পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৮ ৷ वछत्रश्चfत्र [ चावाङ्ग ঐযুত বাৰু শিবসহায় সিংহ দেউড়ির সম্মুখে শিবিকা দেখিয়াই নিজ আসন একটি নিয়ারের খাট হইতে অবতীর্ণ হইয়া খড়ম পায়ে দিয়া দাড়াইলেন। উপরে স্বপক ভ্র-যুগল, নিয়ে কদম্বকেশরের ন্যায় প্রচুর শ্বেত গোঁফের দলমধ্যে বৃহৎ চক্ষুদ্ধয়, বয়োগুণে তারাদ্বয় আর তাদৃশ ভ্রমরকালো নাই ; ওষ্ঠছয় কিঞ্চিৎ উন্নত করিয়া ভ্রযুগল কুঞ্চিত করিয়া যখন গজাননের দিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করিলেন তখন রাজবাটীর সিংহদরজার সেই বুড় সিংহের মূৰ্ত্তিটি মনে পড়িল—মনে হইল গঙ্গাননের গজস্কন্ধ চিরিয়া রক্তশোষণ করিবেন। বাবু শিবসহায় সিংহ চৌহান বংশীয়—প্তাহার পিতামহ মুবাদারী করিয়া শেষ মারহাট্ট ও পিণ্ডার যুদ্ধে বিশেষ যশোলাভ করিয়া জঙ্গল স্থানে বিস্তৃত জায়গির মহল লাভ করিয়াছিলেন। অদ্য তিন পুরুষ বঙ্গপ্রদেশের পশ্চিমবিভাগে বাস করিয়াও চৌহান জাতির কুল-নীতি ভুলেন নাই, পশ্চিম অযোধ্যাবাসী স্বজাতি সদ্বংশের সহিত কুটুম্বিত রক্ষা করিতেছেন। কাদম্বিনী একমাত্র কন্য, অধিষ্ঠাত্রী করালবদনী কালীকাগ্ৰসাদে এই কাদম্বিনী পাইয়াছেন। সেই কন্যার কল্যাণবিধান জন্য প্রতি অমাবস্যায় সিংহমহাশয় ঘোররূপ কালীর শিক্ষা দিয়াছেন। যেমন কাদম্বিনী পুস্তকপাঠে নিপুণ, মুকাব্যের রসগ্রাহিণী, তেমনি গৃহধৰ্ম্মে শিল্পকার্য্যে অবশেষে প্রসিদ্ধ পাচিক রাঙ্গা ঠাকুরুণের শিক্ষায় রন্ধনকার্য্যে সমীচীন ব্যুৎপন্না-মাতৃহীন হওয়ায় কন্যার পরিণয়কাৰ্য্যের ব্যাঘাত হইয়াছে —বাল্যবয়স অতিক্রম করিয়া যৌবনোন্মুখী হইয়াছেন । সম্প্রতি সুলতানপুর নিবাসী কোন ছত্রিয় বংশ হইতে কোন যুবা রাজপুত্র আনাইয়া আপন জামাতৃপদে বরণ করিবার শিবসহায় বাবুর ইচ্ছা ছিল, ভবিষ্যৎ অযোধ্যাকুমুম আপাতত বঙ্গকাননে সিংহদের গৃহপ্রাঙ্গণই উজ্জল করিয়াছিল কিন্তু সেই সোহাগের ধন অচিরাৎ বিশহাত জলে মগ্ন। এই কুসুম হইতে পীযুষ পরিবর্তে গরল উৎপন্ন হইয়া সিংহকুলকে একেবারে বিষবারিসিক্ত করিতে উষ্ঠত। বাবু শিবসহায় সিংহ যে সময়ে গজাননের প্রতি ক্ৰোধদৃষ্টি নিক্ষেপ করিতেছিলেন সেই সময়ে কাদম্বিনীর রূপলাবণ্য ও কুলগৌরব তাহার মনে জাগরুক ছিল। তিনি শুনিয়াছিলেন সেই রূপে সেই গৌরবে গজাননের ষড়যন্ত্রে কলঙ্কক্ষেপণের চেষ্ট হইতেছে। সেই স্বরূপ প্রাসাদ হইতে দাঙ্গা দেখিয়াছিলেন, তাহাকেও অভিযুক্ত ব্যক্তির শ্রেণীভুক্ত করা হইয়াছে। দেওয়ানজী কহিয়াছিলেন র্তাহার আদেশেই দাঙ্গা আরম্ভ হয় ; তিনিই কহেন “বাবা ওদের মারতে হুকুম দিয়াছেন” ও তাহার ইঙ্গিতে কয়েকটি দাসী ছাদ হইতে ইট নিক্ষেপ করে, তিনিই ত প্রধান আসামী। দেশবিভাগের তেজীয়ান বিচারপতি মৌলভি সাহেব কাদম্বিনীর নামেও শমন জারি করিয়াছেন ।