পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>२ve ] ভারতবর্ষে লোকবৃদ্ধির कण west& ছেলেদেরও সেইরূপ করিয়া চলিবে । তাহারা নিজে জীবনে কষ্ট যন্ত্রণ বই ভোগ করিল না, তাহারা জানে জগৎ যন্ত্রণাময়, যা মুখ আছে তাহা বিবাহজনিত সাংসারিক । সুতরাং তাহারা প্রথম হইতেই বিবাহ করিবার জন্য ব্যগ্র "হয় এবং ছেলেদের বিবাহ দেওয়া পৰ্য্যন্তই পিতার একমাত্র কর্তব্য কৰ্ম্ম মনে করে । বিবাহে তাহারা অনেকটা সহানুভূতি পায়। নিজ মুখ দুঃখের ভাগী পায় যন্ত্রণাময় জীবলোকে কতকটা আরাম পায়। সকল যন্ত্রণা গৃহলক্ষ্মীর মুখ দেখিয়া দূর করে । ছেলে হয় মরে সে কেবল স্বভাবের উপর নির্ভর । যত দিন ছেলেগুলি রহিল নিজের মুখের গ্রাস তাহাকে দিয়া বঁাচাইয়া রাখিল । বরাবর বাচিয়া রহিল ত পাচবৎসর বয়স হইতেই সে রোজগার করিতে শিখিল । সে একরকম আত্মোদর পূৰ্ত্তি করিতে শিখিল । কিন্তু তাহাতে কোন উপকার নাই, সে ভাল শিক্ষা পাইল না, ভাল কারিগর হইতে পারিল না । চিরদিন সকল অপেক্ষ অল্পদরের যে মজুরি তাহাই করিয়া তাহার দিনপাত করিতে হুইবে । কখনও পূব পেট ভাত খাইতে পাইবে না । এরূপ অবস্থা হইতে তাঙ্গাদের উদ্ধার করিতে হইলে, তাহাদের সাং উন্নতিসাধন যাহাতে হয়, তাহার চেষ্টা করা প্রয়োজন । যাহাতে সঞ্চয় করিতে শিখে, সে বিষয়ে যত্ন করা, আর যাহাতে তাহারা বিবেচনা করিয়া বিবাহ করে ও সাবধানে জগতের ভার বৃদ্ধি করে সেইটি ভাহাদিগকে শিখাইয়া দেওয়া প্রয়োজন । শুদ্ধ দুঃখীলোকদিগের সাংসারিক উন্নতি সাধন করিলেই হইবে না । জাতি-, গত উন্নতিও সেই সঙ্গে চাহি। এলফিনষ্টোনের সময় ভারতবর্ষে এক কোটি ; চল্লিশ লক্ষ লোক ছিল, তখন অল্পকষ্ট ছিল না। মিউটিনির সময়ও অল্পকষ্ট বিশেষ ছিল না। তাহার পর হইতেই অল্পকষ্ট আরম্ভ হইয়াছে। মিউটিনির সময় লোক আন্দাজ ১৭ কোট, এখন শুদ্ধ বৃটিশ গবর্ণমেণ্টের অধীনেই তাহ আছে । মনে কর এই ১৭ কোটী লোকেই ভারতবর্ষের বর্তমান উৎপল্পে গুজরান করিতে পারে। তাহা হইলে সত্তর লক্ষ লোক বাড়তি হইয়াছে ইহাদের কি উপায় ? মনে কর বৃটিশ বৰ্ম্ম প্রভৃতি নূতন দেশে এক কোটা লক্ষ লোক আছে। জঙ্গল আবাদ করিয়া আর এক কোটী লোকের চলিতেছে এবং রেলওয়ে ও পবলিক ওয়ার্ক কল ইত্যাদিতে আর দশ লক্ষ লোক সংসারযাত্র নির্বাহ করিতেছে । এখনও চারি কোট বাকি । ইহারাই তুর্ভিক্ষে মরিতেছে, পুঞ্জি বৎসরই শুনা যায় এখানে দেড়লক্ষ ওখানে তিন লক্ষ মরিতেছে। এই চল্লিশ লক্ষ পূৰ্ব্বোক্ত বিংশতি কোটা লোকের কষ্টের কারণ হইয়াছে। বিশ কোটার যাহাতে চলে তাহাতে চব্বিশ কোটীর চলিতে গেলে কাজেই সকলেরই অর্ডাহার।