०२७ • আত্মার কল্পনা করিতে বলি না। বহুকাল পূর্বে প্রচারিত সাংখ্য দর্শনে, এই আপত্তিও অবিবেচিত ছিল না । সাংখ্য দর্শনে মনোবুক্তি সকল আত্মা হইতে ভিন্ন । মন, বুদ্ধি, ”মহৎ” এ সকল আধুনিক মনস্তত্ববিদগণের মতের ন্যায় প্রাকৃতিক পদার্থ ( Matter ) বলিয়া সাংখ্যে গণ্য হইয়াছে। কিন্তু পুরুষ এ সকল হইতে ভিন্ন । শরীরাদি বাতিরিক্ত পুরুষ । কিন্তু দুঃখ ত শারীরাদিক। শরীরাদিতে যে দুঃখের কারণ নাই, এমন দুঃখ নাই । যাহাকে মানসিক দুঃখ বলি, বাহ পদার্থই তাহার মূল। আমার বাক্যে তুমি অপমানিত হইলে ; আমার বাক্য প্রাকৃতিক পদার্থ। তাছা শ্রবণেন্দ্রিয়ের দ্বারা তুমি গ্রহণ করিলে, তাহাতে তোমার দুঃখ । অতএব প্রকৃতি ভিন্ন কোন দুঃখ নাই। কিন্তু প্রকৃতি ঘটত দুঃখ পুরুষে বৰ্ত্তে কেন ? “অসঙ্গোয়পূরুষঃ।” পুরুষ এক, কাহারও সংসর্গ বিশিষ্ট নহে। (১ অধ্যায় ১৫ সুত্র) অবস্থাদি, সকল শরীরের, আত্মার নহে। (ঐ ১৪ সূত্র ) “ন বাহান্তরয়োরূপরজোপরঞ্জক ভাবোপি দেশব্যবধানাৎশ্রম্বস্ত পাটলিপুত্রস্তয়োরিব।” বাহ এবং আন্তরিকের মধ্যে উপরজ্য এবং উপরঞ্জক ভূবি নাই, কেননা তাহ পরস্পর সংলগ্ন নহে ; দেশ ব্যবধান বিশিষ্ট । যেমন ংখ্যদর্শন । | {षत्रध*ीन, मां: * ९१> 1) এক জন পাটলীপুত্র নগরে থাকে, আর এক জন শ্র’ক্স নগরে থাকে, ইহাদিগের পরস্পরের ব্যবধান তদ্রুপ। তবে পুরুষের দুঃখ কেন ? প্রকৃতির সহিত সংযোগই পুরুষের দুঃখের কারণ । বাছে আন্তরিকে, দেশ ব্যবধান আছে বটে, কিন্তু কোন প্রকার ংযোগ নাই, এমত নহে। যেমন স্ফাটিক পাত্রের নিকট জবা কুসুম রাখিলে, পাত্র পুষ্পের বর্ণবিশিষ্ট হয় বলিয়া, পুষ্প এবং পাত্রে এক প্রকার সংযোগ আছে বলা যায়, এ সেই রূপ সংযোগ । পুষ্প এবং পাত্র মধ্যে দেশ ব্যবধান থাকিলেও পাত্রের বর্ণ বিকৃত হইতে পারে, ইহাও সেই রূপ। এ সংযোগ নিত্য নহে, দেখ। যাইতেছে । সুতরাং তাহার উচ্ছেদ হইতে পারে । সেই সংযোগ উচ্ছেদ হইলেষ্ট, দুঃখের কারণ অপনীত হইল । অতএব এই সংযোগের উচ্ছিত্তিই দুঃখ নিবারণের উপায় । সুতরাং তাহাই পুরুষার্থ। “ষদ্ব তদ্ব। তদুচ্ছিত্তিঃ পুরুষাৰ্থ স্তদৃচ্ছিত্তিঃ পুরুষাৰ্থঃ ; (৬৭০) সাংখ্যের মত এই । উনবিংশ শতাব্দীতে ইহার যথার্থ নিরূপণ জন্য কষ্ট পাইতে হয় না। তবে, ইহা বক্তব্য যে, যদি আত্মা শরীর হইতে পৃথক হয়, যদি আত্মাই সুখ দুঃখভোগী হয়, যদি আত্মা দেহুনাশের পরেও থাকে, যদি দেহ হইতে বিযুক্ত, আত্মার মুখ দুঃখাদি।