পাতা:বঙ্গদর্শন-ষষ্ঠ খণ্ড.pdf/৩৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৮1 4, টানারীর রোনামচ * "Słyo:) “নচ দৈবাৎ পরং বলম” একটি বচন শুনা গেল, এবং পরক্ষণেই প্রাতঃসলিলতে শিকাহিল্লোলিত তর্কালঙ্কার মহাশয় শিবসহায়ের সম্মুখে দর্শন দিলেন। § তর্ক । ব্যাপার কি ? যাহাদের শুভাকাঙ্ক্ষী তাহাদের বিপদ শুনিলেই একান্ত কাতর হইতে হয়। আমার যা শক্তি তাহা করি, শুনে কি নিশ্চিন্ত থাকতে পারি ? ভোরে গাত্ৰোখান করে প্রথমে তোমার নিকট ত্রস্ত আসিলাম । শিবসহায় দণ্ডবৎ হইলেন, ও কেবল মাত্র কহিলেন, “উপায় ?” তর্কালঙ্কার কহিলেন, “মধুসূদন নামোচ্চারণ-চণ্ডীপাঠ আজই আরম্ভ করা যাক ” শিবসহায় কহিলেন, “যা ইচ্ছা।” $ ত। এখানে হবার নয়- যবন প্রভৃতি অনেক অস্পৃষ্ঠ লোকের আজ এই গ্রামে আগমন হইবে । মনে করেছি সেই প্রাস্তরে শাস্তিনাথের মণ্ডপে যাইয়া শান্তি মন্ত্র পাঠ করিব । শিবসহায় মস্তক হেলাইয়া সম্মতি দিলেন । তর্কালঙ্কার ভাণ্ডারিকে সঙ্গী করিয়া কোথায় চলিয়া গেলেন । - 鷲》 এদিকে শিবসায়ের বাটাব কিয়দর পূৰ্ব্বে ক্ষুদ্র নদীর তটে একটি আম্রকাননে আজ নগর বসিয়া গিয়াছে। দূৰ হইতে বৃক্ষেব কাল কাল সারি সারি সমদূরবর্তী স্কন্ধগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লৌহস্তস্ত স্বরূপ দেখাইতেছে, আম্র শাখাগুলি পরস্পর সংমিলিত, সকল বৃক্ষই যেন এক ছাচে প্রস্তুত, এক তুলিতেই অঙ্কিত। উদ্যানের প্রাস্তরে বৃক্ষশাখা নিবিবরোধে বৰ্দ্ধমান হইয়া তলস্থ শস্যক্ষেত্রে সংলগ্ন হইয়াছে। একভাগে দেশবিভাগের কৰ্ম্মচারীর পটগৃহের শুভ্র ছাওনি দৃশ্যমান। একটি যেন প্রকৃতির ছবির সঙ্গে মানবনিৰ্ম্মিত ছবি মিলিয়া গিয়াছে। যেন কোন মন্ত্রবলে গৃহটি মুহূৰ্ত্তমধ্যে উথিত হইয়াছে। এমন গৃহ দেখিতে পল্লীস্থ কোন বালকের বা বালকের পিতার কৌতুক না জন্মে ? সাহেবের “কাপড়ের ঘর” দেখিতে অনেকেই দৌড়িয়াছে, যেখানে পথ কম পরিসর সেখানে কোন দাম্বাল বালক কোন বুড়িকে হুমড়ি করিয়া ফেলিয়া দোঁড়িতেছে, বুড়ির বালকের পিতৃপুরুষ উদ্ধার করিতেছে, ও ছাওনি দর্শনের হাতে হাতে ফলদান করিতেছে। ক্রমে গ্রামের লোক বাগানের নিকটবৰ্ত্তী হইয়া চতুস্পার্শ্বে পর্য্যবেক্ষণ করিতেছে, কোন বৃক্ষতলে মোক্তারের দল বসিয়াছে, তাহাদের পাগড়ি দেখিয়াই কত কত ছেলে হাসিয়া গড়াগড়ি দিতেছে। কারও পাগড়িতে একথান, কারও অৰ্দ্ধথান লাগিয়াছে, কারও স্থই তিন হস্ত প্রমাণ কাপড়ে যথেষ্ট হইয়াছে, কারও লাট্ট দ্বার, কারও হাতে বান্ধা, কারো মুরেচা পাগড়ি মস্তকে শোভমান বা অশোভমান রহিয়াছে, কাহারও পাগড়ির পশ্চাৎভাগে রজতনিন্দিত শিক্কার শেষাগ্র চামরীর লাঙ্গুলাগ্র সম ৰিক্ষিপ্ত। প্রায় অনেকের পাগড়ি হই একটা ছারপোকার ও ক্ষুত্র