পাতা:বঙ্গদর্শন-প্রথম খণ্ড.djvu/৫৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 o'e নগেন্দ্র কোন উত্তর করিতে পারিলেন না। আজি তিনি, বালিকা অবাকপটু কুন্দনন্দিনীর নিকট নিরুত্তর হইলেন । কুন্দ ক্ষণকাল নীরব হইয়া রহিল। তাহার কথা কহিলার শক্তি অপনীত হইতেছিল । মৃত্যু তাহকে অধিকৃত করিতেছিল। নগেন্দ্র তখন, সেই মৃতু্যচ্ছায়ান্ধকারস্নান মুখমণ্ডলের স্নেহপ্রফুল্লতা দেখিতেছিলেন। তাহার সেই আধিক্লিষ্ট মুখে, মন্দবিদ্যুন্নিন্দিত যে হাসি তুখন দেখিয়া ছিলেন, নগেন্দ্রের প্রাচীন বয়স পর্যান্ত । তাহা হৃদয়ে অঙ্কিত রহিল । কুন্দ আবার কিছুকাল বিশ্রাম লাভ করিয়া, অপরিতৃপ্তের স্যায় পুনরপি ক্লিষ্ট নিশ্বাস সহকারে কহিতে লাগিল, “আমার কথা কহিবার তৃষ্ণ নিবারণ হইল ন!—আমি তোমাকে দেবতা জানিতাম—সাহস করিয়া কখন মুখ ফুটিয়া কথা কহি নাই । আমার সাধ মিটিল না—আমার শরীর অবসন্ন হইয়া আসিতেছে—আমার মুখ শুকাইতেছে—জিব টানিতেছে—আমার আর বিলম্ব নাই ।” এই বলিয়া কুন্দ, পর্যাঙ্কাবলম্বন ত্যাগ করিয়া, ভূমে শয়ন করিয়া, নগেন্দ্রের অঙ্কে মাতা রাখিল এবং নয়ন মুদিত করিয়া নীরব হইল । উক্তার আসিল। দেখিয় শুনিয়া উষধি দিল না—আর ভরসা নাই দেখিয়া, মারমুখে প্রত্যাধৰ্বন করিল বিষবৃক্ষ । বলিয়া . (ष*शिल्,ि हिts, s२१• । পরে সময় আসন্ন বুঝিয়া, কুন্দ সূর্যমুখী ও কমলমণিকে দেখিতে চাহিল। র্তাহারা উভয়ে আসিলে, কুন্দ তাহাদের পদধূলি গ্রহণ করিল। র্তাহারা উচ্চৈঃস্বরে | রোদন করিলেন । s | তখন কুন্দনন্দিনী স্বামির পদযুগল মধ্যে মুখ লুকাইল । তাহাকে নীরব দেখিয়া দুইজনে আবার উচ্চৈঃস্বরে কঁদিয়া উঠিলেন। কিন্তু কুন্দ আর কথা কহিল না। ক্রমেং চৈতষ্ঠভ্রষ্টা হইয়া, স্বামিচরণ মধ্যে মুখ রাখিয়া, নবীনযৌবনে কুন্দনন্দিনী প্রাণত্যাগ করিলা অপরিস্ফুট কুন্দকুহুম শুকাইল । প্রথম রোদন সম্বরণ করিয়া সূর্যমুখী মৃত সপত্নী পতি চাহিয়া বলিলেন, “ভাগাবতী, তোমার মত প্রসন্ন অদৃষ্ট আমার হউক ! আমি যেন এইরূপে স্বামির চরণে মাতা রাখিয়া প্রাণত্যাগ করি ” এই বলিয়া সূর্যমুখী রোরুদ্যমান স্বামির হস্ত ধারণ করিয়া, স্থানান্বরে লইয়া গেলেন। পরে নগেন্দ্র ধৈর্য্যাবলম্বন পূর্বক কুন্দকে নদীতীরে লইয়া যথাবিধ সৎকারের সহিত, সেই অতুল স্বর্ণপ্রতিমা বিসর্জন করিয়া আসিলেন । " পঞ্চাশত্তম পরিচ্ছেদ । সমাপ্তি । g কুন্দনন্দিনীর বিয়োগের পর সকলেই জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল যে, কুন্দনন্দিনী