিতা বৃদ্ধ হইতেছেন। আমার এখন অর্থোপার্জনের সময় হইয়াছে। আমি পিতার অনুমতি পাইয়াছি।” হিরন্ময়ী লতামগুপের কাষ্ঠে ললাট রক্ষা করিলেন । পুরন্দর দেখিলেন র্তাহার ললাট কুঞ্চিত হইতেছে, অধর দুরিত হইতেছে, নাসিকার রন্ধু স্ফীত হইতেছে। দেখিলেন যে হিরন্ময়ী কাদিয়া ফেলি লেন । r t পুরন্দর মুখ ফিরাইলেন । তিনিও একবার আকাশ, পৃথিবী, নগর, সমুদ্র সকল দেখিলেন, কিন্তু কিছুতেই রহিল না— চক্ষের জল-গও বহিয়া পড়িল । পুরন্দর চক্ষু মুছিয়া বলিলেন, “এই কথা বলিবার জন্ত আসিয়াছি । যে দিন তোমার পিতা বলিলেন কিছুতেই আমার সঙ্গে তোমার বিবাহ দিবেন না, সেই দিন হইতেই আমি সিংহলে যাইবারকল্পনা স্থির করিয়াছিলাম। ইচ্ছা আছে যে সিংহল হইতে ফিরিৰ না । যদি কখন তোমায় ভুলিতে পারি তবেই ফিরিব । * আমি অধিক কথাবলিতেজানি না, তুমিও অধিক কথা বুঝিতে পরিবে না । ইহা বুঝিতে পরিবে, ষে আমার পক্ষে জগৎ সংসার এক দিকে, তুমি একদিকে হইল, জগৎ তোমার তুল্যনহে ।” এই বলিয়া পুরস্পর হঠাৎ পশ্চাৎ করিয়া |