পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তদশ পরিচ্ছেদ ক্ষণে আমরা বলিব, অকস্মাৎ এই সৈন্য কোথা হইতে আসিয়া মোগল দিগকে আক্রমণ করিল। মাণিকলাল পাৰ্ব্বত্যপথ হইতে নির্গত হইয়াই ঘোড়া ছুটাইয়া একেবারে রঞ্জনগরের গড়ে গিয়া উপস্থিত হইলেন। রূপনগরের রাজার কিছু সিপাহী ছিল, তাহার বেতনভোগী চাকর নহে ; জমি কবিত ; ডাক ঠাক করিলে ঢাল, খাড়া, লাঠি, সোটা লইয়া আসিয়া উপস্থিত হইত ; এবং সকলেরই এক একটি ঘোড়৷ ছিল । মোগলসেনা আসিলে রূপনগরের রাজা তাঙ্গাদিগকে ডাক ঠাক করিয়াছিলেন । প্রকাশ্বে তাহাদিগের ডাকিবাব কারণ, মোগল সৈন্যের সম্মান ও খবরদারিতে তাহাদিগকে নিযুক্ত কবা । গোপন অভিপ্রায়, যদি মোগলসেনা হঠাৎ কোন উপদ্রব উপস্থিত করে তবে তাহার নিবারণ। ডাকিবামাত্র রাজদূতের ঢাল খাড়া, ঘোড়া লইয়া গড়ে উপস্থিত হইল—রাজা তাহাদিগকে, অস্ত্রাগার হইতে অস্ত্র সাঙ্গাইলেন । তাহারা কয়দিন নানাবিধ পরিচর্য্যায় নিযুক্ত থাকিয় মোগল সৈনিকগণের সহিত হাস্ত পরিহাস ও রঙ্গরসে কয়দিবস কাটাইল । তাহার পর ঐ দিবস প্রভাতে মোগলসেনা শিবির ভঙ্গ করিয়া রাজকুমারীকে লইয়া যাওয়াতে, রূপনগরের সৈনিকেরাও গৃহে প্রত্যাগমন করিতে আজ্ঞা পাইল । তখন তাহারা অশ্ব সজ্জিত করিল এবং অস্ত্র সকল রাজার অস্ত্রাগারে ফিরাইয়া দিবার জন্য লইয়া আসিল, রাজা স্বয়ং তাহাদিগকে একত্রিত করিয়া স্নেহসূচকবাক্যে বিদায় দিতেছিলেন, এমত সময়ে আঙ্গুলকাটা মাণিকলাল ঘৰ্ম্মাক্ত কলেবর অশ্ব সহিত সেখানে উপস্থিত হইল । * মাণিকলালের সেই মোগল সৈনিকের বেশ । একজন মোগল সৈনিক অতি ব্যস্ত হইয়া গড়ে ফিরিয়৷ আসিয়াছে, দেখিয়া সকলে বিন্মিত হইল। রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি সম্বাদ ?”