পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*२४é ] তর্ক সংগ্ৰহ 9אףצ ক্রমে কাৰ্য্যকারণ জ্ঞানের যখন উন্নতি হইল, তখন বৈদিক সময়ের নানা দেবদেবী অন্তৰ্হিত হইয়া তাহাদিগের সকলের স্থানে একমাত্র ঈশ্বর বিরাজ করিতে লাগিলেন। এই সময়ের পুস্তকের নাম দর্শন । পুৰ্ব্বে যে কাৰ্য্যকারণ জ্ঞানে অগ্নি সচেতন বলিয়া স্তুত হইয়াছিলেন দার্শনিক সময়ের কার্য্যকারণ জ্ঞান তাহা অপেক্ষা অনেক উন্নত। উদাহরণ স্বরূপ আমরা নৈয়ায়িকদিগের ঈশ্বর নিরূপক বাক্যটি এখানে উদ্ধৃত করিতেছি । তাহারা বলেন ঘট পট প্রভৃতি যতগুলি কাৰ্য্য আমরা দেখিতে পাই তাহাদের সকলেরই কারণ আছে। এই জগৎও কাৰ্য্য, ইহারও একটা কারণ অবশ্য থাকিবে, কারণ ভিন্ন কখনই কার্য্যের উৎপত্তি হইতে পারে না । তাহার পর ক্রমে কার্য্যকারণ জ্ঞান আরও উন্নতিপ্রাপ্ত হইলে কপিলাচাৰ্য্য বিবেচনা করিলেন,জগৎ সৃষ্টির প্রতি পৃথিবীস্থ বস্তু সমূহের শক্তি বিশেষকেই (প্রকৃতি) কারণ বলিলে চলে, এতদ্ভিন্ন স্বতন্ত্র একটা কারণ স্বীকার করিবার আবশ্যক কি এই চিন্তা করিয়া তিনি যাই “ঈশ্ববাসিদ্ধে;" এই কথাটা বুলিলেন অমনি আস্তিকদর্শনের মস্তকে যেন বজ্রাঘাত হুইল । তাহার পরই হিমালয় হইতে কুমারিকা পৰ্য্যন্ত সমুদয় ভারতভূমি বৌদ্ধধৰ্ম্মে দীক্ষিত। এতদিন অবধি যে পরমেশ্বরের প্রতি দৃঢ় ভক্তি চলিয়া আসিতেছিল তাহা একেবারে বিলুপ্ত হইল। কেবল ভারতবর্ষে কেন ইউরোপে যখন কোমং প্রভৃতি নব্য দার্শনিকেরা বলিলেন “কাৰ্য্যের মূল বা উৎপাদক কারণ জানিবার আমাদের তত আবশ্যক নাই আমাদের এই মাত্র জানিলেই হয় যে অমুক বস্তু পুৰ্ব্বে থাকিলে অমুক কাৰ্য্য সংঘটিত হয়।” অমনি যেন ঈশ্বরের শিষ্যবর্গের মধ্যে নাস্তিকতার সূত্রপাত হইল। এতদিন খৃষ্টানেরা যে প্রগাঢ় ভক্তির সহিত পরমেশ্বর উপাসনা করিয়া আসিতেছিলেন সেই দিন অবধি যেন সেই ভক্তি বিচলিত হইতে লাগিল। যেন সেই পথ অবলম্বন করিয়া ‘মিল বলিয়া উঠিলেন জগতের কারণ এক হইতে পারে না । কেবল দর্শনশাস্ত্র কেন জগতে যে কিছু শাস্ত্র বা তত্ত্ব আজ পর্য্যন্ত আবিষ্কৃত হইয়াছে আর পরেও যদি কিছু হয় এই কাৰ্য্যকারণ সম্বন্ধই তাহাদের মূলভিত্তিস্বরূপ থাকিবে । নিউটন একদিন বাগানে বসিয়া দেখিলেন বৃক্ষ হইতে একটা সেউফল মৃত্তিকায় নিপতিত হইল, তিনি পূর্বেই জানিতেন যে যতগুলি কাৰ্য্য হয় তাহাদের সকলেরই কারণ আছে, এক্ষণে সেউফলকে ভূমিতে নিপতিত হইতে দেখিয়া তাহার মনে তৎক্ষণাৎ উদয় হইল যে এই সেউফল উর্ধে না উঠিয়া নীচে পড়িল তাহার কারণ কি ? সেই কারণের অনুসন্ধান করিতে করিতে একবারে জগতের হিতকর এবং বিজ্ঞানশাস্ত্রের প্রধান অঙ্গ মাধ্যাকৰ্ষণতত্ত্ব আবিষ্কার হইল । গালবিনি একদিবস তাহার স্ত্রীর সহিত বসিয়া নানা কথা