পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ડેરીના ] $. বৈজিক তত্ত্ব Swe> জনক জননীর সহিত সন্তানের যে বৈসাদৃশু ঘটিয়া থাকে, তাহ বৃদ্ধি পাইলে ভবিষ্কৃতে কি দাড়াইবে ইহা অনুভব করিয়া কাৰ্য্য করিতে পারিলে গঠন সম্বন্ধে পরিবর্তন করান যাইতে পারে। সচরাচর পায়রার পুচ্ছে বারটি করিয়া পালক থাকে ; মনে করুন এক সময়ে একটি শাবকের তেরটি পালক হইয়াছিল, একব্যক্তি সেই শাবকটিকে স্বতন্ত্র করিয়া রাখিল, শাবকের যখন শাবক হইতে লাগিল, তখন তাহাদের মধ্যে কোনটির পূর্বমত বারটি পালক হইল, কোনটির তেরটি পালক হইল। দুই সম্ভব, কেন না কোন সন্তান পূর্বপুরুষের মত হয়, কোন সস্তান বা জনক জননীর মত হয় । যে পায়রা গুলির তেরটি করিয়া পালক হইল, তাহাদের আবার শাবক হইলে পূৰ্ব্বমত কোনটির বারটি পালক, কোনটির তেরটি পালক, আবাব কোনটির চোঁদটি পালক হইল । চৌদ্দটি পালক হওয়া অসম্ভব নহে, কেন না যে বৈসাদৃশ্বের নিয়মে বারটি পালকের স্থলে তেরটি পালক হইয়াছিল, সেই নিয়মে তেরটি পালকের স্থলে চোঁদটি হইল । এইরূপে কতকগুলি পায়বার পুচ্ছে পুরুষপরম্পরা পালক বাড়িয়া এক্ষণে বাইশটি পালক হইয়াছে। কিন্তু অতি ক্ষুদ্র স্থানে সেই বাইশটি পালকের কেবল অগ্রভাগ আবদ্ধ থাকায় তাহার অপর ভাগ ছাড়িয়া পড়িয়া ময়ুরপুচ্ছের স্যায় হইয়াছে। এই পায়রা গুলিকে এক্ষণে লঙ্কা নাম দিয়া স্বতন্ত্র জাতি বলিয়া নির্দেশ করা হয়, বাস্তবিকও ইহারা স্বতন্ত্র জাতি দাড়াইয়াছে। যে ধান্ত বাঙ্গালায় ঘরে ঘরে ব্যবহার হইতেছে, তাহার আদি কি ছিল অনুসন্ধান করিলে বৈসাদৃশ্বের ফল বুঝা যাইবে । ধান্য গাছের আদি একপ্রকার ক্ষুদ্র ঘাস মাত্র। সেই ক্ষুদ্র ঘাস প্রথমতঃ কৰ্ষিত ভূমিতে বোপণ করা হয়। কাষত ভূমিতে ঘাস পুরুষপরম্পরা রোপিত হইলে তাহাদের বৈসাদৃশু আরম্ভ হইল, কোন ঘাসটি পূৰ্ব্বতম ক্ষুদ্র রহিল, কোন ঘাসটি বড় হইল। যে গুলি বড় হইল বাছিয়া বাছিয়া তাহাদের বীজ লইয়া পুনরায় আবার একস্থানে রোপণ করা হইল ; আবার সেই স্থানের বড় বড় ঘাস হইতে ভাল বিচি বাছিয়া রোপণ করা হইল। এইরূপ করিতে করিতে শেষ এই ধান্ত দাড়াইল। নিৰ্ব্বাচন এই উন্নতির মূল। এখনও যদি বীজ বাছনি করিয়া রোপণ করা হয়, এখনও ধান্তের আরও উন্নতি হইতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ আমাদের কৃষকেরা এবিষয়ে আর বড় মনোযোগ করে না। তাহারা এক্ষণে কেবল পরিমাণের প্রতি দৃষ্টি করে । কিন্তু সে দোষ তাহাদের নহে । বাণিজ্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিমাণের বৃদ্ধি আবশ্বক হইয়াছে। কৃষকেরা সেই আবশ্বকোপযোগী ধান্তের উৎপাদন করিবার উপায় করিতে পারিলেই আবার এবিষয়ে মনোযোগী হইতে পারবে ।