পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Վ9Գե- বঙ্গদর্শন y [ चक्षझांग्रण অল্পকাল অতীত হইল, চাকানালের মহারাজা ভাগীরথী মহেন্দ্রদেব বাহাদুরের প্রযত্নে ঐ সকল অসভ্য স্ত্রীজাতি বস্ত্র পরিধানে বাধ্য হইয়াছে, এবং সেই পৰ্য্যস্ত-ঐ জাতি এক্ষণে আর পত্র পরিধান করে না ! গড়জাৎ মহলে যে সকল জাতি বাস করে, তাহার অধিকাংশই, কতকাংশে সভ্য, কিন্তু “বেধি” প্রভৃতি গড়জাত মহলে “কন্দ” প্রভৃতি যে সকল জাতি বাস করে, তাহাবা একেবারে অসভ্য, কিন্তু কৃষিকার্য্যোপজীবি এবং সাহসিক । বঙ্গদেশীয গবর্ণমেণ্টের অন্তর্গত যতটুকু উৎকল ভূমি আছে, সেনসেস রিপোর্টে দেখা যায়, তন্মধ্যে প্রায় একলক্ষ চল্লিশ হাজার অপেক্ষাও অধিক অধিবাসী বাঙ্গালী ; তৎপরে মান্দ্রাজ প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মধ্য ভারতবর্ষের অন্তর্গত উৎকল দেশে যে সকল বাঙ্গালী আছেন, তাহাদিগকে ধরিলে প্রায় দেড়লক্ষ অনুমান করা অসঙ্গত বোধ হয় না । বহুকাল হইতে যে সকল বাঙ্গালি উড়িষ্যাতে বাস করিতেছেন, তাহার কেরা বাঙ্গালি নামে অভিহিত হইয়া থাকেন। এই সকল কেবা বাঙ্গালি ট্যাসফিরাঙ্গাদিগেৰ সদৃশ শঙ্কবজাতি মধ্যে পৰিগণিত। ইহারা কেবল “কেরা ক্যারা” রূপে বিকৃত ভাষাতে কথা বাৰ্ত্ত কহিয়া থাকেন বলিয়া “কের বাঙ্গালি” উপাধি প্রাপ্ত হইয়াছেন ; নচেৎ কেবা বাঙ্গালিদিগের বুদ্ধি এবং আচাব ব্যবহার সর্বাংশেই বঙ্গদেশীয় বাঙ্গালিদিগের সদৃশ বলা যাইতে পারে। উড়িয়া ব্রাহ্মণ, মাইতি, খণ্ডাইত, গৌড় প্রভৃতিও কেরা বাঙ্গালি ; ব্রাহ্মণদিগের অল্লাহার করে না এই জন্য কেবা বাঙ্গালিগণ বহুকাল হইতে উৎকলে বাস করত উৎকলায়দিগের সহিত জাতীয় ভাবে সম্মিলিত হইতে পারেন নাই ; কিন্তু এই উভয় সম্প্রদায়ে বিশেষ বিদ্বেষভাব প্রত্যক্ষ হয় না, কিন্তু ইদানী স্থানীয় রাজপুরুষদিগের ব্যবহার দোষে অল্পকাল মধ্যে সেই সৌহাৰ্দ্দা ভঙ্গ হুইবার সময় উপস্থিত হইয়াছে । উৎকলের রাজপুরুষগণ খাস উড়িয়া এবং কেরা বাঙ্গালি পৃথক করিয়া কৰ্ম্মকাৰ্য্য প্রদান করিতে আরম্ভ করিয়াছেন ; জাতীয় স্বার্থের যবনিকা যখন উভয় দলের মধ্যস্থানে পতিত হইয়াছে, তখন আর কত দিমই বা নিঃস্বার্থভাব বন্ধুৰ থাকিতে পরিবে ? উড়িষ্যায় দেশীয় খ্ৰীষ্টান অনেক আছেন ; তুর্ভিক্ষ উপলক্ষে যে সকল অনাথ বালক অনাথা বালিকা খ্ৰীষ্টান যাজকদিগের তত্ত্বাবধাবণে ছিল, তাঙ্গদের মধ্যে পুরুষ অপেক্ষ স্ত্রীজাতির সংখ্যা অতিরিক্ত হইয়াছে ; তান্তাদের বিবাহ হওয়া ভার হইয়া দাড়াইয়াছে। উড়িয়া খ্ৰীষ্টানদিগের একটু ধৰ্ম্ম সংস্কারের কথা এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক বোধ করিতেছি । উড়িয়া খ্ৰীষ্টান রমণী নিজ সন্তান সহিত পথে গমনকালে মুসলমান দেখিয়া হয় ত সন্তানকে বলিতেছেন, “ওটা পাঠান টোকা দেখিস যেন ছুসনে” দুর্ভিক্ষের আমদানিতে খ্ৰীষ্টানই অধিকাংশ ।