পাতা:বঙ্গদর্শন-দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথমতঃ “কথায় হীরার ধার।” কবি ভারত কথার রাজা । নানা ভাবের কথা নানা রসের কথা তাহারু গ্রন্থ কলাপ মধ্যে আছে। তিনি আপনি বলিয়াছেন; “অন্নদা কহিল বাছা না করিহ ভয়, আমার কৃপার বলে বোবা কথা কয়, গ্রন্থ আরম্ভিয়া মোর কৃপা সাক্ষী পাবে, যে কবে সে হবে গীত আনন্দে মাতাবে; এত বলি অমৃতার মুখে তুলি দিলা, সেই বলে এই গীত ভারত রচিলা।” ইহাতে র্তাহার বলা হইল যে র্তাহার দৈবশক্তি ছিল। আবার বলিয়াছেন, • “মানসিংহ পাতশায় হইল যে বাণী, উচিত যে আরবী পারসী হিন্দুস্থানী; পড়িয়াছি সেই মত বৰ্ণিবারে পারি, কিন্তু সে সকল লোকে বুঝিবারে ভারি, না রবে প্রসাদ গুণ না হবে রসাল, অতএব কহি ভাষা যাবনী মিশাল।” স্বতরাং দৈবশক্তি থাকুক বা না থাকুক তাহার পড়া শুনা বিস্তয় ছিল বলিয়া বর্ণনা করিতে পারিতেন । ইহাতেই श्रुबि, ऎषः, s२v* ) 鱼 লিফোটা মন্ত্র তন্ত্র জামে কতগুলি, যথেষ্টণ আর অন্নদাদেবী যে বলিয়াছেন চেন্নড় ভুলায়ে খায় কত জানে ঠুলি, তাহার কৃপার সাক্ষী আছে, সে কথাও বাতাসে পাতিয়া ফঁাদ কদল ভেজায়, যথার্থ, তাহার অমৃতারের বলে অন্নদামঙ্গলে পড়সী না থাকে কাছে কন্দলের দায়, কথায় কথায় খই ফুটিতেছে। যে সংস্কৃত মন মন্দ গতি, ঘন ঘন হাত নাড়া, ছন্দ গুলি বাঙ্গালায় আনা যাইতে পারে তুলিতে বৈকালে স্কুল আইল সেই পাড়;" | বাকারসরাজ সে গুলি দিয়াছেন। ভারত পুরাণ তন্ত্র డా সহিত কবি ভারতের তুলনা স্বষ্টি বিবরণ দেখাইতেছেন, কাশীখণ্ড এক্ষণে মালিনী স্বভাবের সহিত এই হইতে অন্নপূর্ণার অন্নদানের চিত্র প্রদর্শন করিতেছেন, রামায়ণ মহাভারত ভাগবত শুনাইতেছেন, পশু পক্ষী, বৃক্ষ লতা, মৎস্ত মক্ষী দংশ, অন্ন ব্যঞ্জন প্রভৃতির সুদীর্ঘ তালিকা দিতেছেন। অযোধ্যা বর্ণন করিতেছেন, দিল্লি বৰ্দ্ধমান যশোহর বর্ণনা করিতেছেন, গঙ্গার মাহাত্ম্য, জগন্নাথের মাহাত্ম্য বলিতেছেন। . বারমাস, বায়ান্নপীঠ, অষ্ট নায়িকা, প্রভৃতি | বর্ণন করিতেছেন। এত বৈচিত্র্য কিসের? কথার, ভারত কথায় হীরার ধার। তিনি বাগবিশারদ। শব্দ সমুদ্রের মন্থনদও র্তাহার নিজ হস্তে। বাগযুদ্ধে বঙ্গীয় সকল কবিকেই তাহার निकल्ले পরাস্ত হইতে হয়। কখনই তাহার মুখের কাছে প্রতিদ্বন্দ্বীটেকিতে পারে না; পড়সী কাছে থাকিতে পারে না। ’ হীরার দাত ছোলা ইত্যাদি অঙ্গ পরিস্কৃতির লক্ষণ মাত্র। ভারতচন্দ্র রায়ের কাব্য সকলের পরিভৃতি প্রসিদ্ধ। ভাষা পরিষ্কৃত ও মার্জিত; ছন্দঃ পরিষ্কৃত ও মার্জিত; রচনা পরিষ্কৃত ও মার্জিত।