পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

WoOe खणक्षं W [ কাৰ্ত্তিক তুমি লক্ষ্মী—তুমি যার ঘরে নাই, সে লক্ষ্মীছাড়া। তুমি ধনের দেবতা —প্রধান আচাৰ্য্য ম্যালথস্ আইন জারি করিয়াছেন, যার টাকা নাই সে যেন তোমার উপাসনা করিতে না আসে । তুমি সরস্বতী—বোধোদয় এবং পশ্বাবলী পড়িয়াই। বহু আরাধনায় তোমায় লাভ করিতে হয়, বহু সেবায় রাখিতে হয় । তুমি মহামায়া-কেন না আত মায়া আর কেহ জানে না। পরচ্ছিদ্রদর্শনে তুমি ত্রিনয়নী। শরীরসজ্জার উপকরণ গ্রহণে তুমি দশভুজা । শান্তিপুরের প্রসাদে তুমি দিগম্বরী। তুমি শু্যামা—কেন না স্বামী তোমার পদতলে । তোমার সাধনায় অনেক ভূত প্রেতিনীর দৌরাত্ম সহ করিতে হয়—বাসর ঘরের প্রেতিনীদিগের দৌরাত্মের কথাটা মনে পড়িলে এ বৃদ্ধবয়সেও হৃৎকম্প শিরঃশূল নূতন করিয়া উপস্থিত হয়। তুমি শ্ৰীকৃষ্ণ—কেন না এই সংসার গোষ্ঠে পুরুষ গোরুদিগকে চরাইয়া লইয়া বেড়াও । সারাদিন চরাইয়া সন্ধ্যাকালে দুইটি ঘাস জল দিয়া গোয়ালে বন্ধ কর। তুমি জগন্নাথ—তোমার জুরিসডিক্সনের মধ্যে জাতিভেদ নাই ; ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, তাতি, জোলা, সব একগোত্র । জগন্নাথের হাত নাই ; বঙ্গদেশে তোমারও কিছুতে হাত নাই । তুমি গয়া—কত লোকের পিণ্ডই যে তোমাতে মৰ্দিত হইয়াছে তার সীমা নাই। তুমি কাশী—পৃথিবীর ধৰ্ম্মের র্যাড় তোমাদের চেলা । তুমি বসন্ত-মিলনে ; তখন হৃদয়োপ্তানে কত ফুল যে ফুটে, কত বায়ু যে বহে, কত ভ্রমর গুপ্তরে, কত কোকিল কুহরে—মুখের স্পর্শে অনুক্ষণ পুলকপূর্ণ। তুমি গ্রীষ্ম—বিরহে ; সদাই আঞ্চান, ছটফট, জলে মরি, বাতাস দে, নিজাব, নিরুৎসাহ, অলস, অবশ–প্রাণটা হুহু করে, পৃথিবীটা খ খ করে, যেন প্রলয় উপস্থিত । তুমি বর্ষা—রোগে ; হৃদয়াকাশ সদা মেঘাচ্ছন্ন, নয়ন জলদ সদা জলভারাকীর্ণ এবং বর্ষণোন্মুখ—একবার বর্ষে, তখনই ধরে, আবার তখনই বর্ষে— সৰ্ব্বদা আশঙ্কা, কখন কি হয় । তুমি শীত—রাগে ; জড়সড়, কম্পযুক্ত, পেটের ভিতর হাত পা ঢুকিয়া যায়, দাতে দাতে লাগে ; শীতে কেবল আহারের মুখ, তুমি যে দিন রাগে থাক সে দিনও বটে—ছুই জনের ভাগ একার হয়। তুমি শরৎ—প্রার্থনায় ; যখনই তোমার দিকে চাহিয়া দেখি যে দিল্পগুল পূর্ণ প্রকাশ, শশধর বোল কলায় হাসিতেছে, খঞ্জনচকোর নাচিতেছে, তখনই বুঝিতে পারি, আজ বুঝি কিছু আবদার আছে, নহিলে এত রূপের ছড়াছড়ি, সোহাগের এত বাড়াবাড়ি !