পাতা:বঙ্গদর্শন-প্রথম খণ্ড.djvu/৫০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

------- یا ةِ » রোদনের অতীত। এখন রুদ্ধ শোকপ্রবাহ বেগে বহিল। নগেন্দ্র শ্ৰীশচন্দ্রের স্বন্ধে মুখ রাখিয়া বালকের মত বহুক্ষণ রোদন করিলেন । ইহাতে যন্ত্রণার অনেক উপশম হইল। যে শোকের রোদন নাই, সেয়মের দূত । নগেন্দ্র কিছু শান্ত হইলে শ্ৰীশচন্দ্র বলিলেন, “এ সব কথায় আজ আর আবশ্যক নাই ।” নগেন্দ্র বলিলেন, আর “বলিবেই বা কি ? অবশিষ্ট যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা ত চক্ষে দেখিতে পাইতেছি। বহি হইতে তিনি একাকিনী পদব্রজে মধুপুরে আসিয়াছিলেন। পথ ইটার পরিশ্রমে, অনাহারে, রৌদ্র বৃষ্টিতে, নিরাশ্রয়ে, আর মনের ক্লেশে সূৰ্য্যমুখী রোগগ্রস্ত হইয়া মরিকার জন্য পথে পড়িয়ছিলেন।” শ্ৰীশচন্দ্র নীরব হইয়া রহিলেন । পরে কহিলেন, “ভাই, বৃথা কেন আর সে কথা ভাব ? তোমার দোষ কিছুই নাই। তুমি তার অমতে বা অবাধ্য হইয়া কিছুই কর নাই । যাহা আত্মদোষে ঘটে নাই, তার জন্যে অনুতাপ বুদ্ধিমানে করে না ।” নগেন্দ্রনাথ বুঝিলেন না। তিনি জানিতেন, তারই সকল দোষ ; তিনি কেন বিষবৃক্ষের বীজ হৃদয় হইতে উচ্ছিন্ন 3.করেন নাই ? - বিষবৃক্ষ। .বসাইয়া রাখিয়া গেল । (বঙ্গদর্শন, মাঃ, ১৯৭৯ ) চত্বাবিংশত্তম পরিচ্ছেদ । . হীরার বিষবৃক্ষের ফল । হীয়া মহীরত্ব কপর্দকের বিনিময়ে বিক্রয় করিল। ধৰ্ম্ম চিরকষ্টে রক্ষিত হয়, কিন্তু একদিনের অসাবধানতায় বিনষ্ট হয়। হীরার তাহাই হইল ; যে ধনের লোভে হীরা এই মহারত্ব বিক্রয় করিল, সে এককড়া কানা কড়ি । কেননা দেবে: ন্দ্রের প্রেম, বস্তার জলের মত ; যেমন | পঙ্কিল, তেমনি ক্ষণিক । , তিন দিনে বস্তার জল সরিয়া গেল, হীরাকে কাদায় যেমন কোন২ কৃপণ অথচ যশোলিপ ব্যক্তি বহু কাল । বধি প্রাণপণে সঞ্চিতাৰ্থ রক্ষা করিয়া, পুত্ৰোদ্বাহ বা অন্য উৎসব উপলক্ষে একদিনের সুখের জন্ত ব্যয় করিয়া ফেলে, হীরা তেমনি এত দিন যত্নে ধৰ্ম্ম রক্ষা | করিয়া, একদিনের স্বগের জন্য তাহ নষ্ট ; করিয়া উৎস্থাটার্থ কৃপণের স্যায় চিরামুশোচনার পথে দণ্ডায়মান হইল । ক্রীড়াশীল বালক কর্তৃক অল্পোপভুক্ত অপক চুত ফলের স্যায়, হীরা দেবেন্দ্র কর্তৃক পরিত্যক্ত হইলে, প্রথমে হৃদয়ে দারুণ ব্যথা পাইল"। কিন্তু কেবল পরিত্যক্ত নহে—সে দেবেঁন্দ্রের দ্বারা যেরূপ অপমানিত ও মৰ্ম্ম পীড়িত হইয়াছিল, তাহা । স্ত্রীলোকমধ্যে অতি অধমারও অসহ । যখন, শেষ সাক্ষাৎ দিবসে, হীরা