পাতা:বঙ্গদর্শন-পঞ্চম খন্ড.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬২ অতি অল্প বিবেচন! আবশ্যক, তাহাও প্রায় কেহ বিবেচনা করিয়া করে না ; অথচ এ সকল কার্য্যে কোন বলবান নিকৃষ্ট বৃত্তির উত্তেজনা নাই। তবে, যেখানে নিকৃষ্টবৃত্তির উত্তেজন আছে, সেখানে যে লোকে বিবেচনা কবিয়! কাৰ্য্য করিতে পরিবে, তাহা কিরূপে বিশ্বাস করিব ? নৈতিক আজ্ঞার ধৰ্ম্মশাসনে হতবিশ্বাস হইয়া, প্রাকৃতিক মূল নিৰ্ব্বাচন করিয়া তদনুসারে কার্য্য করিতে পাfরবে, ইহা কেমনে বিশ্বাস করিব ? নীতিস্থত্রের প্রাকৃতিক মূল নিৰ্ব্বাচন করিয়৷ কাৰ্য্য করিতে পারিবার পূৰ্ব্বে অনেক কথা বুঝা আবশ্যক। এই কাৰ্য্যের প্রকৃতি ভাল, এই কাৰ্য্যের প্রকৃতি মন্দ, ইহা পরিষ্কাবরূপে বুঝিতে হইলে কেবল তত্তৎকার্য্যের অব্যবহিত ফল পর্যালোচনা করিলে চলিবে না, গৌণ ফল সকল ও দেখিতে হইবে । দেখিতে হুইবে, ইহাতে নিজের লাভা লাভ কি ?—অন্যের লাভালাভ কি ?— সমাজেয় লাভালাভ কি ? অনেক কাৰ্য্য আছে, আশু অনিষ্ট করে না কিন্তু পরিণামে সৰ্ব্বনাশ করে। অনেক কার্য্য অাছে, নিজের লাভ হয় কিন্তু পরের সৰ্ব্বনাশ হয়। এরূপ অবস্থায় অভ্রান্ত বিচার কয়জন করিতে প্লারে ? এত বিচার করিয়া কে কাৰ্য্য করিতে পারে ? এত বিচারই বা কয়জন করিতে পারে ? অ}রার বিপদের উপর বিপদ, যাহার। ফলাফল বুঝিতে পারেন, তাহারাই বা বঙ্গদর্শন । ( थांद० তদনুসারে কার্য্য করিতে পারেন কি ? অতি পণ্ডিত, অতি বড় জ্ঞানী অথচ জানিয়া শুনিয়া, বুঝিয়া মুঝিয়া শত শত অনিষ্টকর কার্য্য করেন ; তাহার ফলভোগ করেন ; যতদিন কষ্টভোগের স্মৃতি মনোমধ্যে জাজল্যমান থাকে ততদিন হয় ত নিবৃত্ত থাকেন; আবার যেমন কালের ছায়ান্ধকার সেই স্মৃতির উপর পড়িয়া তাহাকে অপরিষ্কার করে, অমনি যে সেই । আসল কথা, মনুষোর কার্য্য, মনুষ্যের বিশ্বাস, অধিকাংশ স্থলেই বিবেচনা দ্বার। স্থিরীকৃত হয় না ; অনুভূতি দ্বারা স্থিরী: কৃত হয়। অতএব বিবেচনাশক্তি ধৰ্ম্মের সিংহাসনে বসিবার উপযুক্ত নহে। এ উপযুক্ততা বিবেচনাশক্তির যখন হইবে, সে দিন এখনও আসে নাই, আসিতে বিলম্ব আছে। • দ্বিতীয়, রাজবিধি । রাজবিধি যে ধৰ্ম্মের স্থলাভিব্যিক্ত হইতে পারে না, তাহার একটা কারণ এই যে, রাজবিধি কার্যসমূৎপাদিকা শক্তি নহে । রাজবিধির অধিকার নিবৃত্তির দিকে, প্রবৃত্তির দিকে নহে। এই এই কাৰ্য্য করিও না, রাজবিধি কেবল ইহাই বলে,—তাহাও স্পষ্টতঃ বলে না, পাকতঃ বলে। এই কার্য্য কর,এমন কথা রাজবিধি বলে না । পরের কুংসা করিও না, পরের গারে হাত দিও না, পরদ্রব্য আত্মসাৎ করিও না, এই সকল রাজবিধির আজ্ঞা। দুঃখার্তকে সাস্বনা কর, ক্ষুধাৰ্ত্তকে অন্নদান