পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VII)”

  • % বজজশল [ কাৰ্ত্তিক

ভুবনেশ্বরের নানা স্থানে প্রাচীন দেবমন্দির সকল সংস্থাপিত রহিয়াছে, ঐ সকল মন্দিরের গাঁথুনী কেবল মাত্র পাথরে পাথরে ঘর্ষণ করিয়া, পাথরের উপর পাথর সংস্থাপিত হইয়াছে ; চূণ বালি শুরকী অথবা অপর কোনরূপ মসলা দ্বারা ঐ "সকল মন্দিরের গাঁথুনী হয় নাই ; শত শত বর্ষাতীত হইল, তথাপি ঐ সকল মন্দির অটলভাবে অদ্যাপি বর্তমান রহিয়াছে। ভুবনেশ্বরেব পূর্ব উত্তরাংশে জঙ্গলমধ্যে একটি অত্যাশ্চৰ্য্য প্রাচীন মন্দির আছে ; ঐ মন্দিরের গাত্রে নানারূপ মূৰ্ত্তি সকল খোদিত। মন্দিবমধ্যে যে মূৰ্ত্তি আছে, তাহার নিম্নদেশ হইতে জলস্রোত নির্গত হইয়া একটি কুণ্ডমধ্যে পতিত হইতেছে, পুনরায় সেই কুণ্ড হইতে জল নির্গত হইয়া মাঠে পতিত হইতেছে, ঐ মন্দিরের প্রায় হই ক্রোশ দূরে পর্বত আছে, বোধ হয় সেই পৰ্ব্বত হইতে জলস্রোত নিম্নদেশ দিয়া অলক্ষিতভাবে ঐ স্থানে আসিতেছে । ঐ স্থানটি অতিশয় রমণীয় । ভুবনেশ্ববের প্রাচীন মন্দির যতগুলি আছে, সকল গুলিই উড়িয়াদিগেব অসাধারণ ক্ষমতার পরিচয় প্রদান করিতেছে । কণাবক—এই স্থান কটক নগরীর পূর্ব দক্ষিণ প্রায় ১৬১৭ ক্রোশ দূৰবৰ্ত্তী সমুদ্র তীরবর্তী। এই স্থানে একটি স্বৰ্য্যমন্দির প্রতিষ্ঠিত ছিল। মেঃ ইন্টারের মতে এই মন্দির খ্ৰী: দ্বাদশ শতাব্দীতে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল যজাতিকেশরী রাজা যে দশ সহস্র ব্রাহ্মণ যাজপুৰ নামক স্থানে বসবাস কবাষ্টয়াছিলেন, তাতাদের মধ্যে র্যাহাবা সূর্যোপাসক ছিলেন, ঐ মন্দিব তাতাদেরই কাঠি । ঐ মন্দিরটা এক্ষণে ভাঙ্গিয়া গিযাচে ; দূর হইতে দেখিলে বোধ হয় যেন একটা পৰ্ব্বত উন্নতমস্তকে দণ্ডায়মান রহিয়াছে । ঐ মন্দিরের ১৪১৫ ক্রোশ মধ্যে কোন পৰ্ব্বতাটি প্রত্যক্ষ হয় না ; কিন্তু ঐ মন্দির প্রকাগু প্রকাণ্ড প্রস্তরে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। ঐ মন্দিলের সম্মুখদ্ধারে একখানি বৃহৎ প্রস্তর সন্নিবেশিত ছিল, তাহাতে নবগ্রহের প্রতিমূৰ্ত্তি খোদিত আছে ; ঐখানি আনুমানিক দুই বিঘা জমি সরাইয়া আনিতে গভর্ণমেণ্টের বিস্তর অর্থ ব্যয়িত হইয়াছে, এমত স্থলে মন্দির নিৰ্ম্মাণকালে ঐ প্রস্তর সকল বহু দূরদেশ হইতে কিরূপে কণারকে আনা হইয়াছিল, তাহা চিন্তা করিতে গিয়া আশ্চৰ্য্য হইতে হয়। এখন এত বিজ্ঞানের উন্নতি, এত কল, এত সুগম্য পথ, তথাচ ঐ প্রস্তরখণ্ড স্থানান্তরিত করিয়া সমুদ্রতীরে আন দুরূহ ব্যাপার হইয়াছে, কিন্তু সেই প্রাচীন কালে উড়িয়াগণ অন্ততঃ ১৭১৮ ক্রোশ দূর হইতে ঐ প্রস্তরখণ্ডকে আনিয়া মন্দিবের উপরে উঠাইয়াছিলেন, ইহাও সাধারণ ক্ষমতা এবং অধ্যবসায়ের কার্য মহে । এই মন্দিরের ভগ্নাবশেষ কাৰ্য্য সকল দেখিলে প্রাচীন উৎকলীয়দিগকে ধন্যবাদ না দিয়া থাকা যায় না । কটক—কটকের এক পার্শ্ব দিয়া মহানদী, অপর পার্শ্ব দিয়া কাঠযোড়ী নদী প্রবাহিত হইতেছে । ঐ দুই নদীর স্রোতে কটক সহর ভাঙ্গিয়া যাইতেছিল, সেই