পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૩૨, ૬ ] রাজসিংহ $e& সঙ্গে হাসিয়া হাসিয়া তুই একটা মিষ্ট কথা কহিতে লাগিল ; পানওয়ালীর রূপের প্রশংসা করিলে, পাছে সে কিছু মন্দ ভাবে, এ জন্য প্রথমে তাহার দোকান সজ্জা ও অলঙ্কার গুলির প্রশংসা করিতে লাগিল। পানওয়ালীও একটু ভিজিল। পানওয়ালী মিঠে পানের সঙ্গে মিঠে কথা বেচিতে আরম্ভ করিল। মাণিকলাল তখন দোকানে উঠিয়া বসিয়া পান চিবাইতে চিবাইতে পানওয়ালীর হু কা কাড়িয়া লইয়া, টানিতে আরম্ভ করিল। এদিকে মাণিকলাল পান খাইয়া দোকানের মশলা ফুরাইয়া দিল। দাসী মশালা আনিতে অন্ত দোকানে গেল । সেই অবসরে মাণিকলাল পানওয়ালীকে বলিল, “বিবি সাহেব ! তুমি বড় চতুরা। আমি একটি চতুরা স্ত্রীলোক খুজিতেছিলাম। আমার একটি হুষমন আছে— তাহাকে একটু জব্দ কবিব ইচ্ছা। কি করিতে হইবে তাহা তোমাকে বুঝাইয়া বলিতেছি । তুমি যদি আমার সহায়তা কর, তবে এক আশরফি পুরস্কার করিব । পান । কি কবিতে হইবে । মাণিক চুপি চুপি কি বলিল। পানওয়ালী বড় রঙ্গপ্রিয়া—তৎক্ষণাৎ সম্মত হইল। বলিল আশরফির প্রয়োজন নাই—বঙ্গই আমার পুরস্কার । মাণিকলাল তখন দোয়াত, কলম, কাগজ চাহিল, দাসী তাহ নিকটস্থ বেণিয়ার দোকান হইতে আনিয়া দিল । পান ওয়ালীর সঙ্গে পরামর্শ করিয়া এক পত্র লিখিল, “হে প্রাণনাথ ! তুমি যখন নগব ভ্রমণে আসিয়াছিলে, আমি তোমাকে দেখিয়া অতিশয় মুগ্ধ হইয়াছিলাম। তোমাব একবাব দেখা না পাইলে আমার প্রাণ যাইবে । শুনিতেছি তোমবা কাল চলিয়া যাইবে—অতএব আজ একবার অবশ্য অবশ্য আমায় দেখা দিবে। নহিলে আমি গলায় ছুবি দিব । যে পত্র লইয়া যাইতেছে—তাতার সঙ্গে আসিও—সে পথ দেখাইয়া লইয়া আসিবে ”, পত্র লেখা হইলে মাণিকলাল শিরোনামা দিল, “মহম্মদ খা ।” পানওয়ালী জিজ্ঞাসা করিল “কে ও ব্যক্তি ?” মা । একজন মোগল সওয়ার । বাস্তবিক, মাণিকলাল মোগলদিগের মধ্যে একজনকেও চিনিত না । কিন্তু অভিপ্রায়, এই পত্রে লুব্ধ করিয়া কোন একজন মোগলের নিকট হইতে তাহার অস্ত্রাদি সংগ্ৰহ করিবে । কিন্তু নিজ নাম শিরোনামায় না দেখিলে কোন মোগলই ফাঁদে যে পা দিবে না, তাহ মাণিক বিলক্ষণ বুঝিয়াছিল। অথচ কাহারও নাম জানে না । সে মনে ভাবিল, দুই হাজার মোগলের মধ্যে অবশু একজন মহম্মদ আছেই আছে—আর সকল মোগলই “খ” । অতএব সাহস করিয়া. “মহম্মদ খা” লিখিল ; পত্র লেখা হইলে মাণিকলাল বলিল, “তাহাকে এইখানে श्रानिय ।” واسمه 38