পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*२ve ] উৎকলের প্রকৃতাবস্থা * ... vඑංඵ? অপকার নিবারণ জন্য কাঠযোড়ী নদীর গর্ভ হইতে একট প্রস্তরের পোস্ত গাথা হয় ; ঐ পোস্ত প্রায় তিন মাইল পথ ব্যাপ্ত ; কোন স্থানে ত্রিশ ফুট, কোন স্থলে ততোধিক উচ্চ ; মধ্যে মধ্যে প্রশস্ত ঘাট ; এবং প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড স্তম্ভ সকল নদীগর্ভ হইতে উত্থিত হইয়াছে, তাহার মধ্যে একটা স্তম্ভের গঠনকৌশল দেখিলে প্রাচীন উড়িয়াগণ কতদূর ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যাবিশারদ ছিলেন, তাহার চূড়ান্ত উদাহরণ প্রাপ্ত হওয়া যায়। বর্ষাকালে যখন অতিবেগে জলস্রোত প্রবাহিত হয়, তখন ঐ স্তম্ভ কটক রক্ষা করে । জলস্রোত বেগে আসিয়া শেষোক্ত স্তম্ভে আঘাত করে ; করিবাত্রাত্রই জলস্রোত হ্রস্বতেজ হইয়া এপার ছাড়িয়া অপরপারে প্রধাবিত হইতে থাকে ;– আর কটকের পারে জলের আঘাত লাগিতে পারে না, এরূপ কৌশল অবলম্বন করা সাধারণ বুদ্ধির কার্য্য নহে। এই স্তম্ভ প্রায় আট শত বর্ষের অপেক্ষাও প্রাচীন হইবে ; উৎকলের ইতিহাসলেখক ষ্টার্লিং সাহেব বলেন উড়িষ্যায় প্রাচীনকালে শবদাহের জন্য কর নিৰ্দ্ধারিত ছিল, সেই শবদাহ হইতে যে কড়ি আদায় হইত তদ্বারাই ঐ পোস্ত সুকল নিৰ্ম্মাণ হইয়াছে। ধবলেশ্বর – মহানদীর মধ্যস্থলে একঠি ক্ষুদ্র, পৰ্ব্বত এবং অল্পাংশ উচ্চ ভূমি আছে ; ঐ স্থানে একটি মন্দির আছে ; সেই মন্দিরের সম্মুখে কৃষ্ণবর্ণ প্রস্তরের নানাপ্রকার মূৰ্ত্তি সকল পড়িয়া রহিয়াছে। তন্মধ্যে অনেক মূৰ্ত্তিই ভগ্নদেহ। ঐ সকল মূৰ্ত্তির গাত্রে যে সকল অলঙ্কার খোদিত দেখিয়াছি, তন্মধ্যে অনেকগুলি অলঙ্কার এ পর্য্যস্ত আমাদের দেশে ব্যবহার হইয়া থাকে। কটকের কাঠযোড়ি নদীর এবং মহানদীর পরপারের পর্বতে বৌদ্ধদিগের খোদিত গুহা সকল আছে, কিন্তু শৈবগণ ঐ সকল গুহার উপরে চূড়া নিৰ্ম্মাণ করত তন্মধ্যে শিব সংস্থাপন করিয়া “শিবমন্দির” “শিবাল” নাম প্রদান করিয়াছেন । যাজপুর—এই স্থান বৈতরণী নদীর তীরবর্তী ; এখানে প্রাচীন কালের প্রতিষ্ঠিত ফুটি প্রস্তরময় স্তম্ভ আছে ; এইস্থান এক সময়ে কেশরীবংশীয় রাজাদিগের কালে সমৃদ্ধিশালী ছিল, এখন কেবল নাম মাত্র আছে। বালেশ্বর প্রদেশে প্রাচীন কীৰ্ত্তি প্রায় প্রত্যক্ষগোচর হয় না । এই সকল প্রসিদ্ধ দেবালয় ভিন্ন অপরাপর অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাচীন দেবালয় প্রভৃতি উড়িষ্যাতে বিদ্যমান আছে ; সে সব বিষয়ের উল্লেখের তত আবশ্বক নাই, এক্ষণে উৎকলবাসীদিগের অন্যান্য বিষয়ের ক্ষমতা কতদূর তাহারও কিছু বলা আবশ্বক হইতেছে। সাৰ্ব্বভৌমিক রাজা গৌড়াধিপতি দেবল দেবের সময়ে উৎকল প্রদেশ যদিও গৌড় দেশের অধীনস্থ ছিল, পালবংশীয় রাজাদিগের সময়েও উৎকল প্রদেশ যদিচ পঞ্চগৌড়ের অন্তর্গত ছিল, এবং বঙ্গদেশীয় গঙ্গাপতি বংশীয় রাজাগণ