পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বাল্পর্ক ; $ు ء : " . [ ه هد "ক্ষরতারপুর বহশত ক্রোশ দূরে অবস্থিত। এই জল কিরূপে তউদূর পৌঁছিবে ?” নানক কহিলেন, “তবে তোমরা ইহলোক হইতে জল সেচিয়া পরলোকগত পূর্বপুরুষগণের তৃপ্তি জন্মাইবার আশা করিতেছ কেন ?” ১৫২৬ কি ২৭ খ্ৰীষ্টাব্দে নানক প্রথম মোগল সম্রাট বাবরসাহের দ্রব্যসামগ্ৰী বহন করিতে ধৃত হয়েন। বাবর নানকের আকার প্রকার, সাধুতা ও বাকচাতুরীতে প্রীত হইয় তাহাকে ছাড়িয়া দিতে আজ্ঞা করেন এবং তাহার ভরণপোষণের জন্য অনেক সম্পত্তি দিতে চাহেন। নানক এই দানগ্রহণে অসম্মত হইয়া কহেন, “আমার কিছুরই অভাব নাই, আমার সঞ্চয় এমন অক্ষয় যে কখনও তাতার হ্রাস হইবে না।” বাবরসহ এই কথার ভাবাৰ্থ বুঝাইয় দিতে অনুরোধ করিলে নানক স্পষ্টাক্ষরে, নির্দেশ করেন, যে, তাহার হৃদয় কেবল পরমশ্বরের সাধনাতেই পরিপূর্ণ রহিয়াছে । সময়াস্তরে নানক আর একবার কহিয়াছিলেন, ঈশ্বরের নামামৃত পান করিয়া তাহার ক্ষুধা তৃষ্ণা সকলই একেবারে শাস্ত হইয়া গিয়াছে। তিনি । কেবল সেই অমৃতেই সৰ্ব্বদা পবিতৃপ্ত হইয়া রহিয়াছেন । কথিত আছে, নানক মক্কায় গিয়া একদিন কাবানামক উপাসনামন্দিরের দিকে পা রাখিয়া শয়ন করেন । ষ্টতাতে পবিত্ৰগৃহের অবমাননাকারী বলিয়া তথায় তাহার বড় নিন্দা হয় । নানক এজন্য ক্ষুব্ধ হইয়া তত্রতা মুসলমানদিগকে জিজ্ঞাসা করিযাছিলেন, “ঈশ্বর সৰ্ব্বব্যাপী, যেদিকে পা ফিৰাইব, সেই দিকই তাহার অবমাননা হইতে পারে । এক্ষণে কোন দিকে পা রাখিলে নিস্তার পাই, বল ।” নানক, অন্তসময়ে কহিয়াছিলেন, “একলক্ষ মহম্মদ, দশলক্ষ ব্ৰহ্মা ও বিষ্ণু এবং একলক্ষ রাম সেই সৰ্ব্বশক্তিমানের স্বারে দণ্ডায়মান বহিয়াছেন । ই হারা সকলেই মৃত্যুর শাসনাধীন, কেবল ঈশ্বরই অমর | তথাপি এই ঈশ্বরের উপাসনাতে সম্মিলিত হইয়াও লোকে পরস্পর বাদামুবাদ করিতে লজ্জিত হয় না। ইহাতে প্রতিপন্ন হইতেছে, কুসংস্কারের প্রেতাত্মা এখনও সকলকে বশীভূত করিয়া রাখিয়াছে। যাহার হৃদয় সৎ তিনিই প্রকৃত হিন্দু এবং র্যাহার জীবন পবিত্র তিনিই প্রকৃত মুসলমান ।” কেহ কেহ অনুমান করেন, নানক কবীরের গ্রন্থ হইতে স্বীয় মত সঙ্কলন করিয়াছেন। অনেকস্থলে কবীরের মতের সহিত নানকের মতের একতা দৃষ্ট হয়। কবীর যেরূপ জপ, পূজা ও জাতিভেদাদির নিন্দা করিয়াছেন, নানকও সেইরূপ জপ, পূজা প্রভৃতির অনাবশ্বকতা.প্রতিপন্ন করিয়াছেন, এবং কবীর যেরূপ ভগবৎপ্রেমে চিত্তাপণ করিতে বারস্বার উপদেশ দিয়াছেন, নানকও সেইরূপ অদ্বিতীয়, সৰ্ব্বশক্তিমান ঈশ্বরে মনঃসংযোগ করিতে সকলকে উত্তেজিত করিয়াছেন। কবীর অন্তঃশুদ্ধির প্রসঙ্গে উল্লেখ করিয়াছেন –