পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ পাদচারণ করিয়া অন্ত একটা বৃক্ষের পাতা , স্থিড়িলেন । অশ্রুবেগ কিঞ্চিৎ শমিত হইলে, ফিরিয়া আসিয়া আবার, কহিলেন, “তুমি আমায়ভালবাসতাহ জানি। কিন্তু যবে হউক তুমি অন্তেরপত্নীহইবে। অতএব তুমি আর আমায় মনে রাখিও না। তোমার সঙ্গে যেন এ জন্মে আমার আর সাক্ষাৎ না হয় ।” এই বলিয়া পুরন্দর বেগে প্রস্থান করিলেন । হিরন্ময়ী বসিয়া কাদিতে লাগিলেন । রোদন সম্বরণ করিয়া একবার ভাবিলেন, “আমি যদি আজি মরি, তবে কি পুরন্দর সিংহলে যাইতে পারে? আমি কেন গলায় লতা বাধিয়া মরি না,—কিম্বা সমুদ্রে বাপ দিই না?” আবার ভাবিলেন, “আমি যদি মরিলাম, তবে পুরন্দর সিংহলে যাক না যাক তাতে আমার কি ?” এই ভাবিয়া হিরন্ময়ী আবার কঁদিতে বসিল । দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ । কেন যে ধনদাস বলিয়াছিলেন যে “আমি পুরন্দরের সঙ্গে হিরণের বিবাহ দিব | না” তাহ কেহ জানিত না । তিনি তাহ কাহারও সাক্ষাতে প্রকাশ করেন নাই । জিজ্ঞাসা করিলে বলিতেন “বিশেষ কারণ আছে।” হিরন্ময়ীর অন্তান্ত অনেক সম্বন্ধ আসিল—কিন্তু ধনদাস কোনসম্বন্ধেই সন্মত হইলেন না। বিবাহের কথা মাত্রে কর্ণ *ांड न । “ कछ रफ़ इईल,” শুনিতেন না। কেবল বলিতেন, “গুরুদেব আসুন—তিনি আসিলে এ কথা হইবে।” - পুরন্দর সিংহলে গেলেন। র্তাহার সিংহল মাত্রার পর দুই বৎসর এইরূপে গেল। পুরন্দর ফিরিলেন না । হিরন্ময়ীর কোন সম্বন্ধ হইল না । হিরণু অষ্টাদশবর্ষীয় হইয়া উদ্যানমধ্যস্থ নবপল্লবিত চুতবৃক্ষের স্তায় ধনদাসের গৃহে শোভা করিতে লাগিল । হিরন্ময়ী ইহাতে দুখিঃত হয়েন নাই । বিবাহের কথা হইলে পুরন্দরকে মনে পড়িত; তাহার সেই ফুল্ল কুসুম মালা মণ্ডিত, কুঞ্চিত কৃষ্ণ কুন্তলাবলিবেষ্টিত, সহান্ত মুখমণ্ডল মনে পড়িত; তাহার সেই দ্বিরদশুভ্রস্কন্ধ দেশে স্বর্ণ পুষ্প শোভিত নীল উত্তরীয় মনে পড়িত; পদ্মহস্তে হিরকালুরীয় গুলি মনে পড়িত; হিরন্ময়ী কাদিতেন । পিতার আজ্ঞা হইলে যাহাকে তাহাকে বিবাহ করিতে হইত। কিন্তুসে জীবন্মত্যুবৎ হইত। তবে তাহার বিক হোদ্যোগে পিতাকে অপ্রবৃত্ত দেখিয়া, আহলাদিত হউন বানা হউন,বিস্মিত হইতেন । লোকে এত বয়স অবধি কস্তা অবিবাহিত রাখে না-রাখিলেও তাহার সম্বন্ধ করে। র্তাহার পিতাসে কথায় কাণপৰ্য্যন্ত দেন না কেন ? এক দিন অকস্মাৎ এ বিষয়ের কিছু সন্ধান পাইলেন। ধনদাস বাণিজ্য ক্রমে চীন দেশে নিৰ্ম্মিত একটি বিচিত্র কোঁটা পাইয়াছিলেন ।